Image description

গাজায় ইসরাইলের হামলায় নিহত আল জাজিরার সাংবাদিক আনাস আল শরীফ মারা যাওয়ার আগে একটি মর্মস্পর্শী চিঠি লিখেছেন। তা তার বন্ধুর মাধ্যমে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ পেয়েছে। রোববার সন্ধ্যায় গাজা সিটির আল-শিফা হাসপাতালের কাছে ইসরায়েলি হামলায় নিহত পাঁচ সাংবাদিকের একজন আনাস আল-শরীফ।

এ খবর দিয়েছে অনলাইন এনডিটিভি। ওই চিঠিতে তিনি লিখেছেন, ‘এটি আমার শেষ ইচ্ছা পত্র, আমার শেষ বার্তা। যদি আমার এই শব্দগুলো আপনাদের কাছে পৌঁছে, তবে জেনে নিন, ইসরাইল আমাকে হত্যা করতে এবং আমার কণ্ঠস্বর স্তব্ধ করতে সফল হয়েছে। আল্লাহর শান্তি, দয়া ও বরকত আপনাদের উপর বর্ষিত হোক। আল্লাহ জানেন, যেদিন থেকে আমি জীবন শুরু করেছি জাবালিয়া শরণার্থী শিবিরের গলিপথ ও মহল্লায় সেদিন থেকেই আমি আমার জনগণের পাশে দাঁড়াতে এবং তাদের কণ্ঠস্বর হতে সর্বশক্তি ও প্রচেষ্টা নিয়োজিত করেছি।’

২৮ বছর বয়সী এই সাংবাদিক আশা করেছিলেন দখলকৃত আশকেলন (আল-মাজদাল) শহরে নিজের পরিবারে ফিরে যাবেন। কিন্তু তিনি লিখেছেন- ‘আল্লাহর ইচ্ছাই চূড়ান্ত, তাঁর হুকুমই শেষ কথা।’ তিনি আরও লিখেছেন, আমি জীবনের প্রতিটি খুঁটিনাটি ব্যথা অনুভব করেছি। বারবার ক্ষতি ও শোকের স্বাদ পেয়েছি। তবুও আমি সত্যকে বিকৃত বা গোপন না করে তুলে ধরতে কখনও দ্বিধা করিনি। আল্লাহ সাক্ষী থাকুন, তাদের বিরুদ্ধে যারা নীরব থেকেছে, আমাদের হত্যাকে মেনে নিয়েছে, আমাদের শ্বাসরোধ করেছে, আমাদের শিশু ও নারীদের লাশেও যাদের হৃদয় নড়েনি, আর যারা আমাদের ওপর দেড় বছরের বেশি সময় ধরে চলা গণহত্যা থামায়নি। চিঠিতে আনাস আল-শরীফ গাজার মানুষকে পরামর্শ দেন। বলেন, সীমাবদ্ধতা যেন আপনাদের চুপ করাতে না পারে, সীমানা যেন আপনাদের আটকাতে না পারে। দেশের মুক্তি ও জনগণের স্বাধীনতার সেতু হয়ে উঠুন, যাতে মর্যাদা ও স্বাধীনতার সূর্য আমাদের দখলকৃত মাতৃভূমিতে উদিত হয়। তিনি অনুরোধ করেন, তার পরিবার- বিশেষ করে ছোট মেয়ে, ছেলে, স্ত্রী ও মায়ের যত্ন নিতে, যাদের বড় হতে তিনি দেখার সুযোগ পাননি। তিনি লিখেছেন, যদি আমি মারা যাই, তবে আমি আমার নীতিতে অটল থেকে মৃত্যুবরণ করব।

আল্লাহর সামনে সাক্ষ্য দেব যে আমি তাঁর ফয়সায় সন্তুষ্ট। তাঁর সাক্ষাতে আনন্দিত এবং নিশ্চিত যে আল্লাহর কাছে যা আছে তা উত্তম ও চিরস্থায়ী। গাজাকে ভুলে যেও না। আর আমাকে তোমাদের দোয়ায় ও ক্ষমাপ্রার্থনায় স্মরণ রেখো।