Image description

কাশ্মীরের পেহেলগামে প্রাণঘাতী হামলার পর যুদ্ধবিরতি অব্যাহত থাকলেও ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যকার চরম উত্তেজনা এখনো প্রশমিত হয়নি। এই প্রেক্ষাপটে শান্তিপূর্ণ সমাধান ও সংলাপের ওপর গুরুত্ব দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। একই সঙ্গে দেশটি দুপক্ষের চলমান যুদ্ধবিরতিকেও সমর্থন জানিয়েছে।

আজ বুধবার (১১ জুন) পাকিস্তানের জিও টিভির এক প্রতিবেদন এ তথ্য জানিয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, গত ২২ এপ্রিল জম্মু ও কাশ্মীরের পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলায় অন্তত ২৬ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হন। ভারত সরকার এই ঘটনাকে ‘সন্ত্রাসবাদী হামলা’ বলে উল্লেখ করে এর পেছনে পাকিস্তানের হাত রয়েছে বলে অভিযোগ করে। তবে ইসলামাবাদ কর্তৃপক্ষ ভারতের এই অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে।

ওয়াশিংটনে মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত এক সাপ্তাহিক সংবাদ সম্মেলনে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ট্যামি ব্রুস বলেন, “প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যেকোনো সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে এমন পদক্ষেপ নিতে পারেন যার লক্ষ্য প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে চলে আসা দ্বন্দ্বের অবসান ঘটানো। এটি তাঁর জন্য অস্বাভাবিক কিছু নয়।”

ব্রুস আরও বলেন, “তিনি এমন একজন নেতা যিনি এমন সব আলোচনার দরজা খুলেছেন, যা এক সময় কল্পনারও বাইরে ছিল। এটা তাঁর কূটনৈতিক দক্ষতারই প্রতিফলন।”

তিনি জানান, গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্র সফররত পাকিস্তানি সংসদীয় প্রতিনিধি দলের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন মার্কিন রাজনৈতিক বিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি অ্যালিসন হুকার। এই প্রতিনিধি দল বর্তমানে লন্ডনে অবস্থান করছে এবং সফরের পরবর্তী গন্তব্য ব্রাসেলস।

প্রতিনিধি দলের নেতৃত্বে রয়েছেন পাকিস্তান পিপলস পার্টির (পিপিপি) চেয়ারম্যান ও সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারি। সফরের অংশ হিসেবে তিনি একাধিক উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে অংশ নিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ তাঁকেই দায়িত্ব দিয়েছেন আন্তর্জাতিক মহলের সামনে পাকিস্তানের অবস্থান তুলে ধরতে এবং ভারতের অভিযোগের যথাযথ জবাব দিতে।

এই প্রতিনিধি দলে আরও আছেন সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিনা রব্বানি খার, খুররম দস্তগীর, সিনেটর শেরি রেহমান, মুসাদ্দিক মালিক, ফয়সল সুবজওয়ারি ও বুশরা আনজুম বাট। এছাড়া উপস্থিত ছিলেন দুই অভিজ্ঞ কূটনীতিক জলিল আব্বাস জিলানি ও তেহমিনা জানজুয়া।

সংবাদ সম্মেলনে ট্যামি ব্রুস জানান, মার্কিন কর্মকর্তারা ওই বৈঠকে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক এবং সন্ত্রাসবিরোধী সহযোগিতা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন।

তিনি বলেন, “ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে বিদ্যমান যুদ্ধবিরতির প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন বৈঠকে পুনর্ব্যক্ত করা হয়েছে।”

এই মুহূর্তকে ‘গুরুত্বপূর্ণ’ আখ্যা দিয়ে ব্রুস বলেন, “দীর্ঘস্থায়ী এই বিরোধে বাস্তব অগ্রগতির একটি সুযোগ তৈরি হয়েছে।”

বক্তব্যের শেষ দিকে তিনি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প, ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রীর প্রতি শান্তি প্রচেষ্টায় তাদের ভূমিকার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।