Image description

ইউক্রেন যুদ্ধকে ঘিরে পশ্চিমা দেশগুলোর বিরুদ্ধে সরাসরি লড়াইয়ের প্রস্তুতি নিচ্ছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। অপরদিকে তাইওয়ান ইস্যুতে পশ্চিমাদের সঙ্গে সংঘাতের দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে চীনও। সম্প্রতি তাইওয়ান নিয়ে যুদ্ধাবস্থার ইঙ্গিত দিয়ে চীনের বিরুদ্ধে সরাসরি যুদ্ধের হুমকি দেয় যুক্তরাজ্য। সেই সঙ্গে জানায়, যুদ্ধ বাধলে অস্ট্রেলিয়া ও ব্রিটেন যৌথভাবে অংশ নেবে। এমন উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে চীন ও রাশিয়া এবার কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে প্রশান্ত মহাসাগরে যুদ্ধ মহড়া চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

এই যৌথ যুদ্ধ প্রস্তুতির অংশ হিসেবে তারা আয়োজন করছে "জয়েন্ট সি ২০২৫" নামে বিশাল নৌ মহড়া। এর আগে জুলাইয়ে রাশিয়া আয়োজন করে "জুলাই স্টর্ম" নামের বিশাল সামরিক মহড়া, যেখানে অংশ নেয় ১৫০টির বেশি যুদ্ধজাহাজ ও সাবমেরিন, ১২০টির বেশি সামরিক বিমান, এবং ১৫ হাজার সেনা। উল্লেখযোগ্যভাবে, ওই মহড়ায় রুশ বাহিনীর পাশাপাশি ছিল ইরানের আয়াতুল্লাহ আলী খামিনির বাহিনীরাও।

চীন ও রাশিয়ার আসন্ন এই ষষ্ঠ যৌথ নৌ মহড়া অনুষ্ঠিত হবে রুশ বন্দর শহর ভ্লাদিভস্তকের উপকূলে, জাপান সাগরের আকাশ ও সমুদ্রসীমায়। এটি দু’দেশের সামরিক বাহিনীর বার্ষিক কৌশলগত সহযোগিতার অংশ হলেও আন্তর্জাতিকভাবে এটিকে এক বিপজ্জনক সংকেত হিসেবে দেখা হচ্ছে। যদিও বেইজিং দাবি করছে, এই মহড়া তৃতীয় কোনো পক্ষকে লক্ষ্য করে নয়, এবং এর সঙ্গে আঞ্চলিক উত্তেজনার কোন সম্পর্ক নেই।

 

তবে বাস্তবতা বলছে ভিন্ন কথা। কারণ এই ঘোষণা এসেছে এমন সময়ে, যখন প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলজুড়ে যুক্তরাষ্ট্র চালাচ্ছে ‘রেজোলিউট ফোর্স প্যাসিফিক ২০২৫’ মহড়া, যার নেতৃত্বে আছে মার্কিন বিমান বাহিনী। এটিকে এই অঞ্চলের সবচেয়ে বড় সামরিক মহড়া হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। এই মহড়ায় যুক্তরাষ্ট্র, জাপান এবং অস্ট্রেলিয়ার যৌথভাবে অংশ নিচ্ছে, যেখানে রয়েছে ১২ হাজার সৈন্য ও ৪০০টির বেশি যুদ্ধবিমান।

 

বিশ্লেষকদের মতে, এসব ঘটনা প্রমাণ করে যে বিশ্ব এখন এক বিভাজিত কৌশলগত মেরুকরণের দিকে অগ্রসর হচ্ছে, যেখানে একদিকে রাশিয়া-চীন-ইরান, অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্র-জাপান-অস্ট্রেলিয়া—দুই শিবির যুদ্ধ-প্রস্তুতিতে ব্যস্ত। আগামী দিনে ইউক্রেন ও তাইওয়ান ঘিরে এই উত্তেজনা যদি বাস্তব সংঘাতে রূপ নেয়, তবে প্রশান্ত মহাসাগর হতে পারে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের কেন্দ্রবিন্দু।