
যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজায় শান্তি প্রতিষ্ঠায় জোর প্রচারণা চালানো, ১৮ মাস আগে যুদ্ধ শুরুর পর প্রতি সন্ধ্যায় ফোন করে খোঁজখবর নেওয়া, সাহস যোগানো পোপ ফ্রান্সিসের মৃত্যুতে মুষড়ে পড়েছেন ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডটির খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের সদস্যরা।
মধ্যপ্রাচ্যের বিস্তৃত অঞ্চলজুড়ে, ক্যাথলিক ও অর্থোডক্স ফিলিস্তিনি, লেবানিজ ও সিরিয়ান খ্রিষ্টান সবাই যুদ্ধবিগ্রহ, দুর্যোগ, কষ্ট ও নির্যাতনের সময় তাদের সঙ্গে অবিরাম যোগাযোগ করে সান্ত্বনা দেওয়া ফ্রান্সিসের প্রশংসায় এখনো পঞ্চমুখ।
“আমরা এমন এক সাধুকে হারিয়েছি যিনি প্রতিদিন আমাদের সাহসী হওয়ার, কী করে ধৈর্য ধারণ করা যায়, শক্ত থাকতে হয় তার শিক্ষা দিতেন। আমরা এমন একজনকে হারিয়েছি, যিনি তার এই ছোট্ট পালকে রক্ষা করতে প্রতিদিন প্রতিটি দিকে লড়াই করেছিলেন,” গাজার হলি ফ্যামিলি চার্চের জরুরি কমিটির প্রধান ৪৪ বছর বয়সী জর্জ অ্যান্টনি সোমবার বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে এমনটাই বলেছেন।
২০২৩ সালের অক্টোবরে গাজায় যুদ্ধ শুরু হওয়ার কয়েক ঘণ্টা পরই ফোন করে খোঁজখবর নেন ফ্রান্সিস, সেই যে শুরু এরপর যুদ্ধের প্রতি রাতে গাজায় ফোন দেওয়া পোপের নিয়মিত কাজে পরিণত হয়েছিল।
“কেবল যাজকের সঙ্গেই নয়, তিনি কথা বলতেন কক্ষে থাকা সবার সঙ্গে।
“আমরা মর্মাহত, কারণ পোপ ফ্রান্সিস মারা গেছেন। কিন্তু আমরা জানি তিনি এমন এক চার্চ রেখে গেছেন যা আমাদের খেয়াল রাখে, আমাদের নামে চেনে, আমাদের প্রত্যেককে নামে চেনে,” গাজার কয়েকশ সদস্যের খ্রিষ্টান সম্প্রদায়কে নিয়ে বলেন অ্যান্টনি।
পোপ ফোন করে সবাইকে সাহস দিতেন।
অ্যান্টনি বলেন, “তিনি প্রায়ই প্রত্যেককে বলতেন, আমি তোমার সঙ্গে আছি, ভয় পেও না।”
ফ্রান্সিস সর্বশেষ শনিবার রাতে ফোন করেন বলে হলি ফ্যামিলি বিভাগের যাজক রেভারেন্ড গ্যাব্রিয়েল রোমানেলিকে উদ্ধৃত করে জানিয়েছে ভ্যাটিকান নিউজ সার্ভিস।
“তিনি বলেছেন তিনি আমাদের জন্য প্রার্থনা করছেন, আশীর্বাদ করছেন এবং আমাদের প্রার্থনার জন্য তিনি ধন্যবাদ দিয়েছেন,” বলেছেন রোমানেলি।
পরদিন ইস্টার সানডেতে শেষবার জনসম্মুখে এসেছিলেন পোপ, সেখানেও তিনি গাজায় শান্তি প্রতিষ্ঠায় আকুতি জানিয়েছিলেন।
বিবদমান পক্ষগুলিকে বলেছিলেন ‘যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করতে, জিম্মিদের মুক্তি দিতে এবং শান্তির ভবিষ্যতের আকাঙ্ক্ষা পোষণকারী ক্ষুধার্ত মানুষের সাহায্যে এগিয়ে আসতে।’