Image description

ভারতের প্রতি মুসলিম শাসকদের ‘দয়া ও উদারতা’ স্মরণ করার আহ্বান জানিয়েছেন ওমানের গ্র্যান্ড মুফতি শেখ আহমেদ বিন হামাদ আল-খালিলি। গত শনিবার ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যকার যুদ্ধবিরতির বিষয়ে তিনি এ আহ্বান জানান।

মঙ্গলবার (১৩ মে) মিডল ইস্ট আইয়ের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ওমানের গ্র্যান্ড মুফতি শেখ আহমেদ বিন হামাদ আল-খালিলি ভারত সরকারকে মুসলিম শাসকদের অতীতের ‘দয়া ও উদারতা’ স্মরণ করার আহ্বান জানিয়েছেন। এ ছাড়া তিনি পাকিস্তানকে ‘আগ্রাসীদের বিরুদ্ধে বিজয়’ অর্জনের জন্য অভিনন্দন জানান।

সোমবার এক বিবৃতিতে মুফতি বলেন, আমরা পাকিস্তানকে তাদের আগ্রাসীদের বিরুদ্ধে বিজয়ের জন্য অভিনন্দন জানাই। আমরা আশা করি তারা তাদের নিপীড়িত মুসলিম ভাইদের পাশে, বিশেষ করে পবিত্র আল-আকসার ভূমিতে, দৃঢ়তা ও শক্তি নিয়ে দাঁড়াবে।

তিনি আরও বলেন, আমরা ভারত সরকারের প্রতি আহ্বান জানাই, তারা মুসলমানদের প্রতি শত্রুতা পরিহার করুক এবং স্মরণ করুক যে অতীতে তাদের মুসলিম শাসকরা ধর্ম নির্বিশেষে জনগণের প্রতি দয়া ও উদারতার সাথে আচরণ করেছিলেন।

ভারতীয় উপমহাদেশের অনেক অঞ্চল ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের আগে মুসলিম শাসকদের অধীনে ছিল। মুঘল সাম্রাজ্য ১৬ থেকে ১৮ শতকের মধ্যে উপমহাদেশের বেশিরভাগ অংশ শাসন করেছিল।

এর আগে শনিবার (১০ মে) বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা ৬টায় প্রথম যুদ্ধবিরতির বিষয়ে ঘোষণা করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ট্রাম্প তার ব্যক্তিগত মালিকানাধীন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম প্ল্যাটফর্ম ট্রুথ স্যোশালে শেয়ার করা এক পোস্টে জানান- যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় ভারত ও পাকিস্তান একটি পূর্ণ ও তাৎক্ষণিক যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে।

পোস্টে ট্রাম্প লেখেন, ‘মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় দীর্ঘ রাত ধরে আলোচনার পর, আমি আনন্দের সাথে ঘোষণা করছি যে, ভারত ও পাকিস্তান একটি পূর্ণ ও তাৎক্ষণিক যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে। সাধারণ বুদ্ধিমত্তা ও অসাধারণ বিচক্ষণতার পরিচয় দেওয়ার জন্য উভয় দেশকে আমি অভিনন্দন জানাই। এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে মনোযোগ দেওয়ার জন্য আপনাদের সবাইকে ধন্যবাদ!’

পরে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া এক বিবৃতিতে বলেন, আমি ঘোষণা করতে পেরে আনন্দিত যে, ভারত ও পাকিস্তান যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে এবং উভয় দেশ ‘নিরপেক্ষ একটি স্থান’-এ আলোচনা শুরু করতে সম্মত হয়েছে।

সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি পোস্টে রুবিও বলেছেন, গত ৪৮ ঘণ্টা ধরে তিনি এবং ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স ‘প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং শাহবাজ শরিফ, পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুব্রহ্মণ্যম জয়শঙ্কর, সেনাপ্রধান আসিম মুনির এবং জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল, অসীম মালিকসহ ঊর্ধ্বতন ভারতীয় ও পাকিস্তানি কর্মকর্তাদের সাথে’ আলোচনা করেছেন।

তিনি বলেন, ‘শান্তি প্রতিষ্ঠার পথ বেছে নেওয়ার ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী মোদি এবং শরিফের প্রজ্ঞা, বিচক্ষণতা এবং রাষ্ট্রনায়কত্বের জন্য আমরা তাদের প্রশংসা করি।’

এদিকে পাকিস্তানের পক্ষ থেকেও যুদ্ধবিরতির বিষয়ে নিশ্চিত করা হয়েছে। দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার ভারতের সাথে পাকিস্তানের যুদ্ধবিরতি নিশ্চিত করেছেন।

পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে বলেছেন, ‘পাকিস্তান ও ভারত তাৎক্ষণিকভাবে কার্যকরভাবে যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে। পাকিস্তান সর্বদা তার সার্বভৌমত্ব এবং আঞ্চলিক অখণ্ডতার সাথে আপস না করে এই অঞ্চলে শান্তি ও নিরাপত্তার জন্য প্রচেষ্টা চালিয়েছে!’