Image description
 

যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত পুলিশ কর্মকর্তা দিদারুল ইসলামকে গভীর শোক ও শ্রদ্ধায় শেষবিদায় জানিয়েছেন হাজার হাজার মানুষ। এদের মধ্যে ছিলেন আত্মীয়স্বজন, রাজনীতিবিদ এবং নিউইয়র্ক সিটি পুলিশ বিভাগের সদস্যরা। স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার সকালে নিউইয়র্ক সিটির পার্চেস্টার এলাকায় দিদারুলকে শেষবিদায় জানানো হয়। খবর সিএনএনের।

 

গত সোমবার নিউইয়র্কের ম্যানহাটানের পার্ক অ্যাভিনিউয়ে বন্দুকধারীর গুলিতে নিহত হন দিদারুল। পার্ক অ্যাভিনিউয়ের একটি ভবনে ঢুকে রাইফেল থেকে এলোপাতাড়ি গুলি চালাতে থাকেন এক বন্দুকধারী। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে হামলাকারীকে থামাতে গিয়ে বন্দুকধারীর গুলিতে দিদারুল নিহত হন।

 

দিদারুলকে ‘গার্ড অব অনার’ প্রদান করে নিউইয়র্ক পুলিশ বিভাগ । তাকে মরণোত্তর ‘ডিটেকটিভ ফার্স্ট গ্রেড’ পদে পদোন্নতি দেওয়া হয়।

দিদারুল ইসলামের স্ত্রীর পক্ষ থেকে পাঠ করা বিবৃতিতে বলা হয়, ‘আমার স্বামী ছিলেন একজন বিশ্বাসী, সৎ এবং পরোপকারী মানুষ।’

তিনি বলেন, ‘দিদারুল ছিলেন একজন নিবেদিতপ্রাণ পুত্র, একজন প্রিয় ভাই এবং সবচেয়ে স্নেহশীল পিতা। আমাদের পরিবারের কাছে তিনি ছিলেন আমাদের পৃথিবী।’

  

দিদারুলের বীরত্বের স্বীকৃতি দিতে, তার প্রতি সর্বোচ্চ শ্রদ্ধা দেখাতে এ আনুষ্ঠানিকতায় যোগ দেন নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্যের গভর্নর, নিউইয়র্ক সিটির মেয়র, নিউইয়র্ক পুলিশ বিভাগের কমিশনারসহ হাজারো কর্মকর্তা।

অনুষ্ঠানে এনওয়াইপিডির কমিশনার জেসিকা টিশ বলেন, দিদারুল নিজের জীবন দিয়ে অন্যদের রক্ষা করেছেন। তিনি এক নিঃস্বার্থ বীর। পুরো পুলিশ বিভাগ দিদারুলের পরিবারের পাশে রয়েছে বলে জানান তিনি।

‘গার্ড অব অনার’-এর আনুষ্ঠানিকতা শেষে জানাজার জন্য দিদারুলের মরদেহ ব্রঙ্কসের পার্কচেস্টার জামে মসজিদে নেওয়া হয়। তার জানাজায় হাজারো মানুষ অংশ নেন। জানাজা শেষে নিউজার্সির টোটোয়া ইসলামিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।

জানাজা অনুষ্ঠানে নিউইয়র্কের গভর্নর ক্যাথি হোকুল বলেন, তিনি শোকাহত। গভর্নর বলেন, ‘একজন উন্মাদ হঠাৎ করে এসে দিদারুল এবং তার পরিবারের সব স্বপ্ন-আশা মুহূর্তের মধ্যেই ধুলিস্যাৎ করে দিয়েছে।’

পবিত্র আল কোরআনের উদৃতি দিয়ে তিনি বলেন, ‘কোরআনে বলা হয়েছে যে একটি জীবন রক্ষা করলো, সে যেন সমগ্র মানবজাতিকে রক্ষা করল।’ তার মতে, দিদারুল ঠিক এই কাজটিই করেছেন।

বাংলাদেশে দিদারুলের গ্রামের বাড়ি মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায়। ২০০৯ সালে স্থায়ীভাবে বসবাসের জন্য যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমিয়েছিলেন তিনি।