Image description

ওরে বাপরে বাপ! কী গল্প!
অথচ গল্পটি ভুয়া!
দৈনিক আমার দেশ এর অনলাইনে এই যে গল্প লেখা হয়েছে সেটি পত্রিকাটি কোথায় পেয়েছে কোন সূত্র দেয়া নাই পুরো গল্পরিপোর্টটিতে!
আবার বলা হয়েছে, ''এই সাফল্যের পর পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নিজে তাকে ফোন করে অভিনন্দন জানিয়েছেন। দুঃসাহসী এই নারীকে ‘জাতীয় বীর’ হিসেবে খেতাব দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়।''


অথচ আয়েশা ফারুক ভারতের বিরুদ্ধে সাম্প্রদিত যুদ্ধে পাইলট হিসেবে অংশ নিয়েছেন এমন কোন খবর পাকিস্তানের বা বাইরের কোন পত্রিকায় প্রকাশিত হয়নি। তাকে ফোন করে প্রধামন্ত্রীর অভিনন্দন জানানোর খবরটি কোন পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যমে পেলাম না।


যেটা পেলাম, ডিফেন্স করপ নামে ভুইফুড় একটা ইংরেজি ওয়েবসাইটে (যেটা বাংলাদেশ বিষয়ে ভুয়া খবর আগে প্রচার করেছিল) ২০‌‌১৩ সালে ডিডব্লিউকে দেয়া তরুণ পাইলট আয়েশা ফারুকের একটা সাক্ষাতকারকে বিভ্রান্তিমূলকভাবে নতুন করে প্রকাশ করেছে। সেখানে আয়েশার রাফালে যুদ্ধবিমান ফেলে দেয়ার মনগড়া গল্প একটি জুড়ে দেয়া হয়েছে। আয়েশার ছবিটিও নেয়া হয়েছে ডিডব্লিউর ওই প্রতিবেদন থেকে।
আর সেই গল্প পড়ে সম্ভব কোন সূত্র উল্লেখ ছাড়াই আমার দেশ-এ আরো নতুন কিছু মনগড়া তথ্য যুক্ত করে গল্পকে নতুন মাত্রা দিয়ে প্রকাশ করা হয়েছে।
আমার দেশের গল্পের নাটকী শুরুর প্যারাগুলো এমন--


"ধোঁয়ায় ঢেকে গেছে আকাশ। রাডার সিগন্যালে জ্বলছে লালবাতি। পাকিস্তানের দিকে এগিয়ে আসছে ভারতের যুদ্ধবিমান রাফায়েল। মুহূর্তেই পাল্টে যায় পরিস্থিতি। পাকিস্তানের সামরিক ঘাঁটিগুলোয় বেজে ওঠে হাই-অ্যালার্ট।
আকাশে উত্তেজনার আগুন। আর মাটিতে শ্বাসরুদ্ধকর অপেক্ষা পুরো জাতির। এর মধ্যেই যুদ্ধবিমানের ককপিটে উঠে বসলেন এক নারী। ঠান্ডা মাথায় চোখ রাখেন স্ক্রিনে। নিখুঁত নিশানায় বেঁধে ফেলেন কমান্ডো লক অন টার্গেটকে। সেকেন্ডের ব্যবধানে পাকিস্তানের আকাশে থেমে যায় ভারতের আধিপত্য বিস্তারের স্বপ্ন। মাঝ আকাশে বিস্ফোরিত হয় রাফায়েল। তা আগুনের গোলায় পরিণত হয়। পাকিস্তানজুড়ে তখন আনন্দের ঢেউ।


কে বলে যুদ্ধ শুধু পুরুষের খেলা! ভারত-পাকিস্তান চলমান উত্তেজনার মধ্যেই সেই ধারণাকে পাল্টে দিয়েছেন পাকিস্তানের এই নারী যোদ্ধা! পাকিস্তানের সামরিক ইতিহাসে তিনিই প্রথম নারী যিনি ভারতের যুদ্ধবিমান গুঁড়িয়ে দিয়েছেন। এ ঘটনা যেমন সামরিক সাফল্য, তেমনি এক বৈপ্লবিক বার্তা, নারীরা শুধু ঘরেরই নয়, দেশেরও অহংকার হতে পারে।"

কদরুদ্দিন শিশির