
যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামাকে গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআই গ্রেপ্তার করেছে। এ সময় তাকে হ্যান্ডকাফ পরানো হয়। কারাগারের ভিতর ওবামা কমলা কয়েদিদের কমলা রঙের পোশাক পরে দাঁড়িয়ে আছেন। না, এই খবর সত্য নয়। কৃত্রিম বৃদ্ধিমত্তা বা এআই ব্যবহার করে বানানো এমন ভিডিও পোস্ট করেছেন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প। এ নিয়ে শোরগোল চলছে রাজনৈতিক অঙ্গনে। এ খবর দিয়ে অনলাইন এনডিটিভি বলছে, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সোমবার সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামাকে লক্ষ্য করে আক্রমণ আরও জোরদার করেছেন। তিনি ট্রুথ সোশালে এআই-সৃষ্ট ওই ভিডিও পোস্ট করেছেন। তাতে দেখা যাচ্ছে- এফবিআই ওবামাকে ওভাল অফিসে গ্রেফতার করছে। ভিডিওটির শুরুতে ওবামার একটি বক্তব্য শোনা যায়। তিনি বলছেন, ‘বিশেষত প্রেসিডেন্ট আইনের ঊর্ধ্বে।’ এরপর ভিডিওতে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন রাজনীতিবিদদের কণ্ঠে শোনা যায়- ‘আইনের ঊর্ধ্বে কেউ নয়।’ কৃত্রিমভাবে তৈরি দৃশ্যে দেখা যায়, এফবিআই এজেন্টরা সাবেক প্রেসিডেন্ট ওবামাকে হ্যান্ডকাফ পরিয়ে গ্রেফতার করছে। একই সময়ে প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালনরত ট্রাম্প পেছনে বসে হাসছেন। ভিডিওর শেষে দেখা যায়, ওবামা কারাগারের ভেতরে কমলা রঙের বন্দির পোশাক পরে দাঁড়িয়ে আছেন। ট্রাম্প ভিডিওটি কাল্পনিক বলে কোনো সতর্কীকরণ দেননি, যা সমালোচকদের তীব্র প্রতিক্রিয়ার জন্ম দিয়েছে। সমালোচকরা একে ‘চরম দায়িত্বজ্ঞানহীন আচরণ’ বলে আখ্যা দিয়েছেন।
ঘটনাটি এমন এক সময়ে ঘটল যখন কয়েক সপ্তাহ আগে ওবামার বিরুদ্ধে ট্রাম্প ‘উচ্চপর্যায়ের নির্বাচনী জালিয়াতি’র অভিযোগ তোলেন। এর আগের সপ্তাহে মার্কিন জাতীয় গোয়েন্দা পরিচালক তুলসি গ্যাবার্ড দাবি করেন, তার হাতে চমকপ্রদ ও অপ্রতিরোধ্য প্রমাণ আছে যে, ওবামা প্রশাসনের সাবেক কর্মকর্তারা ২০১৬ সালের নির্বাচনের পর ট্রাম্প-রাশিয়া যোগসাজশ তত্ত্ব সাজিয়েছিলেন। যাতে ট্রাম্পের প্রেসিডেন্সি ঠেকানো যায়। তিনি সাবেক ওবামা প্রশাসনের বিরুদ্ধে বিচার প্রক্রিয়ার আহ্বান জানান। গ্যাবার্ড এক্সে লিখেছেন, আমেরিকানরা অবশেষে সত্য জানবে- ২০১৬ সালে ওবামা প্রশাসনের সবচেয়ে ক্ষমতাশালী ব্যক্তিরা কীভাবে গোয়েন্দা তথ্যকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে কার্যত একটি বহু বছরের অভ্যুত্থানের পথ সুগম করেছিলেন, যা আমেরিকার জনগণের ইচ্ছাকে উপেক্ষা করেছে এবং আমাদের গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্রকে দুর্বল করেছে।
তবে ডিরেক্টর অব ন্যাশনাল ইন্টেলিজেন্সের দপ্তর একটি ১১৪ পৃষ্ঠার নথি প্রকাশ করেছে। তাতে বলা হয়েছে, ২০১৬ সালের নভেম্বর নির্বাচনের আগেই মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থাগুলো ধারাবাহিকভাবে মূল্যায়ন করেছিল যে, রাশিয়া সাইবার মাধ্যম ব্যবহার করে নির্বাচনে প্রভাব ফেলছে- এমন কোনো প্রমাণ নেই।
নথিতে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, ২০১৬ সালের ৮ ডিসেম্বর প্রেসিডেন্টের দৈনিক প্রতিবেদনের খসড়ায় স্পষ্টভাবে বলা হয়েছিল, রাশিয়া যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনী অবকাঠামোর বিরুদ্ধে সাইবার হামলা চালিয়ে সাম্প্রতিক মার্কিন নির্বাচনের ফলাফল প্রভাবিত করেনি।