
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের সাথে বৈঠকের সময় আজারবাইজান এবং আর্মেনিয়া মার্কিন-মধ্যস্থতায় একটি শান্তি চুক্তি স্বাক্ষর করেছে বলে জানা গেছে। যা কয়েক দশকের সংঘাতের পর দ্বিপাক্ষিক অর্থনৈতিক সম্পর্ককে আরও জোরদার করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
‘দীর্ঘ সময়-৩৫ বছর। ওরা লড়ছিল। এখন ওরা বন্ধু। আর পরবর্তী দীর্ঘ সময় বন্ধুই থাকবে’- চুক্তি করিয়ে ঘোষণা করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প। দুই রাষ্ট্রপ্রধানের করমর্দনের সময় তাদের হাত দু’টিকে চেপে ধরতেও দেখা যায় হাস্যমুখ বর্ষীয়ান নেতাকে। এই মুহূর্তকে ‘ঐতিহাসিক’ বলে বর্ণনা করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। পরে আজারবাইজানের প্রেসিডেন্ট ইলহাম আলিয়েভ ও আর্মেনিয়ার প্রধানমন্ত্রী নিকোল পাশিনায়ানও উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেন ট্রাম্পের।এই চুক্তি দুই দেশের মধ্যে কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরিবহন রুট উন্মুক্ত করবে এবং ওই অঞ্চলে আমেরিকান প্রভাব বাড়িয়ে তুলবে। চুক্তি স্বাক্ষর হওয়ার পর ডনাল্ড ট্রাম্প বলেন, ‘আর্মেনিয়া ও আজারবাইজান সব ধরনের যুদ্ধ চিরতরে বন্ধ করার পাশাপাশি ভ্রমণ, বাণিজ্য ও কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। আমরা ককেশাসে শান্তি প্রতিষ্ঠা করছি। আমরা বহু বছরের যুদ্ধ, দখলদারিত্ব ও রক্তপাত বন্ধ করেছি।’
আর্মেনিয়ার প্রধানমন্ত্রী পাশিনিয়ান এই চুক্তি স্বাক্ষরকে দুই দেশের সম্পর্কের ক্ষেত্রে একটি ‘গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। এর আগে শুক্রবারই এক্স হ্যান্ডলে পোস্ট করে সকলকে সুখবর দেন ট্রাম্প। সোশ্যাল মিডিয়ায় তাকে লিখতে দেখা যায়, ‘এই দুই দেশ (আর্মেনিয়া-আজারবাইজান) বহু বছর ধরে নিজেদের মধ্যে যুদ্ধে লিপ্ত। যার জেরে হাজার হাজার সাধারণ নাগরিকের মৃত্যু হয়েছে। এখনও পর্যন্ত বহু দেশের নেতা এই যুদ্ধ থামাতে অনেক চেষ্টা করেছেন কিন্তু কেউই এখনও সফল হননি। অবশেষে আমরা সফল হলাম।’
নিজেই নিজেকে ধন্যবাদ জানানোর পাশাপাশি তিনি আরও লেখেন, ‘আমেরিকা এই দুই দেশের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক চুক্তি করবে। যাতে দুই দেশের আর্থিক উন্নতি ঘটে ও সঠিক সুযোগ পায়।’
১৯৮০ সালের শেষের দিক থেকে আর্মেনিয়া এবং আজারবাইজানের মধ্যে বিরোধ চলছে, যখন নাগোর্নো-কারাবাখ (একটি পাহাড়ি আজারবাইজান অঞ্চল) যার বেশিরভাগই জাতিগত আর্মেনীয় অধ্যুষিত, আজারবাইজান থেকে আলাদা হয়ে যায়। ২০২৩ সালে আজারবাইজান এই অঞ্চলের সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ ফিরে পায়, যার ফলে এই অঞ্চলের প্রায় ১০০,০০০ জাতিগত আর্মেনীয় পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়।
চুক্তি স্বাক্ষরের পর ট্রাম্প বলেন, আজারবাইজান এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে প্রতিরক্ষা সহযোগিতার উপর থেকেও নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়া হয়েছে, যা মস্কোকে চিন্তায় ফেলতে পারে।
সূত্র : রয়টার্স