Image description

মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশি শ্রমিকদের নিয়ে গঠিত ইসলামিক স্টেট (আইএস)-এর একটি নেটওয়ার্ক ভেঙে দেয়ার দাবি জানিয়েছে দেশটির পুলিশ। গত তিন মাসে দেশটির বিভিন্ন অঞ্চলে ধারাবাহিক অভিযানে ৩৬ বাংলাদেশি শ্রমিককে আটক করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন মালয়েশিয়ার পুলিশ মহাপরিদর্শক মোহাম্মদ খালিদ ইসমাইল। যাদের মধ্যে অনেকে কারখানা, নির্মাণ ও সেবাখাতে কর্মরত ছিলেন। বিবিসি বাংলা

 

শুক্রবার (৪ জুলাই) এক সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ প্রধান জানান, আটককৃতরা সিরিয়া ও বাংলাদেশে আইএসের কার্যক্রমে অর্থায়ন করতেন। ‘স্পেশাল ব্রাঞ্চ কাউন্টার টেররিজম ডিভিশন’ এর অনুসন্ধানে এই নেটওয়ার্কের হদিস মেলে।

মালয়েশিয়ার পুলিশের তথ্যমতে, ‘গেরাকান মিলিটান র‍্যাডিক্যাল বাংলাদেশ’ (জিএমআরবি) নামে একটি সংগঠন হোয়াটসঅ্যাপ ও টেলিগ্রামে তৎপর ছিল। এতে সদস্য সংখ্যা ছিল আনুমানিক ১০০ থেকে ১৫০ জন। প্রত্যেক সদস্যকে বছরে ৫০০ মালয়েশিয়ান রিঙ্গিত (প্রায় ১৪ হাজার টাকা) চাঁদা দিতে হতো। তবে চাঁদার পরিমাণ নির্ভর করত সদস্যদের ইচ্ছার ওপর।

এদিকে বার্তা সংস্থা রয়টার্স বলছে, এই নেটওয়ার্কটি নতুন সদস্য সংগ্রহের জন্য প্রধানত বাংলাদেশি শ্রমিকদের টার্গেট করত। তারা সোশ্যাল মিডিয়া এবং অনলাইন মেসেজিং প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে প্রলুব্ধ করত। অর্থ স্থানান্তরের ক্ষেত্রে তারা আন্তর্জাতিক ফান্ড ট্রান্সফার সার্ভিস এবং ই-ওয়ালেট প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করত।

তবে কী পরিমাণ অর্থ তারা পাঠিয়েছে, সে বিষয়ে বিস্তারিত জানাতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন পুলিশ মহাপরিদর্শক।

প্রতিবেশী কোনো দেশ বা আর অন্য কোথাও আইএস গোষ্ঠীর সঙ্গে তারা যোগাযোগ বজায় রাখছে কি না, প্রশ্নের জবাবে মালয়েশিয়ার পুলিশ মহাপরিদর্শক মোহাম্মদ খালিদ ইসমাইল বলেন, বিষয়টি এখনো তদন্তাধীন।

মালয়েশিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাইফুদ্দিন নাসুতিওন ইসমাইলের উদ্ধৃতি দিয়ে বলা হয়েছে, আটককৃতদের মধ্যে পাঁচজনের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদে জড়িত থাকার অভিযোগে মামলা করা হয়েছে। আরও ১৫ জনকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানোর জন্য ইমিগ্রেশন ডিপার্টমেন্টের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। বাকি ১৬ জনের বিষয়ে তদন্ত অব্যাহত রয়েছে এবং তারা পুলিশ হেফাজতে রয়েছেন।

এদিকে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন এক প্রতিক্রিয়ায় জানান, ‘সন্ত্রাসবাদী সন্দেহে’ আটক ৩৬ জন বাংলাদেশি সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মালয়েশিয়া সরকারের কাছে তথ্য চাইবে।

তিনি বলেন, ‘যদি তাদের মধ্যে কেউ সত্যিকারভাবে সন্ত্রাসবাদে জড়িত থাকে, তবে মালয়েশিয়ার আইনের আওতায় বিচার হবে। তবে যাদের ফেরত পাঠানো হবে, তাদের সম্পর্কেও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তদন্ত করবে।’

এদিকে এমন ঘটনায় ভবিষ্যতে মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশিদের ভিসা প্রক্রিয়ায় কোনো প্রভাব পড়তে পারে কিনা, এমন প্রশ্নের উত্তরে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘যে কোনো নেতিবাচক বিষয়ই ভিসা প্রক্রিয়ায় প্রভাব ফেলে। তাই আমাদের অবশ্যই সঠিক ও সময়োপযোগী পদক্ষেপ নিতে হবে, যেন প্রভাবটি কমিয়ে আনা যায়।’