
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেছেন, সংস্কার না হওয়া পর্যন্ত আমরা ঘরে ফেরার জন্য আন্দোলন করি নাই। সংস্কার ছাড়া, বিচার ছাড়া যদি পট পরিবর্তনের কোনো চেষ্টা করা হয়। আমাদের বুকের ওপর দিয়ে গুলি চালিয়ে যেতে হবে। আমরা নির্বাচন চাই, অবশ্যই চাই। তবে সেটা সংস্কার ও জুলাই ঘোষণাপত্রসহ।
দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রার ষষ্ঠ দিনে রোববার (৬ জুলাই) সন্ধ্যায় রাজশাহী নগরীর সাহেববাজার জিরোপয়েন্টে পথসভায় তিনি এসব কথা বলেন।
হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, যারা ছাত্র, আপনারা যারা পরতর্তী সময়ে এসি হবেন, এসপি হবেন, ডিসি হবেন। আপনারা কি কোনো রাজনৈতিক দলের দালালি করতে চান? আপনারা কি আর কোনো স্বৈরাচারের পাহারাদার হতে চান? গণঅভ্যুত্থানে যারা দাঁড়ি পাকাওয়ালা মানুষ কয়জন রক্ত দিয়েছে। ছাত্র-তরুণ তারা কয়জন রক্ত দিয়েছে। যারা সংস্কার কার্যক্রম বন্ধ করতে চান- আপনাদের তরুণদের সাথে বসতে হবে। তাদের জিজ্ঞাস করতে হবে, তারা আর তাঁবেদারি করতে চায় কি না। এই তরুণ সমাজ আর দালালি করতে চায় না। এই তরুণ সমাজ আর তাঁবেদার হতে চায় না। এই তরুণ সমাজ আর স্বৈরাচার হতে চায় না।
সংস্কার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, যারা সংস্কারের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন। তারা জেনে রাখুন আপনারা তরুণ সমাজের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন। দাঁড়িপাকা মুরুব্বিরা ফেল করেছে, বাবারা ফেল করেছে। তখন সন্তানেরা রাস্তায় নেমে এসেছে। বাবাদের কাঁধ পেতে দিয়েছে সন্তানেরা। যে আমি যাচ্ছি আমার কাঁধে হাত দিয়ে দাঁড়াও। কাকে ভয় দেখান। আমাদের হারানোর কিছুই নাই। আমাদের ব্যাংক নাই। আমাদের লুটপাটের ব্যাংক নাই যেটি আমরা হারাব। আমাদের শুধু আছে মানুষের ভালোবাসা। সেটার জন্য আমরা আবারও রাস্তায় এসে জীবন দেব।
তিনি আরও বলেন, ডিসি, এসপিদের বলছি- আপনারা যে ভালো ব্যবহার করছেন, আমরা জানি আপনারা চিপায় পড়ে আমাদের সাথে ভালো ব্যবহার করছেন। যদি হাসিনার পতন না হতো তখন এই ডিসি, এসপিরাই গণভবনে প্রমোশনের জন্য লাইন ধরত। আমরা সাংবাদিকদের দেখছি। আমরা তাদের ওপর নজর রাখছি। এই সাংবাদিকরাই জুলাই অভ্যুত্থানে আমাদের সন্ত্রাসী আখ্যা দেওয়ার জন্য শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে পুরস্কার পেত।
বাংলার আকাশে দুর্যোগের ঘনঘটা দেখা দিচ্ছে বলে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে এনসিপি নেতা বলেন, আমরা বেঁচে থাকতে আর বাসা থেকে কাউকে উঠিয়ে নিয়ে গুম হতে দেওয়া যাবে না। কোনো মায়ের বুক আর খালি হবে না। কোনো দেশপ্রেমিক সাংবাদিককে বিদেশে থাকতে হবে না।
পথসভায় এর আগে বক্তব্য দেন এনসিপির সিনিয়র যুগ্ম সদস্য সচিব ডা. তাসনিম জারা। তিনি বলেন, স্বাধীনতা এনেছি, সংস্কারও আনব। যে সংস্কারের কথা আপনাদের সন্তানরা দেওয়ালে লিখেছে। সেই সংস্কার আমরা এনেই ছাড়ব। সংস্কারের পথে যারা বাধা দেবে, দেশের মানুষ তাদের মনে রাখবে। আপনাদের সন্তানদের যারা গত বছর জুলাই-আগস্টে খুনের নির্দেশ দিয়েছে তাদের বিচার এই দেশের মাটিতেই হবে। আমরা আর ওই বাংলাদেশে ফেরত যাব না। যেখানে রাষ্ট্রের পুলিশ বাহিনী, রাষ্ট্রের নিরাপত্তা বাহিনী নিজেই নাগরিকদের খুন করে, গুম করে। এটা কোনো রাষ্ট্র হতে পারে না।
তিনি আরও বলেন, যে সংবিধান আমাদের অধিকার সুরক্ষিত কারতে পারে না। যে সংবিধান সব জাতিসত্তার অধিকার সুরক্ষিত করতে পারে না। সেই সংবিধানের আমাদের প্রয়োজন নাই। বাংলাদেশ হবে সব নাগরিকের। বাংলাদেশ হবে সব বাংলাদেশিদের জন্য। সরকারি অফিসে গিয়ে কেনো ঘুষ দিয়ে কাজ করাতে হবে। সরকারি অফিসে বাংলাদেশের নাগরিক তার নাগরিক সুযোগ সুবিধা পাবে।