Image description

 রাশিয়া থেকে তেল আমদানির কারণে ভারতের ওপর ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এর পাশাপাশি, রুশ জ্বালানি আমদানি অব্যাহত রাখলে আরও ‘সেকেন্ডারি স্যাংশন’ বা দ্বিতীয় পর্যায়ের নিষেধাজ্ঞার হুমকিও দিয়েছেন তিনি।

বুধবার (৬ আগস্ট) হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ট্রাম্প বলেন,

“এখন মাত্র আট ঘণ্টা হয়েছে। দেখি এরপর কী হয়... আপনারা আরও অনেক কিছু দেখতে চলেছেন। অনেক সেকেন্ডারি স্যাংশন দেখতে পাবেন।”

এই মন্তব্য এসেছে এমন এক সময়, যখন ট্রাম্প ভারতের ওপর অতিরিক্ত ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করে নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করেছেন। নতুন আদেশ অনুযায়ী, ভারতের মোট শুল্কহার দাঁড়িয়েছে ৫০ শতাংশে, যা কার্যকর হবে ২৭ আগস্ট থেকে। এই হার বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বেশি, যা রাশিয়ার সঙ্গে বাণিজ্য করা কোনো দেশের ওপর আরোপ করা হয়েছে।

ট্রাম্প প্রশাসনের এই সিদ্ধান্তে নয়াদিল্লিতে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, “এই শুল্ক অন্যায্য, অযৌক্তিক ও অগ্রহণযোগ্য। যুক্তরাষ্ট্রের এমন পদক্ষেপ অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক, বিশেষ করে যখন অন্যান্য অনেক দেশও জাতীয় স্বার্থে একই ধরনের পদক্ষেপ নিচ্ছে।”

ভারতের কর্মকর্তারা প্রশ্ন তুলেছেন, রাশিয়ার তেল আমদানিতে চীন ও তুরস্কের ভূমিকা থেকেও কেন তাদের বিরুদ্ধে সমান পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না। এর জবাবে ট্রাম্প বলেন,

“তা হতে পারে। আমি এখনই নিশ্চিত করে কিছু বলতে পারছি না। আমরা ভারতের ক্ষেত্রে করেছি, আরও কয়েকটির ক্ষেত্রেও করব—এর মধ্যে একটি হতে পারে চীন।”

বর্তমানে চীনের ওপর ৩০ শতাংশ এবং তুরস্কের ওপর ১৫ শতাংশ শুল্ক রয়েছে। ভারতের নতুন শুল্কহার (৫০%) কেবল ব্রাজিলের সঙ্গে মিলে গেছে, যেখানে মিয়ানমার (৪০%), বাংলাদেশ (৩৫%) ও ভিয়েতনাম (২০%) তুলনামূলকভাবে অনেক কম হারে শুল্কের আওতায় রয়েছে।

নির্বাহী আদেশে উল্লেখ করা হয়েছে, “ভারত সরকার সরাসরি বা পরোক্ষভাবে রাশিয়ান ফেডারেশন থেকে তেল আমদানি করছে। এর ফলে অতিরিক্ত অ্যাড ভ্যালোরেম শুল্ক আরোপ করা অনিবার্য হয়ে উঠেছে।”

তবে ভারত সরকারের বক্তব্য, তাদের তেল আমদানি সম্পূর্ণভাবে বাজারভিত্তিক এবং এর মূল উদ্দেশ্য ১.৪ বিলিয়ন মানুষের জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। ভারত বলছে, তারা জাতীয় স্বার্থ রক্ষায় প্রয়োজনীয় সব ধরনের পদক্ষেপ নিতে প্রস্তুত।

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শেষ হলে এই শুল্ক কি তুলে নেওয়া হবে—এই প্রশ্নের উত্তরে ট্রাম্প বলেছেন, “আমরা সেটা পরে দেখব। আপাতত, তারা ৫০ শতাংশ শুল্ক দিচ্ছে।”

বিশ্লেষকরা বলছেন, বিষয়টি শুধু বাণিজ্যনীতি নয়, ভূরাজনৈতিক প্রভাব বলয় এবং ভবিষ্যৎ কৌশলগত অগ্রাধিকার নিয়েও নতুন করে প্রশ্ন তুলছে।

শীর্ষনিউজ