Image description
আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত

আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) চার বিচারকের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র।  ইসরায়েলের বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে গ্রেপ্তারে পরোয়ানা এবং আফগানিস্তানে যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে যুদ্ধপরাধের অভিযোগ অনুসন্ধানের পাল্টায় এ পদক্ষেপ নিয়েছে ডনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন।

নিষেধাজ্ঞার আওতায় থাকা আইসিসির চার বিচারকই নারী। তারা হলেন: উগান্ডার সোলোমি বালুঙ্গি বোসা, পেরুর লুজ ডেল কারমেন ইবানেজ কারানজা, বেনিনের রেইন অ্যাডিলেড সোফি আলাপিনি গানসো এবং স্লোভেনিয়ার বেটি হোলার। এই চারজন বিচারক আইসিসির বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মামলায় যুক্ত ছিলেন, যার মধ্যে রয়েছে আফগানিস্তানে যুক্তরাষ্ট্রের সম্ভাব্য যুদ্ধাপরাধের তদন্তের অনুমোদন।

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও এক বিবৃতিতে বলেন, এই বিচারকরা যুক্তরাষ্ট্র এবং তার মিত্রদের বিরুদ্ধে আইসিসির ‘অবৈধ ও ভিত্তিহীন’ পদক্ষেপে সক্রিয় ভূমিকা রেখেছেন। তার অভিযোগ, আইসিসির অভ্যন্তরে রাজনৈতিক প্রভাব প্রবেশ করেছে এবং তারা মিথ্যা অভিযোগের ভিত্তিতে মার্কিন নাগরিক ও মিত্রদের বিরুদ্ধে মামলা চালাচ্ছে। তিনি বলেন, এই ধরনের পদক্ষেপ যুক্তরাষ্ট্র, ইসরায়েলসহ অন্যান্য মিত্র দেশের সার্বভৌমত্ব ও জাতীয় নিরাপত্তাকে লঙ্ঘন করছে।

আইসিসি এই নিষেধাজ্ঞাকে আন্তর্জাতিক বিচারব্যবস্থার স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ হিসেবে আখ্যায়িত করে এর তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। আদালত জানিয়েছে, এটি তাদের বিচারিক দায়িত্ব পালনে বাধা সৃষ্টির সামিল।

বিচারক বোসা ও ইবানেজ কারানজা ২০১৮ সাল থেকে আইসিসির বেঞ্চে দায়িত্ব পালন করছেন। ২০২০ সালে তারা এমন একটি রায় দেন, যার মধ্য দিয়ে আফগানিস্তানে যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ আনুষ্ঠানিকভাবে গ্রহণ করা হয়। তবে এরপর ২০২১ সাল থেকে আইসিসি ওই তদন্তে আর বিশেষ অগ্রাধিকার দেয়নি এবং তালেবান ও আফগান সরকারের বিরুদ্ধে অপরাধের অভিযোগের দিকে বেশি মনোযোগ দেয়।

২০২৪ সালের নভেম্বরে আইসিসির বিচারকরা ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু, সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়াভ গ্যালান্ট এবং হামাস নেতা ইব্রাহিম আল-মাসরির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। গাজায় চলমান যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে মানবতাবিরোধী অপরাধ ও যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে এসব পরোয়ানা জারি করা হয়। এ পদক্ষেপ আইসিসির প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের নেতিবাচক মনোভাবকে আরও তীব্র করে তোলে।

উল্লেখ্য, এর আগেও ২০২০ সালে ট্রাম্প প্রশাসন আইসিসির তৎকালীন প্রধান প্রসিকিউটর ফাতু বেনসুদা এবং তার এক সহযোগীর ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল। সব মিলিয়ে, আইসিসির সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক ক্রমাগত বৈরিতার দিকে যাচ্ছে।