
ভারতের মহারাষ্ট্রের মালেগাঁওয়ের সেই কবরস্থান বিস্ফোরণকান্ডে দেশটির সাবেক বিজেপি সংসদ সদস্য প্রজ্ঞা ঠাকুরসহ ৭ অভিযুক্তকেই বেকসুর খালাস ঘোষণা করল এনআইএ বিশেষ আদালত। বৃহস্পতিবার বিচারক একে লাহোটির তার রায় পর্যবেক্ষণে বলেন, কেবল সন্দেহের বশে মামলা এগোনো যায় না। আরও বলেন, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে যুক্তিসঙ্গত প্রমাণ দিতে ব্যর্থ হয়েছে সরকার পক্ষ। টাইমস অব ইন্ডিয়া।
বিজেপি নেত্রী প্রজ্ঞা ছাড়াও মালেগাঁও বিস্ফোরণ কাণ্ডে ‘হাই প্রোফাইল’ অভিযুক্ত ছিলেন প্রাক্তন সেনাকর্মী লেফটেন্যান্ট কর্নেল প্রসাদ পুরোহিত, স্বামী অসীমানন্দ ওরফে নবকুমার সরকার। যদিও পরে চার্জশিটে নাম ছিল না অসীমানন্দের। এদিন এনআইএ আদালত যে ৭ অভিযুক্তকে বেকসুর খালাস দিয়েছে তারা হলো প্রজ্ঞা ঠাকুর, কর্নেল প্রসাদ, প্রাক্তন মেজর রমেশ উপধ্যায়, সুধাকর চতুর্বেদী, অজয় রাহিরকর, সুধাকর ধার দ্বিবেদী ওরফে আলিয়াস শংকরাচার্য এবং সমীর কুলকার্নি। বিচারক একে লাহোটি বলেন, ‘সমাজে এটা একটা ভয়াবহ ঘটনা। কিন্তু কেবল নৈতিকতার যুক্তিতে কাউকে দোষী সাব্যস্ত করতে পারে না আদালত।’
২০০৮ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর রাতে মহারাষ্ট্রের নাসিক জেলার মালেগাঁও শহরে ভয়ংকর বিস্ফোরণ হয়। ৬ জনের মৃত্যু হয়। আহত হয়েছিলেন একশোর বেশি। তদন্তে উঠে আসে, মালেগাঁও শহরে মসজিদ লাগোয়া কবরস্থানে একটি মোটরবাইক দুটি বোমা রাখা ছিল। তাতেই বিস্ফোরণ ঘটে।
মহারাষ্ট্রের সন্ত্রাসদমন শাখার (এটিএস) প্রাথমিকভাবে জানায়, বিস্ফোরণের নেপথ্যে একটি হিন্দুত্ববাদী সংগঠন। যে মোটরবাইকে বোমা রাখা ছিল সেটা প্রজ্ঞা ঠাকুরের নামে নথিভুক্ত ছিল। নির্দিষ্ট একটি ধর্মের মানুষকে নিশানা করতেই বিস্ফোরণের পরিকল্পনা করেন প্রজ্ঞা। একে একে গ্রেফতার হন প্রজ্ঞা ঠাকুর, কর্নেল প্রসাদসহ অন্য অভিযুক্তরা।
প্রাথমিকভাবে গ্রেফতার হলেও পরে জামিন পান প্রজ্ঞা এবং কর্নেল। ২০১১ সালে মালেগাঁও বিস্ফোরণ মামলা জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা (এনআইএ)-র কাছে যায়। এরপর তদন্তের অভিমুখ খানিক বদলে যায়। একাধিক চার্জশিট ও অতিরিক্ত চার্জশিটের পর ২০১৮ সালে বিচারপ্রক্রিয়া শুরু হয়। বিচার চলার সময়ে আদালত ৩২৩ জন সাক্ষীর বয়ান খতিয়ে দেখা হয়। যদিও শেষ পর্যন্ত উপযুক্ত প্রমাণের অভাবেই অভিযুক্তদের বেকসুর খালাস ঘোষণা করল এনআইএ বিশেষ আদালত।
উল্লেখ্য, মালগাঁওয়ে বিস্ফোরণের ঘটনায় ‘হিন্দু সন্ত্রাসবাদ’ নিয়ে কথা ওঠে। যদিও এদিন বিচারক বলেন, ‘সন্ত্রাসবাদের কোনো ধর্ম হয় না।’