Image description

যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অভিবাসন দমন নীতির প্রতিবাদে ছয় দিনের টানা বিক্ষোভের মুখে লস অ্যাঞ্জেলেস শহরের ডাউনটাউন এলাকায় কারফিউ জারি করেছেন মেয়র ক্যারেন বাস। মঙ্গলবার রাত ৮টা থেকে বুধবার সকাল ৬টা পর্যন্ত এই কারফিউ কার্যকর থাকবে বলে জানানো হয়েছে।

মেয়র বাস বলেন, “গতরাতে ২৩টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে লুটপাট হয়েছে। পুরো ডাউনটাউন জুড়ে দেয়ালে দেয়ালে গ্রাফিতি—এটি শুধু সম্পদ ধ্বংস নয়, একটি শহরের মর্যাদার ক্ষয়।”

তিনি বলেন, “আপনি যদি ডাউনটাউনে বসবাস বা কাজ না করেন, তবে ওই এলাকা এড়িয়ে চলুন। কারফিউ ভাঙলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কাউকে ছাড় দেবে না।”

কারফিউ কোথায় কার্যকর?
এই কারফিউ শহরের ১ বর্গমাইল (২.৬ বর্গকিমি) এলাকা জুড়ে কার্যকর হবে। যদিও পুরো লস অ্যাঞ্জেলেস শহর ১৩০০ বর্গকিমি বিস্তৃত, কিন্তু বিক্ষোভ ও সহিংসতা কেন্দ্রীভূত হয়েছে এই একটি এলাকায়।

কী নিয়ে বিক্ষোভ?
বিক্ষোভকারীরা ট্রাম্প প্রশাসনের ‘ইমিগ্রেশন ক্র্যাকডাউন’ এবং অভিবাসীদের বিরুদ্ধে সামরিক বাহিনী ব্যবহারের প্রতিবাদ জানাচ্ছেন। অনেকেই বলছেন, যাদের বিরুদ্ধে অভিযান চলছে তারা ‘সহিংস অপরাধী’ নয় বরং সাধারণ শ্রমজীবী মানুষ—রাঁধুনি, দর্জি, গৃহকর্মী, দিনমজুর—যারা যুক্তরাষ্ট্রে ভালো জীবনের আশায় এসেছেন।

ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নরের প্রতিক্রিয়া
ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নর গ্যাভিন নিউজম ট্রাম্পের সিদ্ধান্তকে ‘ক্ষমতার নগ্ন অপব্যবহার’ বলে আখ্যা দিয়ে বলেন, “প্রেসিডেন্ট মূলত অভিবাসীদের নয়, গোটা জনগণকেই আতঙ্কিত করছেন।”

নিউজম আরও বলেন, “যদি কাউকে শুধু গায়ের রঙ বা সন্দেহের ভিত্তিতে রাস্তা থেকে তুলে নেওয়া যায়, তবে আসলে কেউই নিরাপদ নয়।"

তিনি ট্রাম্পের সেনা মোতায়েনের বিরুদ্ধে আদালতের আশ্রয় নিয়েছেন বলেও জানান।

জনগণের বক্তব্য ও প্রতিবাদ
আল জাজিরার প্রতিবেদক তেরেসা বো জানিয়েছেন, “আমরা যাদের সঙ্গে কথা বলেছি, তারা বলছেন তারা কোনো অপরাধী নন, বরং তারা পরিশ্রমী মানুষ যারা ভালো জীবনের আশায় এই দেশে এসেছেন।”
তারা শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের উপর জোর দিচ্ছেন, কারণ সহিংসতা ট্রাম্প প্রশাসনকে সামরিক হস্তক্ষেপের সুযোগ করে দেয়।

ট্রাম্পের বক্তব্য
নর্থ ক্যারোলিনার ফোর্ট ব্র্যাগ ঘাঁটিতে সেনাদের উদ্দেশে বক্তব্যে ট্রাম্প বলেন, “আমাদের পূর্বপুরুষরা দেশের জন্য রক্ত দিয়েছেন, এটা দেখার জন্য নয় যে ক্যালিফোর্নিয়ার মতো জায়গা ‘তৃতীয় বিশ্বের বিশৃঙ্খল দেশে’ পরিণত হবে।”

তিনি আরও বলেন, “কম্যান্ডার ইন চিফ হিসেবে আমি তা হতে দেব না, এবং কখনোই তা হতে দেব না।”

তথ্যসূত্র: আল জাজিরা, এপি