
চ্যাটজিপিটির দেওয়া ডায়েট চার্ট মেনে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন এক ব্যক্তি। এমনকি হাসপাতালে ভর্তি হতে হয় তাঁকে। চিকিৎসকেরা জানান, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার পরামর্শে অতিরিক্ত মাত্রার সোডিয়াম ব্রোমাইড বিষক্রিয়া হয় ওই ব্যক্তির। মার্কিন চিকিৎসা বিষয়ক সাময়িকী এসিপি জার্নালে প্রকাশিত প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এমন তথ্য।
অ্যানালস অব ইন্টারনাল মেডিসিনে ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসকেরা বিষয়টির তদন্ত প্রতিবেদন করেন। প্রতিবেদন অনুসারে, ওই ব্যক্তি চ্যাটজিপিটির পরামর্শ মেনে ৩ মাস ধরে নিয়মিত সোডিয়াম ব্রোমাইড খেয়েছিলেন। তিনি ভেবেছিলেন, তাঁর ডায়েটে ক্লোরাইডের প্রয়োজন আর এই সোডিয়াম ব্রোমাইডই এর নিরাপদ বিকল্প। চ্যাটজিপিটি তাঁকে এই পরামর্শ দিয়েছিল। কিন্তু সোডিয়াম ব্রোমাইডের ক্ষতিকর দিক নিয়ে সতর্ক করতে ভুলে গিয়েছিল এই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা।
৬০ বছর বয়সী ওই ব্যক্তির পরিচয় প্রকাশ করা হয়নি। সম্প্রতি তিনি হাসপাতালের জরুরি বিভাগে চিকিৎসককে দেখাতে আসেন এবং অভিযোগ করেন, তাঁর প্রতিবেশিরা তাঁকে বিষ দিয়েছে। তাঁর মধ্যে কিছু অস্বাভাবিক লক্ষণ চোখে পড়ে চিকিৎসকদের। তিনি তৃষ্ণার্ত ছিলেন কিন্তু পানি খেতে চাইছিলেন না। তাঁর হ্যালুসিনেশনও হচ্ছিল। বড় ধরনের মানসিক বিপর্যস্ততার কারণে পর্যবেক্ষণে রাখা হয় ওই ব্যক্তিকে।
এরপর ইন্ট্রাভেনাস ফ্লুইড দেওয়ার পর এবং অ্যান্টি-সাইকোটিক ওষুধ দেওয়ার পরে তাঁর লক্ষণগুলো কিছুটা প্রশমিত হতে শুরু করে। যখন স্বাভাবিক অবস্থা হয়, তিনি তখন তাঁর অসুস্থতার মূল কারণটি জানান। খাবারে অতিরিক্ত লবনের ব্যবহার নিয়ে দুশ্চিন্তা থেকে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সহায়তা নিয়ে তিনি এর বিকল্প সন্ধান করছিলেন। এরপর ক্লোরাইড উপাদানের বিকল্প হিসেবে চ্যাটজিপিটি তাকে নিরাপদ হিসেবে ব্রোমাইডের নাম উল্লেখ করে। স্বাস্থ্যগত ঝুঁকির কথা চিন্তা না করেই তিনি সোডিয়াম ব্রোমাইড খাওয়া শুরু করেন।
সাধারণত ওষুধের মধ্যে ব্রোমাইড উপাদান ব্যবহার করা হয় উদ্বেগ ও অনিদ্রার চিকিৎসায়। স্বাস্থ্যগত ঝুঁকির কারণে কয়েক দশক ধরেই এর ব্যবহার বাতিল করা হয়েছে। এখন ব্রোমাইড পাওয়া যায় কিছু প্রাণির ওষুধে, আর কিছু ইন্ডাস্ট্রিয়াল পণ্যে।
হাসপাতালে ৩ সপ্তাহ থাকার পর সুস্থ হয়ে ওঠেন ওই ব্যক্তি। এ ঘটনার পর কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহারে সবাইকে সচেতন হওয়ার পরামর্শ দেন সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকেরা।