Image description

জাপান সাগরে তিনদিনব্যাপী যৌথ নৌমহড়া শুরু করেছে চীন ও রাশিয়া। এই মহড়ার মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন বৈশ্বিক ব্যবস্থার প্রতিপ্রেক্ষিতে নিজেদের কৌশলগত অংশীদারিত্ব আরও জোরদার করতে চায় দুই দেশ।

 

রোববার (৩ জুলাই) এক প্রতিবেদনে এ খবর দিয়েছে আল জাজিরা।

চীনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ‘জয়েন্ট সি-২০২৫’ নামে পরিচিত এই মহড়া শুরু হয়েছে রুশ বন্দর শহর ভ্লাদিভস্তকের উপকূলবর্তী জলসীমায়। এতে সাবমেরিন উদ্ধার, যৌথ পনডুবি প্রতিরোধ, আকাশ প্রতিরক্ষা ও ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরোধ এবং সমুদ্রযুদ্ধ সংক্রান্ত অনুশীলন চালানো হচ্ছে।

মহড়ায় অংশ নিচ্ছে চীনের চারটি যুদ্ধজাহাজ, যার মধ্যে রয়েছে গাইডেড-মিসাইল ধ্বংসকারী জাহাজ ‘শাওশিং’ ও ‘উরুমচি’। রুশ যুদ্ধজাহাজগুলোও এতে অংশ নিচ্ছে বলে নিশ্চিত করেছে চীন।

এই মহড়া শেষে চীন ও রাশিয়া প্রশান্ত মহাসাগরের নির্দিষ্ট এলাকায় যৌথ টহল পরিচালনা করবে।

‘জয়েন্ট সি’ নামে চীন-রাশিয়ার এই বার্ষিক সামরিক মহড়া ২০১২ সালে শুরু হয়। গত বছর এটি চীনের দক্ষিণ উপকূলে অনুষ্ঠিত হয়েছিল। এবার জাপান সাগরে মহড়া হওয়ায়, সম্প্রতি জাপানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এক প্রতিবেদনে চীন-রাশিয়া সামরিক সম্পর্ক বৃদ্ধিকে ‘গুরুতর নিরাপত্তা হুমকি’ হিসেবে বর্ণনা করেছে।

তবে রুশ নৌবাহিনীর প্যাসিফিক ফ্লিট বলেছে, এই মহড়া প্রতিরক্ষামূলক এবং কোনো দেশের বিরুদ্ধে নয়।

চীনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এই মহড়ার লক্ষ্য হলো দুই দেশের ‘সমগ্র কৌশলগত অংশীদারিত্বকে আরও গভীর করা’।

উল্লেখ্য, ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর রাশিয়ার ওপর পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা আরোপের প্রেক্ষাপটে চীন রাশিয়াকে অর্থনৈতিকভাবে সহায়তা দিয়ে এসেছে। তবে বেইজিং প্রকাশ্যে কখনোই মস্কোর আগ্রাসনের নিন্দা করেনি বা রুশ সেনা প্রত্যাহারের দাবি তোলেনি।

এদিকে ইউক্রেনের মিত্র দেশগুলো, বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্বাস— চীন পরোক্ষভাবে রাশিয়াকে সহায়তা করছে। গত মাসে ইউরোপীয় নেতারা চীনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছিলেন, যাতে বেইজিং রাশিয়াকে যুদ্ধ থামাতে চাপ প্রয়োগ করে। তবে বেইজিংয়ের অবস্থানে কোনো পরিবর্তন দেখা যায়নি।

চীন বারবার নিজেকে নিরপেক্ষ পক্ষ হিসেবে দাবি করে আসছে এবং লড়াইয়ের অবসান ঘটানোর আহ্বান জানালেও, পশ্চিমা দেশগুলোর ওপরই সংঘাত দীর্ঘায়িত করার অভিযোগ এনেছে।