
জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস এবং নিরাপত্তা পরিষদের চলমান সভাপতি আসিম ইফতিখার আহমাদের কাছে একই ধরনের দুটি চিঠি পাঠিয়ে জুন মাসে ১২ দিনব্যাপী ইসরায়েলি সামরিক আগ্রাসনের সময় সংঘটিত সহিংসতার বিস্তারিত প্রতিবেদন উপস্থাপন করেছে জাতিসংঘে ইরানের স্থায়ী মিশন।
চিঠিতে বিশেষভাবে নারী ও শিশুদের ওপর চালানো হামলার বিষয়টি তুলে ধরা হয়েছে। প্রতিবেদনটি জাতিসংঘ মহাসচিবের শিশু ও সশস্ত্র সংঘাতবিষয়ক বিশেষ প্রতিনিধি এবং জাতিসংঘ শিশু তহবিল (ইউনিসেফ)-এর কাছেও পাঠানো হয়েছে।
চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, এই হামলায় বেসামরিক মানুষের প্রাণহানি ও অবকাঠামো ধ্বংসের ঘটনায় নিরাপত্তা পরিষদ এবং আন্তর্জাতিক সমাজের যৌথ দায়িত্ব রয়েছে—এবং তাদের উচিত, এই প্রকাশ্য আগ্রাসনের জন্য দায়ীদের জবাবদিহির আওতায় আনা।
সংযুক্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ১৩ জুন ভোরে ইসরায়েলি হামলা শুরু হওয়ার পর থেকে ১ হাজার ১০০ বেসামরিক নাগরিক নিহত হন, যাদের মধ্যে ১৩২ জন নারী ও ৪৫ জন শিশু রয়েছে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, হামলাগুলো পরিকল্পিতভাবে হাসপাতাল, সংবাদমাধ্যম, পারমাণবিক স্থাপনা এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ বেসামরিক অবকাঠামোর ওপর চালানো হয়। এসব হামলায় যুক্তরাষ্ট্রসহ বেশ কয়েকটি পশ্চিমা দেশের সামরিক, গোয়েন্দা ও রাজনৈতিক সহায়তা ছিল বলে অভিযোগ করা হয়।
হত্যাকাণ্ডের শিকারদের মধ্যে রয়েছে ৩০ জন স্কুলশিক্ষার্থী, এমন কিছু পরিবার যাদের সবাই নিহত হয়েছেন, এবং হাকিম শিশু হাসপাতাল, শিশুদের কিন্ডারগার্টেন, জনসাধারণের পার্ক, এভিন কারাগার, এমনকি অ্যাম্বুলেন্সে চালানো হামলায় প্রাণ হারানো লোকজনের পরিচয়সহ জীবনীও এতে তুলে ধরা হয়েছে।
ইরানি মিশন এসব হামলাকে জাতিসংঘ সনদ, আন্তর্জাতিক আইন, জেনেভা কনভেনশন ও মানবাধিকার আইন লঙ্ঘনের গুরুতর উদাহরণ হিসেবে অভিহিত করেছে।
তারা জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে, ইসরায়েল ও এর মিত্রদের দীর্ঘদিনের দায়মুক্তির সংস্কৃতি অবসান ঘটাতে হবে এবং যাঁরা এসব অপরাধে জড়িত, তাঁদের বিরুদ্ধে দ্রুত ও কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
সূত্র: মেহের নিউজ এজেন্সি