
চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং সোমবার (১ সেপ্টেম্বর) সাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজেশন (এসসিও)-এর সদস্য রাষ্ট্রগুলোকে তাদের ‘বৃহৎ বাজার সম্ভাবনা’ কাজে লাগানোর আহ্বান জানিয়েছেন। একইসঙ্গে তিনি এমন এক নতুন বৈশ্বিক নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক ব্যবস্থার রূপরেখা উপস্থাপন করেছেন, যা যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন ব্যবস্থার জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা হচ্ছে। খবর রয়টার্সের।
চীনের উত্তরাঞ্চলীয় বন্দর শহর তিয়ানজিনে অনুষ্ঠিত দুই দিনের শীর্ষ সম্মেলনের উদ্বোধনী ভাষণে শি জিনপিং বলেন, “আমাদের উচিত সমান ও সুশৃঙ্খল বহুমেরুকরণকে উৎসাহিত করা, অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থনৈতিক বিশ্বায়নকে এগিয়ে নেওয়া এবং আরও ন্যায়সঙ্গত বৈশ্বিক প্রশাসন কাঠামো নির্মাণে কাজ করা।”
শি জিনপিং ঘোষণা দেন, চীন এ বছর এসসিও সদস্য রাষ্ট্রগুলোকে ২ বিলিয়ন ইউয়ান (২৮০ মিলিয়ন ডলার) সহায়তা দেবে। এছাড়া এসসিও ব্যাংক কনসোর্টিয়ামের জন্য ১০ বিলিয়ন ইউয়ান ঋণও প্রদান করবে।
তিনি আরও বলেন, “আমাদের বিশাল বাজারের সুবিধা নিতে হবে... বাণিজ্য ও বিনিয়োগে সহজীকরণ বাড়াতে হবে।” এ লক্ষ্যে জ্বালানি, অবকাঠামো, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতা বৃদ্ধির আহ্বান জানান তিনি।
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং মধ্য এশিয়া, দক্ষিণ এশিয়া, মধ্যপ্রাচ্য ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার নেতারা সম্মেলনে অংশ নিয়েছেন। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ বছরের সবচেয়ে বড় এই সম্মেলনকে চীন ব্যবহার করছে যুক্তরাষ্ট্র-নেতৃত্বাধীন বৈশ্বিক শাসন ব্যবস্থার বিকল্প মডেল উপস্থাপনের প্ল্যাটফর্ম হিসেবে।
শি জিনপিং আরও আহ্বান জানান, “শীতল যুদ্ধ মানসিকতা ও ব্লক বিভাজন” এড়িয়ে বহুপাক্ষিক বাণিজ্য ব্যবস্থাকে সমর্থন করতে হবে।

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এটি যুক্তরাষ্ট্রের সুরক্ষাবাদী নীতির প্রতি সরাসরি ইঙ্গিত, বিশেষ করে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের আরোপিত শুল্কযুদ্ধের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত উন্নয়নশীল অর্থনীতিগুলোর প্রসঙ্গ টেনেই শি এ মন্তব্য করেছেন।
জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসও রোববার চীনের বৈশ্বিক বহুপাক্ষিকতা রক্ষায় “মৌলিক ভূমিকার” প্রশংসা করেন।
অন্যদিকে, দীর্ঘ সাত বছর পর চীন সফরে যাওয়া নরেন্দ্র মোদি ও শি জিনপিং বৈঠকে একমত হয়েছেন যে ভারত ও চীন প্রতিদ্বন্দ্বী নয়, বরং উন্নয়ন অংশীদার। বৈশ্বিক শুল্ক অস্থিরতার মধ্যে তারা দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য সম্পর্ক উন্নত করার পথ নিয়েও আলোচনা করেছেন।