Image description
 

ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সাম্প্রতিক উত্তেজনা ভয়াবহ এবং বহুমাত্রিক এক সংঘর্ষে রূপ নেয়। মাত্র ৮৭ ঘণ্টার এই যুদ্ধে দুই দেশই বিপুল সামরিক, কৌশলগত এবং মানবিক ক্ষয়ক্ষতির মুখে পড়েছে। ভারত ৭ মে রাত ১টা ৫ মিনিটে আকস্মিকভাবে পাকিস্তানে হামলা শুরু করে, যার কোডনেম ছিল ‘অপারেশন সিঁদুর’। নয়াদিল্লির দাবি, ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলার প্রতিশোধ নিতেই তারা এই হামলা চালিয়েছে।

পাকিস্তানের মূল ভূখণ্ড ও আজাদ কাশ্মীরে চালানো এই অভিযানে অংশ নেয় অত্যাধুনিক রাফায়েল যুদ্ধবিমান, যেগুলো থেকে ছোড়া হয় স্টর্ম শ্যাডো মিসাইল এবং হ্যামার বোমা। ভারতের লক্ষ্য ছিল পাকিস্তানের অভ্যন্তরের ৯টি ‘সামরিক-সমর্থিত বেসামরিক’ অবকাঠামো, যার মধ্যে ছিল সন্দেহজনক ঘাঁটি, যোগাযোগ কেন্দ্র এবং সরবরাহ চেইনের অংশ।

একইসঙ্গে ভারত ড্রোন হামলা ও নজরদারির মাধ্যমে পাকিস্তানের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার প্রতিক্রিয়া যাচাই করার চেষ্টা করে।

 

ভারতের হামলার জবাবে পাকিস্তান খুব দ্রুত প্রতিরোধ গড়ে তোলে। আকাশপথে জে-১০সি যুদ্ধবিমান মোতায়েন করে এবং কোরাল ইলেকট্রনিক জ্যামিং সিস্টেম ব্যবহার করে ভারতের বিমান ও ড্রোনকে বাধা দেয়। পাকিস্তানের দাবি অনুযায়ী, তারা ৩টি রাফায়েল যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করে, এবং ১২টি ভারতীয় ড্রোন ধ্বংস করে ইলেকট্রনিক ও ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার সাহায্যে।

 

পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম দ্য নিউজ ইন্টারন্যাশনালের খবরে বলা হয়, যদিও সংঘর্ষ ছিল স্বল্পমেয়াদি, তবে এর অর্থনৈতিক অভিঘাত ছিল গভীর ও ব্যাপক। কারণ, এই যুদ্ধ শুধু আকাশে হয়নি। সব চেয়ে বড় ধাক্কা এসেছে অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে। মাত্র ৮৭ ঘণ্টা ২৫ মিনিটের এই সংঘাতে ভারতের অর্থনৈতিক ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়ায় প্রায় ৮৩ বিলিয়ন ডলার, যা পাকিস্তানের তুলনায় ২০ গুণেরও বেশি।

 

প্রতিবেদন মতে, উত্তর ভারতের আকাশসীমা বন্ধ থাকায় প্রতিদিন ৮ মিলিয়ন ডলার ক্ষতি হয়েছে বিমান চলাচলে। আইপিএল বন্ধ হওয়ায় আর্থিক ক্ষতি হয় ৫০ মিলিয়ন ডলার। সামরিক ব্যয়ে যোগ হয় আরও ১০০ মিলিয়ন ডলার এবং যুদ্ধবিমান হারিয়ে ক্ষতি হয় ৪০০ মিলিয়ন ডলার। লজিস্টিক ও বাণিজ্য খাতে ক্ষতির পরিমাণ ছাড়িয়েছে ২ বিলিয়ন ডলার।

অন্যদিকে পাকিস্তানের মোট ক্ষতির পরিমাণ আনুমানিক ৪ বিলিয়ন ডলার। করাচি শেয়ারবাজারে সূচক পড়ে গিয়ে ক্ষতি হয় ২.৫ বিলিয়ন ডলার। পাকিস্তান সুপার লিগ (পিএসএল) বন্ধ থাকায় ক্ষতি হয় আরও ১০ মিলিয়ন ডলার। আকাশসীমা বন্ধ থাকায় ক্ষতি হয়েছে ২০ মিলিয়ন ডলার, আর সামরিক খাতে প্রতিদিন ২৫ মিলিয়ন ডলার ব্যয়ের পাশাপাশি ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র ব্যয় হয় ৩০০ মিলিয়ন ডলার।

ঘণ্টায় ১ বিলিয়ন ডলার ক্ষতি : আধুনিক যুদ্ধের নতুন বাস্তবতা

এই সংঘর্ষ দেখিয়ে দিয়েছে, আধুনিক যুগে যুদ্ধ মানে শুধুই গোলাবারুদ, ট্যাংক বা ফাইটার জেট নয়— বরং যুদ্ধ মানেই অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার ওপর আঘাত, বিনিয়োগে ভাটা, শেয়ারবাজারে ধস, এবং মানসিক নিরাপত্তাহীনতা। প্রতিটি ঘণ্টায় যদি এক বিলিয়ন ডলারের বেশি ক্ষতি হয়, তা হলে বোঝা যায়—যুদ্ধের ব্যয় শুধু সামরিক নয়, বরং সমগ্র জাতিকে বহন করতে হয়।

বিশ্লেষকদের মতে, এই সংঘর্ষ একটি বড় বার্তা দিয়েছে— আধুনিক যুদ্ধের সাফল্য নির্ধারিত হয় শুধু সামরিক শক্তি দিয়ে নয়, বরং অর্থনৈতিক সক্ষমতা, প্রযুক্তি নিয়ন্ত্রণ এবং জনমনের ওপর প্রভাব দ্বারা। যুদ্ধকে প্রতিরোধ করার কৌশল, কূটনৈতিক সক্ষমতা ও সাইবার ও অর্থনৈতিক প্রতিরোধ ক্ষমতা এখন যে কোনো দেশের প্রকৃত শক্তি হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

ভারত-পাকিস্তানের এই সীমিত সময়ের সংঘর্ষ ভবিষ্যতের জন্য একটি ভয়ংকর বার্তা দিয়ে গেল। তা হলো- যুদ্ধ যত সংক্ষিপ্তই হোক না কেন, তার আর্থিক, কূটনৈতিক এবং সামাজিক অভিঘাত হতে পারে বহুগুণ বেশি। প্রতিরোধ, শান্তি ও পারস্পরিক সমঝোতাই হতে পারে এই অঞ্চলের স্থিতিশীলতার একমাত্র পথ।