
নিউজিল্যান্ডে সরকারি সংস্থা থেকে ২০ লাখ মার্কিন ডলারের বেশি হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে অভিযুক্ত ভারতীয় বংশোদ্ভূত দম্পতি নেহা শর্মা ও অমানদীপ শর্মা এখন ভারতের চেন্নাইয়ে পলাতক। নিউজিল্যান্ড হেরাল্ডের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নিজেদের গোপন বিয়ের তথ্য চেপে গিয়ে এবং স্বার্থের সংঘাতে জড়িয়ে তারা দীর্ঘ দুই বছর ধরে এই জালিয়াতি চালান।
নেহা শর্মা ছিলেন নিউজিল্যান্ডের শিশু কল্যাণ মন্ত্রণালয় Oranga Tamariki-তে ম্যানেজার পদে। সেই সুযোগেই তিনি নিজের স্বামী অমানদীপ শর্মার মালিকানাধীন একটি কোম্পানি ‘Divine Connection’-কে মন্ত্রণালয়ের তালিকাভুক্ত ঠিকাদার হিসেবে ঢুকিয়ে দেন, যা ছিল একটি গুরুতর স্বার্থের সংঘাত।
অফিসে প্রথম সন্দেহ দেখা দিলে নেহা এক মেসেজে স্বামীকে লেখেন, ‘একটা শক্তিশালী প্ল্যান আছে আমাদের। আমি তোমার উদ্যোক্তা হওয়ায় পাশে আছি। ৩৫-এর আগেই অবসর উদযাপন করো! সবাই এমন সুযোগ পায় না।’
তদন্তে উঠে এসেছে, নেহা মন্ত্রণালয়ের ভেতরের তথ্য ব্যবহার করে তার স্বামীর কোম্পানিকে সুবিধা পাইয়ে দিতেন। দু’জনের চ্যাট থেকে প্রমাণ মিলেছে যে, অফিসে যখনই সন্দেহ তৈরি হতো, তখনই তারা একে অপরকে সতর্ক করতেন।
২০২৩ সালের মার্চে নিউ জিল্যান্ডের সিরিয়াস ফ্রড অফিস (SFO) দম্পতির সম্পত্তিতে হানা দেয়। তদন্তে উঠে আসে তারা Oranga Tamariki থেকে ২০ লাখ ডলারেরও বেশি অর্থ আত্মসাৎ করেছেন। তখনই তারা তাদের পদত্যাগপত্র জমা দেন।
চুপিচুপি চেন্নাই পাড়ি
তদন্ত শুরুর দুই সপ্তাহের মধ্যেই তারা সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্সের বিজনেস ক্লাসে একমুখো টিকিট কাটেন ভারতের চেন্নাইয়ের উদ্দেশ্যে। তাদের সঙ্গে ছিল প্রায় ৮০ কেজি লাগেজ। যাওয়ার আগে তারা বাড়ি, গাড়ি বিক্রির চেষ্টা চালান এবং নিউজিল্যান্ড থেকে প্রায় ৮ লাখ ডলার ভারতে নিজেদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে পাঠিয়ে দেন।
‘বেবি ব্রেইন’ অজুহাত, অনুতাপ নেই নেহার
নেহা শর্মাকে চলতি মাসের শুরুতে ক্রাইস্টচার্চ হাইকোর্ট তিন বছরের কারাদণ্ড দেয়। আদালতে তিনি দাবি করেন, সন্তান ধারণের কারণে তার ‘বেবি ব্রেই’ হয়েছিল, তাই ভুল করেছেন। তবে আদালতের পর্যবেক্ষণে বলা হয়েছে, তার মধ্যে কোনও অনুতাপ বা ক্ষতিপূরণের প্রস্তাব দেখা যায়নি।
অন্যদিকে অমানদীপ শর্মা ইতিমধ্যে দোষ স্বীকার করেছেন এবং তার সাজা ঘোষণা হবে জুন মাসে। তাদের বড় সন্তানকে ইতোমধ্যে অমানদীপের বোন ভারতে নিয়ে গেছেন।
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া