Image description
স্ত্রী সারাহ নেতানিয়াহুর সঙ্গে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু, প্রধানমন্ত্রীর মুখপাত্র ওমর দোস্তরি (বক্সে) © সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকের উদ্দেশ্যে সোমবার ওয়াশিংটন সফরে যাচ্ছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। তবে এই সফরের একদিন আগেই তিনি তার মুখপাত্র ওমর দোস্তরিকে বরখাস্ত করেছেন, যা ঘিরে সৃষ্টি হয়েছে নানা জল্পনা-কল্পনা।প্রথমে বিষয়টি শনিবার (৫ জুলাই) গোপন সূত্রে জানানো হলেও পরে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর এক বিবৃতিতে দোস্তরির পদত্যাগের খবর নিশ্চিত করে। বিবৃতিতে বলা হয়, ওমর দোস্তরি স্বেচ্ছায় তার দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন এবং এখন নতুন পথে এগিয়ে যেতে চান।

তবে ইসরায়েলের জনপ্রিয় টিভি চ্যানেল ১৩ দাবি করেছে, দোস্তরিকে পদত্যাগে বাধ্য করার নেপথ্যে মূল ভূমিকা রেখেছেন নেতানিয়াহুর স্ত্রী সারাহ নেতানিয়াহু। সূত্র অনুযায়ী, তাদের মধ্যে কয়েকবার তীব্র বাকবিতণ্ডা হয়।

টাইমস অব ইসরায়েলের প্রকাশিত প্রতিবেদনে আরও জানানো হয়, প্রশাসনিক কাজে সারাহ নেতানিয়াহুর অতিরিক্ত হস্তক্ষেপ এবং তার ব্যবহারের কারণেই দোস্তরি পদত্যাগে বাধ্য হন। যদিও প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর এক বিবৃতিতে সারাহ নেতানিয়াহুর জড়িত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করেছে। দপ্তরের মতে, এই সিদ্ধান্ত যৌথভাবে নেতানিয়াহু, তার চিফ অব স্টাফ এবং দোস্তরি নিয়েছেন।

নতুন মুখপাত্র হিসেবে যিনি দায়িত্ব নিতে পারেন, সেই জিভ আগমনকে ঘিরেও নানা আলোচনা চলছে। জানা গেছে, তিনি সারাহ নেতানিয়াহুর ঘনিষ্ঠ এবং চিফ অব স্টাফ চাচি ব্রেভারম্যানের ঘনিষ্ঠ সহযোগীও বটে।

ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম ইয়েনেতের ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র জানিয়েছে, নেতানিয়াহু মনে করেন দোস্তরি মুখপাত্র হিসেবে যথেষ্ট যোগ্য নন এবং তার পেশাগত অভিজ্ঞতা সীমিত। এমনকি তাকে আগেই জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল যে তিনি ওয়াশিংটন সফরে যাচ্ছেন না।

এছাড়া অতীতেও দোস্তরির বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ উঠেছে। ফেব্রুয়ারিতে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে জানা যায়, নেতানিয়াহু তাকে কয়েকবার তিরস্কার করেন। গত অক্টোবর মাসে ইরানে ইসরায়েলি হামলার পর সেনা সদর দপ্তরে প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতির ছবি গোপনীয়তা ভেঙে প্রকাশ করায় আন্তর্জাতিকভাবে সমালোচিত হন দোস্তরি।

তবে সব জল্পনার মাঝেও প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর এক বিবৃতিতে দোস্তরির কাজের প্রশংসা করেছে। বলা হয়েছে, ইসরায়েলের ইতিহাসের এক সংকটপূর্ণ সময়ে তিনি দায়িত্বশীলতা ও পেশাদারিত্বের সঙ্গে কাজ করেছেন।

নিজের বিদায়ী বিবৃতিতে দোস্তরি বলেন, আমি খুব কাছ থেকে দেখেছি কীভাবে প্রধানমন্ত্রী কঠিন সময়ে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেন। আমি বিশ্বাস করি, তিনি ইসরায়েলকে একটি নিরাপদ ও উন্নত ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাবেন।

প্রসঙ্গত, ওমর দোস্তরি আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ে ডক্টরেটধারী এবং মুখপাত্র হওয়ার আগে দুটি ডানপন্থি থিঙ্কট্যাংকে গবেষক হিসেবে কাজ করেছেন। তিনি নিয়মিতভাবে ইসরায়েলি গণমাধ্যমে মতামত লেখেন।