
‘বাংলাদেশি’ সন্দেহে ডিটেনশন ক্যাম্পে আটকে রাখা হয়েছিল অন্তত ৩০ জন পরিযায়ী শ্রমিককে। চাওয়া হয়েছিল নাগরিকত্বের নথিপত্র। বিষয়টি সামনে আসতেই তীব্র ক্ষোভে ফেটে পড়েছিলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
মমতার হুঁশিয়ারি ও চাপের মুখে শেষ পর্যন্ত হরিয়ানা সরকার পশ্চিম বাংলার ৩০ পরিযায়ী শ্রমিককে মুক্তি দিয়েছে।
ইতোমধ্যেই ১৫ জন শ্রমিক ফিরে এসেছেন মালদহের চাঁচল ও হরিশ্চন্দ্রপুরে। বাকি ১৫ জনকেও শিগগিরি মুক্তি দিয়ে বাড়ি ফেরানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
বাংলা ভাষায় কথা বলায় ‘বাংলাদেশি’ বলে সন্দেহ করে পশ্চিমবঙ্গের শ্রমিকদের ডিটেনশন ক্যাম্পে আটকে রাখার মতো গুরুতর অভিযোগ আগেই উঠেছিল হরিয়ানা সরকারের বিরুদ্ধে।
ওইসব পরিযায়ী শ্রমিকদের নাগরিকত্বের নথি চেয়ে হরিয়ানা থেকে রাজ্য পুলিশের কাছে চিঠিও পাঠানো হয়েছিল। তা নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রতিবাদী পোস্ট করেছিলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
বাংলাভাষী শ্রমিকদের উপর এমন ‘অত্যাচার’ বরদাস্ত করা হবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন তিনি। লাগাতার এনিয়ে বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলোকে কার্যত কঠোর বার্তা দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
সম্প্রতি বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিতে বাংলা ভাষা ও বাঙালিদের উপর অত্যাচারের অসংখ্য অভিযোগ এসেছে। বাংলায় কথা বললেই ‘বাংলাদেশি’ বলে দায় চাপিয়ে নাগরিকত্ব নিয়ে প্রশ্ন তোলা হচ্ছে। সন্দেহের বশে ঢুকিয়ে দেওয়া হচ্ছে ডিটেনশন ক্যাম্পে।
এখানেই শেষ নয়, তারা আদৌ বাংলার বাসিন্দা কিনা, তা জানতে নথিও চাওয়া হচ্ছে রাজ্য সরকারের কাছে। এসব অভিযোগ পেয়ে ক্ষোভে ফুঁসে উঠেছেন মুখ্যমন্ত্রী। এটা ‘বাংলা ভাষার উপর সন্ত্রাস’ বলে উল্লেখ করেছেন তিনি।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই লাগাতার বিরোধিতা নিয়ে কড়া জবাব দিয়েছেন হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রী নায়েব সিং সাইনি।
শনিবার এক্স হ্যান্ডল পোস্টে তার পালটা বক্তব্য, হরিয়ানা কিংবা দেশের কোথাও অনুপ্রবেশকারীদের ঠাঁই নেই। দেশের সুরক্ষার স্বার্থেই এই সিদ্ধান্ত। অথচ বাংলার মুখ্যমন্ত্রী এনিয়ে ‘ভুল’ রাজনৈতিক প্রচার করছেন বলে অভিযোগ সাইনির।
তবে সোশ্যাল মিডিয়ায় যতই যুক্তি দেখান হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রী, তা স্পষ্ট তার সরকারের পদক্ষেপে। ইতিমধ্যে ধাপে ধাপে বাংলার শ্রমিকদের মুক্তি দেওয়া হচ্ছে। গত দু’দিনে হরিয়ানা থেকে মালদহের চাঁচল ও হরিশ্চন্দ্রপুরে ফিরেছেন মোট ১৫ জন। এবার মুক্তি পাওয়া বাকি শ্রমিকরাও ফিরবেন শিগগিরই।