
ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে চলমান সামরিক উত্তেজনার ফলে মধ্যপ্রাচ্যের নিরাপত্তা পরিস্থিতি ইতোমধ্যেই গুরুতর ঝুঁকির মুখে পড়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দ্রুত কূটনৈতিক উদ্যোগ না নিলে এ সংকট পুরো অঞ্চলের ভূরাজনৈতিক দৃশ্যপট পাল্টে দিতে পারে।
দুই চিরবৈরী রাষ্ট্রের বিমান ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পাল্টাপাল্টিতে গোটা অঞ্চল, শুধু ইরান-ইসরায়েল নয়, অন্যান্য দেশও সঙ্কটের মুখোমুখি। বিশ্লেষকদের আশঙ্কা, যুদ্ধ পারমাণবিক দুর্ঘটনা, ভূখণ্ডজুড়ে সংঘর্ষের বিস্তার কিংবা দীর্ঘমেয়াদি অর্থনৈতিক ও সামরিক টানাপড়েনের দিকে গড়াতে পারে, যার প্রভাব পড়বে সব অর্থনীতিতে।
অতীতে মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা থাকলেও ‘নিয়মিত সংঘর্ষের নিয়ম’ মোটামুটি মানা হতো। কিন্তু গত কয়েক মাসে সেটি ভেঙে গেছে। দুই পক্ষই সরাসরি আক্রমণে নেমেছে, কূটনৈতিক প্রচেষ্টা মুখ থুবড়ে পড়েছে। এর ফলে পূর্ণমাত্রার যুদ্ধের আশঙ্কা ক্রমেই প্রকট হচ্ছে, যার কোনো নিশ্চিত বিজয়ী নেই।
কূটনৈতিক সমাধান ছাড়া যুদ্ধ থামলেও সামগ্রিক উত্তেজনা প্রশমিত হবে না। দীর্ঘমেয়াদি শান্তির জন্য দরকার বিশ্বাসযোগ্য কূটনৈতিক কাঠামো। এর মাধ্যমেই দুই পক্ষকে আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিতের ঐতিহাসিক দায়িত্ব নিতে হবে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই সংঘাত ইরান ও ইসরায়েল উভয়ের জন্য কৌশলগত ক্ষতির কারণ হবে।
জাতিসংঘ সনদ ও আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘিত হওয়ার ফলে বৈশ্বিক নিরাপত্তা কাঠামোও দুর্বল হচ্ছে। যে বিশ্বে আইন মানা হয় না, সেখানে বিশৃঙ্খলতা ও অস্থিতিশীলতা বাড়ে।
বিশ্লেষকদের মতে, অবিলম্বে যুদ্ধ বন্ধ করে আলোচনার টেবিলে বসা জরুরি। এই অঞ্চল থেকে উত্তেজনা সরাতে নতুন ধারণা, নতুন কৌশল দরকার। আন্তর্জাতিক বৈধতার ভিত্তিতে শান্তি প্রতিষ্ঠার পথে বাধাগুলো দূর করা ছাড়া উপায় নেই।
বিশ্ব সম্প্রদায়ের উচিত দুই পক্ষকে বোঝানো— এ যুদ্ধ কারও জন্য লাভজনক নয়। যুদ্ধ বন্ধের মধ্য দিয়েই শান্তির পথ তৈরি হতে পারে, যা জাতিসংঘ সনদ অনুযায়ী আলোচনার সুযোগ এনে দিতে পারে। তবেই স্থিতিশীল, উন্নয়নমুখী ও শান্তিপূর্ণ মধ্যপ্রাচ্যের স্বপ্ন পূরণ সম্ভব হবে।
লেখক: আওয়াধ আল-ব্রেইকি, সিনিয়র রিসার্চার (আমেরিকান অ্যাফেয়ার্স), প্রধান, ট্রেন্ডস গ্লোবাল সেক্টর
সূত্র: গালফ নিউজ