
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের নিঃশংসতা ও হত্যাযজ্ঞের নেপথ্যে দায়ী অডলফ হিটলার ইতিহাসে কুখ্যাত। একচ্ছত্র রাজনৈতিক ক্ষমতার পাশাপাশি তিনি ছিলেন বিপুল সম্পদের মালিক। যুদ্ধশেষে তার মৃত্যুর পর এই সম্পত্তির মালিকানা নিয়ে শুরু হয় নানা বিতর্ক। বড় কোন ব্যবসায়ী বা শিল্পপতি ছিলেন না হিটলার; তবে একটি বইয়ের কল্যাণেই তিনি হয়ে উঠেছিলেন জার্মানির সবচেয়ে ধনী ব্যক্তিদের একজন। মিউনিক আর্কাইভের নথি অনুসারে, তার লেখা ‘মাইন ক্যাম্প’ বইয়ের রয়ালিটি থেকেই সে আমলে আয় করেছিলেন প্রায় সাড়ে ১২ লাখ মার্ক। শুরুতে খুব বিক্রি না হলেও হিটলারের জনপ্রিয়তা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বইটিরও বিক্রি প্রচুর বেড়ে যায়। ১৯৩০ সালে নাসি পার্টি জার্মানির দ্বিতীয় বৃহত্তম দল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয় এবং সেই বছর ‘মাইন ক্যাম্প’ ৫০ হাজার কপি বিক্রি হয়। ১৯৩৩ সালে এক বছরে বিক্রি হয় ১০ লাখ কপি।
এভাবে শুধু বই বিক্রির রয়ালিটি থেকেই ধীরে ধীরে ধনী হয়ে উঠতে লাগেন হিটলার। এছাড়া নিজের ছবি সংবলিত টিকেট, সরকারি ভাতা এবং আয়কর না দেওয়ায়ও তার টাকা-পয়সা জমে। নগদ অর্থ ছাড়াও তার সম্পদের মধ্যে ছিল বাভারিয়ার পাহাড়ি অঞ্চলে একটি প্রাসাদ, শিল্পকর্মের সংগ্রহ এবং জমি জমা। ইতিহাসবিদদের মতে হিটলারের মোট সম্পত্তি প্রায় ৭০ মিলিয়ন মার্কের, যা আজকের বাজারে প্রায় ৩৫০–৪০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের সমতুল্য।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে পরাজয় নিশ্চিত জেনে ১৯৪৫ সালের ৩০ এপ্রিল আত্মহত্যা করেন হিটলার। সরাসরি কোনো উত্তরাধিকারী না থাকায় তিনি নিজের সকল সম্পদ রাষ্ট্রের নামে উইল করেন। যুদ্ধের পর প্রভাবশালী ক্যাথলিক বাভারিয়া সরকার তার সম্পদের বড় অংশ বাজেয়াপ্ত করে। ধারাবাহিকতায় বর্তমানে এসব সম্পদের মালিক জার্মান সরকার। তবে শিল্পকর্মসহ অস্থাবর অনেক সম্পদ যুদ্ধের পর বিশৃঙ্খলার মধ্য দিয়ে লুট হয়ে যায়।