
ভারতের ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পর পাকিস্তানের সামরিক, রাজনৈতিক ও স্বাস্থ্য খাতে সর্বোচ্চ প্রস্তুতির ঘোষণা এসেছে। প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ, স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোস্তফা কামাল এবং আইএসপিআরের মহাপরিচালক লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরীফ চৌধুরী একযোগে ভারতের বিরুদ্ধে কঠোর বার্তা দিয়েছেন। দেশের নিরাপত্তা ও সেবামূলক কাঠামোকে সম্পূর্ণ সচল রাখার নির্দেশনা দেন। প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ বলেন, জাতিসংঘ সনদের ৫১ নম্বর অনুচ্ছেদ অনুযায়ী আত্মরক্ষার অধিকার পাকিস্তানের রয়েছে। তিনি ভারতের হামলায় ৩১ নিরীহ বেসামরিক নাগরিকের শাহাদাত এবং ৫৭ জনের আহত হওয়ার তীব্র নিন্দা জানান। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও-কে জানান, পাকিস্তান নিজের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় সর্বোচ্চ মূল্য দিতে প্রস্তুত।
এদিকে, পাকিস্তানের সশস্ত্র বাহিনী জানিয়েছে, ভারত ছয়টি স্থানে- আহমদপুর ইস্ট, মুরিদকে, শিয়ালকোট, শাক্কারগড়, মুজাফফরাবাদ ও কোটলিতে বিনা উসকানিতে হামলা চালিয়েছে। একে ইসলামাবাদ ‘যুদ্ধ ঘোষণা করার মতো কাজ’ হিসেবে উল্লেখ করেছে। এর পাল্টা জবাবে পাকিস্তান পাঁচটি ভারতীয় যুদ্ধবিমান, সাতটি ড্রোন ভূপাতিত করেছে এবং সীমান্তে একাধিক সামরিক চৌকি ধ্বংস করেছে।
সাংবাদিক সম্মেলনে আইএসপিআর-এর ডিজি বলেন, ‘যদি ভারত ভবিষ্যতে কোনো দুঃসাহসিকতা দেখায়, পাকিস্তানের জবাব এতটাই শক্তিশালী ও সুস্পষ্ট হবে যে, সারা বিশ্ব তার প্রতিধ্বনি শুনবে- কোনো ব্যাখ্যার প্রয়োজন হবে না।’ তিনি ভারতের পক্ষ থেকে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলোকে পুরোপুরি মিথ্যা ও নাটকীয় বলে উড়িয়ে দেন। তিনি বলেন, ভারত বলছে পাকিস্তান ১৫টি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে। অথচ নিজের পাঁচটি যুদ্ধবিমানকে তারা রক্ষা করতে পারেনি। তাহলে এত প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার দাম কোথায়? তিনি জানান, একটি ভারতীয় প্রক্ষেপণ বস্তু পাকিস্তানের আকাশসীমায় ঢুকলে তা সফলভাবে গুলি করে ধ্বংস করা হয়েছে এবং এর ধ্বংসাবশেষ ডেঙ্গা এলাকায় পড়ে।
উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার বলেন, ভারত ইচ্ছাকৃতভাবে অমৃতসরে ক্ষেপণাস্ত্র ফেলে শিখ জনগণের মধ্যে পাকিস্তানবিরোধী মনোভাব উস্কে দিতে চায়। এটি হিন্দুত্ববাদী সরকারের গভীর ষড়যন্ত্র। তিনি বলেন, পাকিস্তান সব সময়ই নিরীহ মানুষের নিরাপত্তা এবং আঞ্চলিক স্থিতিশীলতাকে অগ্রাধিকার দিয়ে এসেছে, যা ভারতের বিভাজনমূলক নীতির সম্পূর্ণ বিপরীত।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী সৈয়দ মোস্তফা কামাল বলেন, স্বাস্থ্য খাতকে এখন সর্বোচ্চ সতর্কতায় রাখতে হবে। ড্র্যাপকে ওষুধ ও ভ্যাকসিন সরবরাহ অব্যাহত রাখতে হবে এবং ভারতনির্ভর ওষুধের বিকল্প ব্যবস্থা করতে হবে। তিনি জরুরি পরিস্থিতিতে হাসপাতালগুলোকে প্রস্তুত রাখতে বলেন। বর্তমান উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতিতে পাকিস্তান সামরিক ও অসামরিক উভয় খাতেই প্রতিক্রিয়াশীল এবং প্রতিরক্ষামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে, যা দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষা এবং জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে দৃঢ় অঙ্গীকারের বহিঃপ্রকাশ।