
চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভারতের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্কে চরম উত্তেজনার মধ্যে যেকোন সময় ছোড়া হতে পারে পাকিস্তানের ক্ষেপণাস্ত্র। করাচির উপকূলে দেশটির বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে সারফেস টু সারফেস মিসাইল (ক্ষেপণাস্ত্র) আজই পরীক্ষা চালানোর ঘোষণা দিয়েছেন পাকিস্তানের নৌ কর্মকর্তারা। এই পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপন বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) থেকে শুক্রবার (২৫ এপ্রিল) পর্যন্ত চলবে। কাশ্মীরের পেহেলগামে সশস্ত্র গোষ্ঠীর হামলায় ২৬ জন নিহতের ঘটনায় ভারতের মন্ত্রিসভার বৈঠকের সময় এমন ঘোষণা দিয়েছে ইসলামাবাদ। খবর দ্য হিন্দুর।
এদিকে, কাশ্মীরের পেহেলগামে সশস্ত্র হামলার জেরে উত্তপ্ত হয়ে ওঠেছে এই দুই দেশের সম্পর্ক। ভয়াবহ এ হামলায় জড়িত থাকার অভিযোগ তুলে পাকিস্তানিদের ভিসা বাতিলসহ বেশ কয়েকটি সিদ্ধান্ত নেয় ভারত। পাল্টা ব্যবস্থা হিসেবে ভারতের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সিদ্ধান্ত নিয়েছে পাকিস্তান।
সিদ্ধান্তের অংশ হিসেবে ভারতের সঙ্গে সিমলা চুক্তি বাতিল এবং ওয়াঘাহ সীমান্ত বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে ইসলামাবাদ। এছাড়া নিজেদের আকাশে ভারতীয় মালিকানাধীন অথবা ভারত পরিচালিত সব বিমান প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা ও ভারতের সঙ্গে সব ধরনের বাণিজ্য বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশটি। শেহবাজ শরিফের দেশ জানিয়েছে, পাকিস্তান হয়ে তৃতীয় কোনো দেশের পণ্যও ভারতে প্রবেশ অথবা বের হতে পারবে না।
এর আগে, চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী পাকিস্তানের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্কে চরম উত্তেজনার মাঝে ক্ষেপণাস্ত্রের সফল পরীক্ষা চালিয়ে ভারত। ভারতীয় নৌবাহিনীর রণতরী আইএনএস সুরত আরব সাগরে মাঝারি-পাল্লার ভূমি থেকে আকাশে উৎক্ষেপণযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্র (এমআর-স্যাম) সফলভাবে (পরীক্ষামূলক) উৎক্ষেপণ করেছে। আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার অন্তর্ভুক্ত এই সব ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে মূলত শক্রপক্ষের ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্র ধ্বংস করা হয়।
এই সফল উৎক্ষেপণ ভারতের প্রতিরক্ষা সক্ষমতা ও প্রযুক্তিগত উৎকর্ষতার আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ নিদর্শন হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। খবর ভারতীয় সংবাদ সংস্থা এএনআইয়ের।
জম্মু-কাশ্মিরের পেহেলগামে ২৬ জনকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় ফের উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে ভারত ও পাকিস্তানের সম্পর্ক। নয়াদিল্লির অভিযোগ, পাকিস্তান পরোক্ষভাবে এ সশস্ত্র হামলার সঙ্গে জড়িত। এমন অভিযোগ তুলে বুধবার (২৩ এপ্রিল) পাকিস্তানের সঙ্গে সিন্ধু নদের পানি চুক্তি স্থগিত, পাকিস্তানের নাগরিকদের জন্য বিশেষ ভিসা সুবিধা বাতিল ও ভারতে অবস্থিত পাকিস্তানের দূতাবাস থেকে পাক সামরিক উপদেষ্টাদের অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে। সেই সঙ্গে দুই দেশের মধ্যকার প্রধান সীমান্ত পারাপারটিও বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেয় ভারত।
এমন উত্তেজনার মধ্যে বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) ক্ষেপণাস্ত্র ধ্বংসের পরীক্ষা চালিয়েছে ভারতীয় নৌবাহিনী। মাইক্রো ব্লগিং সাইট এক্সে দেয়া এক পোস্টে নৌবাহিনী জানিয়েছে, তাদের নিজস্ব প্রযুক্তিতে তৈরি ক্ষেপণাস্ত্র বিধ্বংসী আইএনএস সুরাত ক্ষেপণাস্ত্রটি সফলভাবে সামুদ্রিক অঞ্চলের মাঝআকাশে ছুটন্ত ক্ষেপণাস্ত্র ধ্বংস করেছে। এর মাধ্যমে নিজেদের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় আরেকটি মাইলস্টোন অর্জিত হয়েছে বলে দাবি করেছে তারা।
এদিকে পেহেলগামে হামলার জেরে ভারত যেসব সিদ্ধান্ত নিয়েছে সেগুলোকে 'শিশুসুলভ' বলে আখ্যায়িত করেছে পাকিস্তান। এছাড়া ভারতের এসব কূটনৈতিক প্রতিক্রিয়ার জবাব দিতে জাতীয় নিরাপত্তা কমিটির (এনএসসি) জরুরি বৈঠক ডেকেছে ইসলামাবাদ। দেশটির উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার বলেছেন, আমরা বৈঠকে ভারতকে যোগ্য জবাব দেব, এই জবাব কম হবে না। পাকিস্তানের একটি বেসরকারি চ্যানেলকে ইসহাক দার বলেছেন, 'ভারতের ঘোষণাগুলো শিশুসুলভ এবং এতে গুরুত্বের অভাব রয়েছে।