Image description

যুদ্ধবিধ্বস্ত ও অনাহারক্লিষ্ট গাজা উপত্যকায় গত কয়েকদিনে স্বল্প পরিমাণে কিছু ত্রাণ ঢুকলেও তার কিছুই পাননি বলে জানিয়েছে দক্ষিণ গাজার এক বাসিন্দা।

নিরাপত্তার কারণে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই ফিলিস্তিনি হোয়াটসঅ্যাপে বিবিসির সংবাদদাতাকে বলেছেন, গত ক’দিন ধরে কিছু ত্রাণ ঢুকলেও তিনি কিছুই পাননি।

হোয়াটসঅ্যাপে তিনি লেখেন, ‘আমি আপনাকে কসম খেয়ে বলছি, এখনো আমাদের কাছে এক ফোঁটা পানীয় আসেনি। না কোনো খাবার, না আশ্রয়ের জন্য কোনো তাঁবু’।

অন্যদিকে উত্তর গাজার বাসিন্দা এসরাহ শাহিন হোয়াটসঅ্যাপে পরিস্থিতি বর্ণনা করে বলেন, ‘অবস্থা খুবই কঠিন। অনেক বিপদ, লাগাতার বোমাবর্ষণ হচ্ছে’।

এর আগে এসরাহ জানিয়েছিলেন, যুদ্ধবিরতির সময় তিনি গাজা শহরে ফিরে আসেন এবং এখানেই থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তিনি কখনো গাজা ছেড়ে যাবেন না।

কিন্তু এখন তিনি বলছেন— ‘এখানে আর থাকা সম্ভব নয়’।

২৩ বছর বয়সি এই ফিলিস্তিনি বলেন, ‘সম্ভবত আমরা আর বেশিদিন থাকতে পারব না। আমাদের সরে যেতেই হবে। কোনো উপায় নেই’।

ইসরাইলি আগ্রাসন শুরুর পর থেকে গাজার ভেতরে কী ঘটছে, তা জানার অন্যতম মাধ্যম হলো এসব হোয়াটসঅ্যাপ বার্তা। ২০২৩ সালের অক্টোবরে যুদ্ধ শুরুর পর থেকে ইসরাইল বিদেশি সাংবাদিকদের গাজায় ঢুকতে দিচ্ছে না। কেবল কিছু সংখ্যক সাংবাদিক ইসরাইলি সেনাবাহিনীর সঙ্গে থেকে নির্দিষ্ট এলাকার মধ্যে কাজ করার অনুমতি পাচ্ছেন।

এদিকে গাজায় অ্যাকশন ফর হিউম্যানিটি-এর প্রোগ্রাম কো-অর্ডিনেটর হানিয়া আলজামাল বিবিসিকে জানিয়েছেন, প্রায় ১০০ ত্রাণবাহী ট্রাক গাজায় প্রবেশ করলেও বাস্তবে ফিলিস্তিনিদের প্রতিদিন ৫০০ থেকে ৬০০ ট্রাক ত্রাণের প্রয়োজন।

একটানা ৮০ দিন ধরে অবরোধ চলার পর বুধবার থেকে যে অল্প কয়েকটি ট্রাক ঢুকছে, তা ‘মূলত কিছুই না’, যোগ করেন তিনি। 

এমনকি তার নিজের এলাকা দেইর আল-বালাহতে এখনো ‘আসলে কিছুই পৌঁছায়নি’ বলেও জানান হানিয়া আলজামাল।

তার ভাষায়, ট্রাকে আসা ময়দার বস্তাগুলো গাজার বেকারিগুলোতে যাওয়ার কথা। যাতে তারা রুটি বানিয়ে বিতরণ করতে পারেন। কিন্তু বাস্তবে এই বিতরণ কেন্দ্রগুলোতে একেবারে গাদাগাদি অবস্থা।

মানুষ এখন ‘বেঁচে থাকার জন্য লড়াই করতে করতে এখন বিশাল লাইন ধরছে’।

‘প্রায় ২৪ লাখ মানুষকে ৮০ দিন ধরে ক্ষুধার্ত রাখা হয়েছে’ উল্লেখ করে আলজামাল জানান, তার পরিবারসহ গাজার বেশিরভাগ পরিবার এখন দিনে মাত্র একবার খাবার খাচ্ছে। তবুও পুষ্টির ঘাটতি রয়েছে তাতে।