
বাংলাদেশে নোবেলজয়ী রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের পূর্বপুরুষের বাসভবনে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে ভারতের ক্ষমতাসীন দল বিজেপি। দলটির মুখপাত্র এবং সংসদ সদস্য সম্বিত পাত্র বৃহস্পতিবার বলেন, "এই ঘটনা ছিল পরিকল্পিত এবং এর পেছনে জামায়াতে ইসলামী ও হেফাজতে ইসলামের লোকজন জড়িত ছিল।"
তিনি আরও বলেন, “বাংলাদেশে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের পূর্বপুরুষের বাড়ি—তাঁর কাচারিবাড়ি, যা তাঁর দাদার তৈরি—তাতে হামলা ও ভাঙচুর চালানো হয়েছে। এটি আমাদের সভ্যতা ও সংস্কৃতির ভিত্তিস্তম্ভের ওপর আঘাত। পাঁচদিন ধরে পরিকল্পনা করে এই হামলা চালানো হয়েছে, যেন একটি শক্তিশালী বার্তা বিশ্ববাসীকে দেওয়া যায়।”
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ১৯০৫ সালে রচনা করেছিলেন “আমার সোনার বাংলা”—যা আজ বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত। এই কারণে বিজেপি এই ঘটনার গুরুত্ব অনুধাবন করছে এবং একে অত্যন্ত সংবেদনশীলভাবে নিচ্ছে বলে জানান সম্বিত পাত্র।
তিনি বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এবং এর প্রধান ড. মুহাম্মদ ইউনুস-কে দায়ী করে বলেন, “আন্তর্জাতিক গুরুত্বসম্পন্ন এমন একটি ঐতিহাসিক স্মৃতিস্তম্ভ রক্ষা করা যায়নি—এটি অত্যন্ত দুঃখজনক ও দায়িত্বজ্ঞানহীন আচরণ। ইউনুস সরকারের আচরণ ঠিক নয়।”
বিজেপি নেতার দাবি, এ ঘটনায় আন্তর্জাতিক মহলকে কড়া নিন্দা জানাতে হবে এবং এই ধরণের সংস্কৃতিবিরোধী হামলার বিরুদ্ধে একজোট হতে হবে।
বুধবার বাংলাদেশের সিরাজগঞ্জ জেলার শাহজাদপুরে অবস্থিত রবীন্দ্র কাচারিবাড়িতে এই হামলার ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে একটি তিন সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
হামলার সূত্রপাত হয়েছিল ৮ জুন এক পর্যটকের সঙ্গে কাচারিবাড়ির প্রবেশ পথে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মচারীর মোটরসাইকেল পার্কিং ফি নিয়ে বাকবিতণ্ডা থেকে। পরে বিষয়টি উত্তেজনাকর রূপ নেয়, যা পরবর্তীতে সহিংসতায় গড়ায়।
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ভারতের রাজনৈতিক মহলে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে এবং ভারতের গণমাধ্যমে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ঐতিহ্য ও তাঁর প্রভাব নিয়ে নানা আলোচনাও শুরু হয়েছে।