Image description

রাজস্থান পিপলস ইউনিয়ন ফর সিভিল লিবার্টিজ (পিইউসিএল) বৃহস্পতিবার রাজ্য থেকে ১৪৮ জন বাংলাভাষী মুসলিমকে জোরপূর্বক বহিষ্কারের নিন্দা জানিয়েছে এবং এ অভিযানকে অসাংবিধানিক ও আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন বলে অভিহিত করেছে।

এ গোষ্ঠীটি অভিযোগ করেছে যে, ব্যক্তিদের ভুলভাবে ‘বাংলাদেশি নাগরিক’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে এবং যথাযথ আইনি প্রক্রিয়া ছাড়া জোরপূর্বক বহিষ্কারের জন্য ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। পিইউসিএল জানিয়েছে যে, জম্মু ও কাশ্মীরের সা¤প্রতিক পহেলগাম হামলার পরিপ্রেক্ষিতে গণহারে অপসারণ করা হয়েছে এবং জাতীয় নিরাপত্তা ও গোয়েন্দা থেকে মনোযোগ সরাতে কর্তৃপক্ষ একটি দুর্বল স¤প্রদায়কে বলির পাঁঠা বানানোর অভিযোগ করেছে। পিইউসিএলের মতে, সিকার এবং কোটপুতলি জেলার ব্যক্তিদের রাজস্থান পুলিশ তুলে নিয়ে যায়, যোধপুরে সীমান্ত নিরাপত্তা বাহিনী (বিএসএফ) এর কাছে হস্তান্তর করে এবং বিমানযোগে পশ্চিমবঙ্গের আন্তর্জাতিক সীমান্তে নিয়ে যায় এবং ‘বেআইনিভাবে পুশব্যাক’ বলে বর্ণনা করেছে।

অধিকার গোষ্ঠীটি ১০মে আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মার একটি প্রকাশ্য বিবৃতি উদ্ধৃত করেছে, যিনি ৩০ থেকে ৪০ জন অবৈধ বাংলাদেশি অভিবাসীকে একইভাবে বহিষ্কারের কৃতিত্ব দাবি করেন। পিইউসিএল পদ্ধতির সমালোচনা করে ‘অসাংবিধানিক এবং অবৈধ পরিবর্তন’ বলে মন্তব্য করেছে যা ঐতিহ্যগতভাবে নির্বাসনের মামলায় অনুসরণ করা বিচারিক পদ্ধতিকে এড়িয়ে যায়।

পিইউসিএল রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী ভজন লাল শর্মার কাছে সরাসরি চ্যালেঞ্জ উত্থাপন করে জিজ্ঞাসা করে যে, তিনি এই ধরনের বিচারবহিভর্‚ত পদক্ষেপকে সমর্থন করেন। দলটি সতর্ক করে দিয়েছে যে, এই ধরনের অনুশীলন গ্রহণ করলে রাজ্য কর্তৃপক্ষ ভারতীয় সংবিধান এবং অ-নাগরিকদের অধিকার সম্পর্কে সুপ্রিম কোর্টের রায় লঙ্ঘন করতে পারে। ১৯৯৬ সালে অরুণাচল প্রদেশ রাজ্য বনাম ভারত ইউনিয়ন মামলায় সুপ্রিম কোর্টের রায়ের উদ্ধৃতি দিয়ে পিইউসিএল জোর দিয়ে বলেছে যে, নাগরিকত্ব নির্বিশেষে ভারতের সকল ব্যক্তির জীবন ও আইনের দৃষ্টিতে সমতার অধিকার নিশ্চিত করা হয়েছে। দলটি আন্তর্জাতিক আইনের অধীনে ভারতের বাধ্যবাধকতার কথাও উল্লেখ করেছে, যা আইনি আশ্রয় ছাড়া সম্মিলিতভাবে বহিষ্কার নিষিদ্ধ করে।

পিইউসিএল বলেছে, ‘সরকারকে অবশ্যই জবাব দিতে হবে কেন পহেলগাম হামলার পরে, নিরাপত্তার ত্রæটিগুলো তদন্ত করার পরিবর্তে, সংখ্যালঘু স¤প্রদায়কে বেআইনিভাবে লক্ষ্যবস্তু করে মনোযোগ অন্যদিকে সরিয়ে নিয়েছে’ তারা রাজস্থানের ছয়টি আটক কেন্দ্রে পদ্ধতিগত লঙ্ঘনের নথিভুক্ত করেছে এবং বেশ কয়েকজনকে ভুলভাবে আটকে রাখা ব্যক্তিকে মুক্তি দিতে সহায়তা করেছে।

জানুয়ারিতে, পিইউসিএল ৩৮৫ জন ভারতীয় নাগরিককে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে বহিষ্কারের নিন্দা জানিয়েছে এবং এটিকে মানবাধিকার লঙ্ঘন বলে অভিহিত করেছেন। দলটি বলেন যে, তারা বিদেশী নাগরিক এবং অভিবাসী কর্মীদের সাথে ভারতের আচরণের ক্ষেত্রে একই মান বজায় রেখেছে। পিইউসিএল বহিষ্কার বন্ধের দাবি জানিয়েছে এবং প্রতিটি আটক ব্যক্তির আইনি অধিকার সমুন্নত রাখার আহবান জানিয়েছে।

যার মধ্যে আইনি সহায়তা এবং ন্যায্য শুনানির সুযোগ রয়েছে। ‘রাষ্ট্রের সমস্ত পদক্ষেপ অবশ্যই সাংবিধানিক নিয়ম এবং আন্তর্জাতিক আইনি বাধ্যবাধকতার সাথে সঙ্গতিপূর্ণ হতে হবে’ দলটি উপসংহারে বলেছে। সূত্র : মাকত‚ব মিডিয়া।