Image description
 

দিল্লির রাজপথে এমন দৃশ্য দেখা গেল যা বহুদিনের রাজনৈতিক ইতিহাসে বিরল। সংসদ ভবনের মকর দ্বার থেকে শুরু হওয়া ইন্ডিয়া জোটের এমপিদের পদযাত্রা জাতীয় নির্বাচন কমিশনের সদর দফতরে পৌঁছানোর আগেই দিল্লি পুলিশের ব্যারিকেডে থমকে গেল এবং শেষমেশ তা পরিণত হল এক ব্যাপক গ্রেফতার অভিযানে। 

 

ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধন বা SIR প্রক্রিয়াকে বিরোধীরা ‘ভোটাধিকার খর্বের চক্রান্ত’ বলে আখ্যা দিয়ে সংসদ চত্বরে জমায়েত হয়েছিলেন কংগ্রেস, তৃণমূল, সমাজবাদী পার্টি, শিবসেনা, ডিএমকে সহ ইন্ডিয়া জোটের প্রায় সব সদস্যদলের সাংসদরা। 

জাতীয় সঙ্গীত গেয়ে, হাতে পোস্টার নিয়ে তারা স্লোগানে স্লোগানে পরিবহণ ভবনের দিকে এগোতে থাকেন। পথে মহুয়া মৈত্র ও সুস্মিতা দেব ব্যারিকেডের উপর উঠে স্লোগান দেন, অখিলেশ যাদব তা লঙ্ঘন করে এগিয়ে যান, অন্যরা চেষ্টা করলেও পুলিশ চারদিক থেকে ঘিরে ফেলে। 

মুহূর্তের মধ্যে রাহুল গান্ধী, প্রিয়াঙ্কা গান্ধী, সঞ্জয় রাউত, তৃণমূলের সুজাতা ঘোষসহ প্রায় ১০০ জনকে আটক করে পুলিশ, বাসে তুলে নিয়ে যাওয়া হয় পার্লামেন্ট স্ট্রিট থানায়। 

এ সময় রাহুল গান্ধী বলেন, “এটা আমাদের গণতান্ত্রিক অধিকার, আমরা ভোটার তালিকার সুষ্ঠুতা চাই, সরকারের অন্যায় মানি না।”

 প্রিয়াঙ্কা গান্ধীর ভাষায়, “সরকার ভীত, ওরা জানে মানুষ আর চুপ থাকবে না।” 

মল্লিকার্জুন খার্গে জানান, “SIR প্রক্রিয়া অগণতান্ত্রিক, বিরোধী ভোটারদের বাদ দেওয়ার ষড়যন্ত্র।” 

শশী থারুরও প্রশ্ন তোলেন, নির্বাচন কমিশনের নীরবতা কি তাদের পক্ষপাতের প্রমাণ নয়? 

পুলিশের বক্তব্য, এই পদযাত্রার জন্য অনুমতি ছিল না, এবং অনুমতিপ্রাপ্ত ৩০ জনের বদলে শতাধিক সাংসদ ও নেতা রাস্তায় নেমেছেন, যা আইনশৃঙ্খলার জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। বিকেল নাগাদ কিছু আটক নেতাকে ছেড়ে দেওয়া হলেও রাহুল, প্রিয়াঙ্কা, অখিলেশদের মুক্তি পাওয়ার সময় নিয়েই বিভ্রান্তি ছিল। 

এই বিক্ষোভে দেশের অন্যান্য বিরোধী নেতারাও সোচ্চার হয়েছেন এবং আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে ভারতের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার অবস্থা নিয়ে বিশ্লেষণ শুরু হয়েছে। নির্বাচন কমিশন এখনও কোনও মন্তব্য করেনি, যা বিরোধীদের আরও ক্ষুব্ধ করেছে। 

সমর্থকরা বলছেন, এই লড়াই কেবল SIR নয়, দেশের ভোটাধিকার রক্ষার লড়াই—আর আজ দিল্লির রাজপথে তারই বিস্ফোরণ দেখা গেল।