
এ শতাব্দীর বিয়ে। সেই বিয়েতে যারা যোগ দিয়েছিলেন তাদের মোট সম্পদের পরিমাণ ৪৬১০০ কোটি ডলার। এ জন্য একে বলা হচ্ছে ৪৬১০০ কোটি বা ৪৬১ বিলিয়ন ডলারের বিয়ে। এতে যেসব অতিথিরা সমাগত হয়েছিল তাদের সম্মিলিত সম্পদের পরিমাণ বাংলাদেশ, দক্ষিণ আফ্রিকা ও ডেনমার্কের জিডিপির চেয়েও বেশি।এটা বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ ধনী বিলিয়নিয়ার জেফ বেজোস ও তার প্রণয়ী লরাঁ সানচেজের বিয়ে। এতে পরিবেশন করা হয় মিশেলিন-তারকাখচিত খাবার, ফোম পার্টি, আর তারার মেলা। অস্কার অনুষ্ঠানে যত তারকার উপস্থিতি থাকে, তার চেয়ে বেশি তারকার উপস্থিতি ছিল শুক্রবার জেফ বেজোস ও লরাঁ সানচেজের বিয়েতে।
এতে ছিল হলিউড, সিলিকন ভ্যালি আর রাজকীয়তার এক অনবদ্য সমন্বয়। এ খবর দিয়েছে অনলাইন ডেইলি মেইল।
ইতালির ভেনিসের সান জর্জিও মাজিওরে দ্বীপে ২০০ ভিআইপি অতিথির উপস্থিতিতে এই অভিজাত বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হয়। এক বর্গ কিলোমিটারের ছোট দ্বীপে অতিথিদের সম্মিলিত সম্পদের পরিমাণ ছিল ৪৬১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। যা দক্ষিণ আফ্রিকা (৩৮০ বিলিয়ন ডলার), বাংলাদেশ (৪৩৭ বিলিয়ন ডলার), এমনকি ডেনমার্কের (৪০৭ বিলিয়ন ডলার) মোট জিডিপিকেও ছাড়িয়ে গেছে। শুধু বেজোস ও সানচেজ জুটির সম্পদের পরিমাণ ২৬৩৮০ কোটি ডলার। যা নিউজিল্যান্ডের জিডিপির চেয়েও বেশি।
অনুষ্ঠানের ব্যয় ধরা হয় প্রায় দুই কোটি ডলার। এর মধ্যে প্রতিজনের জন্য খাবারের খরচ ছিল প্রায় এক হাজার ডলার।
বিয়েতে যেসব শীর্ষ ধনী উপস্থিত ছিলেন তাদের নাম ও সম্পদের পরিমাণ এমন- বিল গেটস (১১৭ বিলিয়ন ডলার), মিগুয়েল বেজোস (৩০ বিলিয়ন ডলার), ফ্রাঁসোয়া-অঁরি পিনো (১৮.৫ বিলিয়ন ডলার), বারি ডিলার (৪.২ বিলিয়ন ডলার), জোশ কুশনার (৩.৮ বিলিয়ন ডলার), অপরাহ উইনফ্রে (৩.১ বিলিয়ন ডলার), স্যাম অল্টম্যান (১.৭ বিলিয়ন ডলার), ডলচে ও গাব্বানা প্রত্যেকে (২.৪ বিলিয়ন ডলার), কিম কার্দাশিয়ান (১.৭ বিলিয়ন ডলার), জ্যারেড কুশনার, ক্রাউন প্রিন্স অব জর্ডান, টম ব্র্যাডি, লিওনার্দো ডিক্যাপ্রিও, সিন্ডি সুইনি, অরল্যান্ডো ব্লুম, খোলো ও কাইলি কার্দাশিয়ান এবং আরও অনেক সেলিব্রিটি মিলিয়ে সম্পদ দাঁড়ায় ৪৬১ বিলিয়ন ডলারে।
কারা কীভাবে অনুষ্ঠান মাতিয়ে তুললেন একবার সেদিকে দৃষ্টি দেয়া যাক।
অপরাহ উইনফ্রে ও গেইল কিং একসাথে উপস্থিত হন। নারীদের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে অরল্যান্ডো ব্লুম ছিলেন দারুণ ফর্মে। টম ব্র্যাডি ও ডিক্যাপ্রিও একসাথে ‘ল্যাডস আউটিং’ এ, হোটেল চিপরিয়ানিতে সাঁতার, টাকিলা ও চটপটে আড্ডায় মেতে উঠেছিলেন। সিন্ডি সুইনি ছিলেন সবচেয়ে আলোচিত অতিথি। ডলচে ও গাব্বানা তৈরি করেছেন লরাঁ সানচেজের রাজকীয় গাউন। এর লেইস, ফুলেল নকশা, লম্বা ট্রেন ছিল চোখধাঁধানো। ফ্রাঁসোয়া-অঁরি পিনো, কেরিং গ্রুপের সিইও, উপস্থিত ছিলেন মার্জিত কালো স্যুটে। ওপেনএআই-এর প্রতিষ্ঠাতা সাম অল্টম্যান দেখিয়েছেন প্রযুক্তির যুগের তরুণ সাফল্যের ছাপ। নেটফ্লিক্স-এর সিইও টেড সারান্ডসও ছিলেন অভিজাত তালিকায়। কিম ও খোলো বিয়ে শেষে দ্রুত জলযানে শহর ত্যাগ করেন। কাইলি ও কেন্দাল ছিলেন কিছুটা আড়ালে, তবে যথারীতি স্টাইলিশ। বিয়ের মাঝে খোলো কার্দাশিয়ানের ৪১তম জন্মদিনও উদযাপন করা হয় ভেনিসেই।
বিয়ের কারণে স্থানীয় বাসিন্দারা বিরক্তি প্রকাশ করেছেন। ইতালির ঐতিহ্যবাহী স্থানে এমন ধরণের ‘ভিআইপি আন্টিক্স’ অনেকের চোখে ধৃষ্টতাও বটে। তবে বিতর্ক যাই হোক, এই বিয়ে অর্থের জাঁকজমকের এক অনন্য দৃষ্টান্ত- যেখানে শুধু একজন অতিথির সম্পদ দিয়েই বিশ্বের বহু দরিদ্র দেশের বাজেট চালানো যেত।