Image description

বাংলাদেশসহ সাতটি দেশকে ‘নিরাপদ’ দেশ বলে ঘোষণা করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। গত ১৬ এপ্রিল ইউরোপীয় কমিশন এই ঘোষণা দিয়েছে।

আর এতেই ব্যাপক প্রতিক্রিয়ার জন্ম দিয়েছে ফ্রান্সের বাংলাদেশি কমিউনিটিতে। নতুন করে অস্বস্তিতে পড়েছে বাংলাদেশি রাজনৈতিক আশ্রয় আবেদনকারীরা। রাজনৈতিক আশ্রয় পাওয়ার সুযোগ কমে যেতে পারে বা বন্ধ হয়ে যেতে পারে, এমন আশঙ্কা প্রকাশ করছেন কমিউনিটি নেতারা।

ইউরোপীয় ইউনিয়ন জানায়, বাংলাদেশসহ ‘নিরাপদ’ দেশগুলো থেকে আসা ব্যক্তিদের রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদনগুলো দ্রুত নিষ্পত্তি করা হবে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে আবেদনগুলো নাকচ করার সম্ভাবনা থাকবে। এ ছাড়া এই ঘোষণার মাধ্যমে আবেদনকারীদের নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া সহজ হবে বলে মন্তব্য করেছে কমিশন।

এমন সংবাদের পর থেকেই ফ্রান্সে বাংলাদেশি রাজনৈতিক আশ্রয় আবেদনকারীদের কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে। অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে ইউরোপে স্থায়ী বসবাসের স্বপ্ন। তা ছাড়া নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর ঘোষণায় আরও বেশি উদ্বেগ প্রকাশ করছেন তারা।

বাংলাদেশি কমিউনিটি সাংবাদিক সংগঠন এফবিজেএ’র মুখপাত্র মোহাম্মদ আরিফ উল্লাহ বলেন, স্বাভাবিকভাবে গত কয়েক বছরের পরিসংখ্যান থেকে দেখা যাচ্ছে বাংলাদেশিদের আশ্রয় পাওয়ার হার এমনিতেই কম। নতুন তালিকাভুক্তির কারণে আশ্রয় প্রক্রিয়া দ্রুততর হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। কিন্তু দেশগুলো তাদের আশ্রয় আইন এবং জেনেভা কনভেনশন অনুসারে প্রত্যেক আশ্রয় আবেদন আলাদাভাবে যাচাই ও মূল্যায়ন করতে বাধ্য।

এই সিদ্ধান্তের ব্যাপারে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে জাতীয় নাগরিক কমিটির ডায়াস্পোরা কমিটির সদস্য ইফতিশাম চৌধুরি বলেন, এই ঘোষণাটি শুধু প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত নয়— এটা একটা রাজনৈতিক প্রকৌশল, যা আন্তর্জাতিক অভিবাসন নীতিকে ‘ফিল্টার’ করার একটি কৌশলমাত্র। এর উদ্দেশ্য খুব সরল—যেসব দেশের নাগরিকরা ইউরোপে রাজনৈতিক আশ্রয় চাইতে পারেন, সেই তালিকাকে ছোট করে ফেলা এবং অনুরোধকারীদের সংখ্যা হ্রাস করা।

এদিকে ইইউ’র শরণার্থীবিষয়ক কমিশনার ম্যাগনাস ব্রুনার জানান, সদস্য রাষ্ট্রগুলোর ওপর আশ্রয় আবেদন নিয়ে প্রচণ্ড চাপ সৃষ্টি হয়েছে। এখন দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়া প্রয়োজন। এই নীতির মাধ্যমে আবেদন নিষ্পত্তিতে গতি আসবে বলে মনে করেন তিনি। তবে মানবাধিকার সংগঠনগুলো এই পদক্ষেপের তীব্র সমালোচনা করেছে। এই ঘোষণার কারণে প্রকৃত আশ্রয় আবেদনকারীরাও বৈধ আশ্রয় পাওয়ার অধিকার হারাতে পারেন বলে শঙ্কা প্রকাশ করছে তারা।

জানা যায়, বিগত হাসিনা সরকারের সময়ে ফ্রান্সে রাজনৈতিক আশ্রয় গ্রহণ করে প্রায় … জন বাংলাদেশি। তাদের মধ্যে অনেকেই শুধুমাত্র নিজেকে বৈধ প্রমাণ করার জন্য মিথ্যা গল্প সাজিয়ে আশ্রয়ের আবেদন করেন। এ সময়ে বাংলাদেশে সংবিধান স্বীকৃত নাগরিক অধিকার অনিশ্চিত থাকার প্রমাণ পাওয়ায় ফ্রান্স সরকার রাজনৈতিক আশ্রয় দিতে সম্মত ছিল। তবে ৫ আগস্ট হাসিনা সরকার ক্ষমতা হারানোর পর ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) এমন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে।