Image description

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্যালিফোর্নিয়ার লস অ্যাঞ্জেলেস শহরে তার কঠোর অভিবাসন নীতির বিরুদ্ধে চলমান বিক্ষোভ দমন করতে যে সংখ্যক সেনা মোতায়েন করেছেন, তা ইরাক ও সিরিয়ায় নিযুক্ত মার্কিন সেনাসংখ্যার চেয়েও বেশি।

ট্রাম্প প্রশাসন শহরটিতে প্রায় ৪,০০০ ন্যাশনাল গার্ড সদস্য এবং ৭০০-এর বেশি সক্রিয় ডিউটিতে থাকা মেরিন মোতায়েন করেছে। মার্কিন গণমাধ্যম এবিসি নিউজের বরাতে জানা গেছে, বর্তমানে লস অ্যাঞ্জেলেসে মোট ৪,৮০০ সেনা মোতায়েন রয়েছে, যেখানে ইরাকে আছে ২,৫০০ এবং সিরিয়ায় ১,৫০০ জন।

পেন্টাগনের হিসাব অনুযায়ী, এই মোতায়েনের জন্য দুই মাসে করদাতাদের ব্যয় হবে ১৩৪ মিলিয়ন ডলার।

লস অ্যাঞ্জেলেসে বিক্ষোভের সূত্রপাত

৬ জুন মার্কিন ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট (আইসিই) কর্তৃক অবৈধ অভিবাসীদের ব্যাপকহারে আটক করার মাধ্যমে বিক্ষোভের সূচনা হয়। পরদিন সন্ধ্যা নাগাদ অন্তত ৪৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

এর জেরে রাস্তায় নামে স্থানীয় বাসিন্দারা। বিক্ষোভ ধীরে ধীরে রূপ নেয় দাঙ্গায়। এর পরিপ্রেক্ষিতে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প লস অ্যাঞ্জেলেসে সেনা মোতায়েনের নির্দেশ দেন।

তবে ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নর গ্যাভিন নিউসামের সঙ্গে কোনো ধরনের পরামর্শ না করেই এই পদক্ষেপ নেওয়ায় ট্রাম্প প্রশাসনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেছেন ডেমোক্র্যাট গভর্নর।

এক টেলিভিশন ভাষণে গভর্নর নিউসাম বলেন, গণতন্ত্র আমাদের চোখের সামনে আক্রান্ত হচ্ছে। ক্যালিফোর্নিয়া হয়তো প্রথম, কিন্তু এখানেই থামবে না।

অভিবাসন ইস্যুতে ট্রাম্পের অবস্থান

গত নির্বাচনে ট্রাম্প তার প্রচারে অবৈধ অভিবাসীদের “অবৈধ অনুপ্রবেশ” বলেই অভিহিত করেছিলেন এবং সেই কথার প্রতিফলন ঘটাচ্ছেন ক্ষমতায় এসেও। গভর্নরের আপত্তি সত্ত্বেও জাতীয় রক্ষী মোতায়েনের নির্দেশ দিয়ে ট্রাম্প অভিবাসন ইস্যুকে রাজনৈতিক পুঁজি হিসেবে ব্যবহার করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

এদিকে লস অ্যাঞ্জেলেসে সেনা সমর্থিত দমনপীড়নের মাঝেও বুধবার যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে অভিবাসনবিরোধী অভিযানের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ। ট্রাম্প গুরুতর শক্তি ব্যবহারের হুমকি দিয়েও আন্দোলন থামাতে পারেননি।

মধ্যপ্রাচ্য থেকে সেনা সরানোর ঘোষণা

দেশের ভেতরে সংকট চলাকালীন ট্রাম্প ঘোষণা দেন, তিনি মধ্যপ্রাচ্য থেকে মার্কিন সেনা সরিয়ে নিচ্ছেন। বুধবার এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, মধ্যপ্রাচ্য একটি বিপজ্জনক স্থান হয়ে উঠেছে।”

তিনি আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্র কখনোই ইরানকে পারমাণবিক অস্ত্র অর্জনের সুযোগ দেবে না।

এই ঘোষণার মধ্য দিয়ে স্পষ্ট যে, ট্রাম্প অভ্যন্তরীণ অস্থিরতার সময়ে বিদেশি অভিযান থেকে সেনা প্রত্যাহারের পাশাপাশি অভিবাসন প্রশ্নে ‘শক্ত অবস্থান’ নিয়ে দেশীয় রাজনীতিতে প্রভাব বিস্তারের কৌশল নিচ্ছেন।