Image description

ফ্রান্সের খাদ্য নিরাপত্তা সংস্থার প্রকাশিত এক  নতুন গবেষণায় দেখা গেছে - সোডা, ওয়াইন বা বিয়ারের মতো কাচের বোতলে বিক্রি হওয়া পানীয়তে প্লাস্টিকের বোতলের তুলনায় বেশি মাইক্রোপ্লাস্টিক কণা থাকতে পারে। মানুষের চুলের প্রস্থের চেয়েও কয়েকগুণ ছোট হয় মাইক্রোপ্লাস্টিক।   যা সময়ের সাথে সাথে  ছোট ছোট টুকরো হয়ে পরিবেশে মেশে।   মানুষ এবং অন্যান্য প্রজাতির দেহে প্রবেশ করে।  প্রায় সর্বত্রই এদের সনাক্ত করা গেছে।  মেঘের মধ্যে , সমুদ্রের গভীরতম অংশে , এমনকি  বিশ্বের সর্বোচ্চ পর্বতমালার কাছেও।  ক্রমবর্ধমান গবেষণায় সতর্ক করা হয়েছে যে, আমরা যে বাতাসে শ্বাস নিই এবং যে খাবার খাই তার মাধ্যমে এই কণাগুলো আমাদের শরীরে প্রবেশ করে স্ট্রোক, হরমোনের ব্যাঘাত এবং বিভিন্ন ধরণের ক্যান্সারের মতো গুরুতর স্বাস্থ্যগত সমস্যা সৃষ্টি করতে  পারে। বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন ,এই সম্ভাব্য বিষাক্ত কণাগুলোর  প্রাদুর্ভাব এবং কীভাবে মানুষ এগুলোর সংস্পর্শে আসে তা আরও ভালভাবে বুঝতে পরীক্ষা নিরীক্ষা চলছে ।  

পূর্ববর্তী গবেষণায় প্লাস্টিকের বোতলের একটি মূল উপাদানের সাথে ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বৃদ্ধির সরাসরি প্রমাণ পাওয়া গেছে। এখন, জার্নাল অফ ফুড কম্পোজিশন অ্যান্ড অ্যানালাইসিসে প্রকাশিত একটি নতুন গবেষণায় দেখা গেছে যে কাচের বোতলে বিক্রি হওয়া পানীয়তেও মাইক্রোপ্লাস্টিকের উপস্থিতি রয়েছে। ফরাসি খাদ্য নিরাপত্তা সংস্থা ANSES-এর গবেষকরা  কোমল পানীয়, লেমোনেড , চা এবং বিয়ারের কাচের বোতলে প্রতি লিটারে গড়ে প্রায় ১০০টি মাইক্রোপ্লাস্টিক কণা খুঁজে পেয়েছেন। বিজ্ঞানীরা বলছেন, প্লাস্টিকের বোতল বা ধাতব ক্যানে পাওয়া পরিমাণের  চেয়ে এটি পাঁচ থেকে ৫০ গুণ বেশি হতে পারে। গবেষণার অন্যতম লেখক ইসেলিন চাইব এএফপিকে বলেছেন - 'আমরা যা ভেবেছিলাম, ঠিক তার উলটো ফলাফল এসেছে।  কাচের বোতল থেকে সংগৃহীত নমুনা পরীক্ষায় দেখা গেল, প্লাস্টিকের মতো একই আকার ও রংয়ের পলিমার কম্পোজিশন বেরিয়েছে।'  গবেষণার তথ্য-পরিসংখ্যান খুঁটিয়ে দেখে জানা যাচ্ছে, বিয়ারের বোতলে সবচেয়ে বেশি মাইক্রোপ্লাস্টিকের কণা থাকে, প্রতি লিটারে অন্তত ৬০টি।  সোডা বা লেমোনেডের বোতলে থাকে লিটার প্রতি ৪০টি কণা।  সাড়ে ৪ লিটারের পানির  কাচ ও প্লাস্টিকের বোতলে মাইক্রোপ্লাস্টিক কণার অনুপাত ৪.৫:১.৬।  অর্থাৎ এখানেই স্পষ্ট, প্লাস্টিকের বোতলের চেয়ে কাচের বোতলে দূষণ সৃষ্টিকারী কণার পরিমাণ বেশি। 

সূত্র :  ইন্ডিপেন্ডেন্ট