Image description

পাকিস্তানের পারমাণবিক বোমা তৈরির পথ প্রতিরোধে ইসরায়েল ও ভারতের যে প্রচেষ্টা ছিল, তা সত্ত্বেও তারা ব্যর্থ হলো। ১৯৭০ ও ৮০-এর দশকে পাকিস্তানের বিজ্ঞানী আবদুল কাদির খান গোপনে এই শক্তিশালী অস্ত্র তৈরির কাজ শুরু করেন। নানা বাধা পেরিয়ে ১৯৯৮ সালে পাকিস্তান সফলভাবে পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষা চালায়। ইসরায়েল, ভারত ও যুক্তরাষ্ট্র শুরু থেকেই এই প্রকল্পকে বাধাগ্রস্ত করতে চেয়েছিল, এমনকি হামলার পরিকল্পনাও করেছিল, কিন্তু শেষ পর্যন্ত তা কার্যকর হয়নি।

১৯৭৪ সালে ভারতের পরমাণু পরীক্ষা ঘোষণার পর পাকিস্তানের তখনকার প্রধানমন্ত্রী জুলফিকার আলী ভুট্টো বলেছিলেন, "ঘাস খেয়ে হলেও আমরা বোমা বানাবো।" এ কথা শুনে কাদের খান নেদারল্যান্ডসের ইউরেনকো থেকে গোপনে পরমাণু প্রযুক্তির তথ্য নিয়ে পাকিস্তানে ফিরে আসেন। এরপর পাকিস্তান গোপনে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির পথে এগিয়ে যায়।

১৯৮০-এর দশকে ভারত ও ইসরায়েল পাকিস্তানের পারমাণবিক স্থাপনায় হামলার পরিকল্পনা করেছিল, কিন্তু নানা কারণে তা বাতিল হয়। পাকিস্তানের এই কর্মসূচিকে ‘ওসামা বিন লাদেনের মতো বিপজ্জনক’ হিসেবে মূল্যায়ন করতেন সিআইএ প্রধান, আর মোসাদের প্রধান নিজে কাদের খানকে হত্যার পরিকল্পনা বাতিল করায় অনুতপ্ত ছিলেন।

 

আব্দুল কাদির খান পাকিস্তানে জাতীয় বীরের মর্যাদা পেয়েছেন। তিনি শুধু পাকিস্তানকেই নয়, গোপনে ইরান, লিবিয়া ও উত্তর কোরিয়াকেও পারমাণবিক প্রযুক্তি সরবরাহ করেছিলেন। ১৯৮৩ সালে নেদারল্যান্ডসে তাঁর বিরুদ্ধে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগ ওঠে, যদিও পরে তা প্রত্যাহার করা হয়। ২০০৩ সালে লিবিয়ার মাধ্যমে তার আন্তর্জাতিক পারমাণবিক নেটওয়ার্ক ফাঁস হলে পশ্চিমা বিশ্ব চাপ সৃষ্টি করে, ফলে পাকিস্তান সরকার তাকে গৃহবন্দি করে।

 

১৯৯৮ সালে পাকিস্তান সফলভাবে পারমাণবিক অস্ত্রের পরীক্ষা চালায়, যা ভারত, ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের জন্য বড় নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়ায়। ভারতের ১৯৭৪ সালের পরমাণু পরীক্ষা থেকে উজ্জীবিত হয়ে পাকিস্তান নিজের নিরাপত্তার জন্য পারমাণবিক ক্ষমতা অর্জনের পথে এগিয়ে যায়। তথ্যসূত্র : মিডেল ইস্ট আই