
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন গতকাল মঙ্গলবার সীমান্তবর্তী কুরস্ক অঞ্চল সফর করেছেন। ইউক্রেনীয় বাহিনীকে ওই অঞ্চল থেকে হটানোর পর এই প্রথমবার সেখানে গেলেন তিনি। বিষয়টি নিশ্চিত করেছে ক্রেমলিন। খবর আল-জাজিরার।
২০২৪ সালের আগস্টে ইউক্রেনীয় সেনারা কুরস্ক অঞ্চলটি দখলে নিয়েছিল। যা ছিল তিন বছরেরও বেশি সময় ধরে চলা যুদ্ধের অন্যতম সাহসী অভিযানের একটি। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর এই প্রথম কোনো বিদেশি বাহিনী রাশিয়ার ভূখণ্ড দখল করেছিল।
২০২৩ সালের শেষ দিক থেকে যুদ্ধক্ষেত্রে রাশিয়াই এগিয়ে ছিল। তবে কুরস্কই ছিল এর ব্যতিক্রম। ইউক্রেনের দাবি অনুযায়ী, হামলার চূড়ান্ত সময়ে তারা প্রায় ১,৪০০ বর্গকিলোমিটার (৫৪০ বর্গমাইল) এলাকা নিয়ন্ত্রণে নেয়।
রাশিয়া গত এপ্রিলের শেষ দিকে জানায়, তারা ইউক্রেনীয় সেনাদের কুরস্ক অঞ্চল থেকে সম্পূর্ণভাবে হটিয়ে দিয়েছে। এরপরই পুতিন সেখানে ‘কর্মসূচিভিত্তিক সফরে’ যান।
ক্রেমলিন জানিয়েছে, সফরের সময় পুতিন স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সঙ্গে বৈঠক করেন এবং কুরস্কের একটি পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র পরিদর্শন করেন। সফরের সময় তার সঙ্গে ছিলেন ক্রেমলিনের ফার্স্ট ডেপুটি চিফ অব স্টাফ সেরগেই কিরিয়েনকো এবং কুরস্ক অঞ্চলের ভারপ্রাপ্ত গভর্নর আলেকজান্ডার কিনশটেইন।
অন্যদিকে, ইউক্রেনের জাতীয় নিরাপত্তা বাহিনী জানিয়েছে, মঙ্গলবার রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় অন্তত ছয় ইউক্রেনীয় সেনা নিহত এবং আরও ১০ জন আহত হয়েছেন। বিষয়টি তদন্তাধীন রয়েছে বলে জানানো হয়েছে এবং সংশ্লিষ্ট সামরিক ইউনিটের কমান্ডারকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
ইতিমধ্যে ইউক্রেনের সুমি সীমান্ত অঞ্চলেও রুশ হামলার তীব্রতা বেড়েছে। রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের দাবি, তারা একটি ইউক্রেনীয় বিশেষ বাহিনীর প্রশিক্ষণ শিবির শনাক্ত করে এবং সেখানে ‘ইস্কান্দার’ ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে। তারা একটি ভিডিও ফুটেজ প্রকাশ করেছে যেখানে একটি বনাঞ্চলে হামলার দৃশ্য দেখা যায়—বড় বিস্ফোরণ এবং ঘন কালো ধোঁয়ার কুণ্ডলি উঠে আসতে দেখা গেছে।
এদিকে রাশিয়া জানিয়েছে, গত ১২ ঘণ্টায় ইউক্রেন ১৫৯টি ড্রোন হামলা চালিয়েছে, যেগুলো মূলত রাশিয়ার ইউক্রেন সীমান্তবর্তী অঞ্চল এবং মস্কোকে লক্ষ্য করে পরিচালিত হয়েছিল। রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানায়, সবকটি ড্রোন প্রতিহত করা হয়েছে।
অন্যদিকে ইউক্রেনের সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, তারা ড্রোন হামলার মাধ্যমে রাশিয়ার ওরিওল অঞ্চলের একটি সেমিকন্ডাক্টর যন্ত্রাংশ উৎপাদন কারখানায় আঘাত হেনেছে।