Image description

দক্ষিণ কোরিয়ায় ‘নজিরবিহীন’ দাবানলে অন্তত ১৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া আহত হয়েছেন আরও ২০ জন। দেশটির দক্ষিণপূর্বাঞ্চলের অন্তত পাঁচটি এলাকায় দাবানল ছড়িয়ে পড়েছে। আগুন নিয়ন্ত্রণে কয়েক হাজার দমকলকর্মী মোতায়েন করা হয়েছে। 

বুধবার (২৬ মার্চ) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা। 

সরকার জানিয়েছে, প্রাণঘাতী এই দাবানলগুলো দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে আর ২৭ হাজারেরও বেশি বাসিন্দাকে ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য করেছে।

রয়টার্স বলেছে, শুষ্ক আবহাওয়ার মধ্যে প্রবল বাতাসের ইন্ধনে আগুন আরও তীব্র হয়ে উঠেছে আর এলাকার পর এলাকা পুড়িয়ে দিচ্ছে।  স্কুলগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে আর কর্তৃপক্ষ কারাগার থেকে বান্দিদের সরিয়ে নিতে বাধ্য হয়েছে। 

দক্ষিণ কোরিয়ার ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট হান ডাক সু বলেন, ‘সর্বকালের সবচেয়ে ভয়াবহ এই দাবানল মোকাবেলায় আমরা উপস্থিত সব কর্মী ও সরঞ্জাম নিয়োগ করেছি, কিন্তু পরিস্থিতি ভালো নয়। ’

দক্ষিণ কোরিয়ার থাকা মার্কিন সামরিক বাহিনীও আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টায় সহায়তা করছে বলেও জানান তিনি

দেশটির নিরাপত্তা মন্ত্রণালয় জানায়, উইসেয়ং কাউন্টি থেকে শুরু হওয়া দাবানলে বুধবার স্থানীয় সময় ভোর ৫টা পর্যন্ত ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে আর সানছং কাউন্টির দাবানলের সঙ্গে সম্পর্কিত ঘটনায় আরও চারজনের মৃত্যু হয়েছে।

স্থানীয় এক পুলিশ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, যাদের মৃত্যু হয়েছে তাদের অধিকাংশেরই বয়স ৬০ থেকে ৭০ বছরের মধ্যে।

দাবানল কবলিত এলাকাগুলোতে বুধবারও শুষ্ক আবহাওয়া বিরাজ করবে, এমন ধারণা করা হচ্ছে বলে নিরাপত্তা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে।

দক্ষিণ কোরিয়ার বন বিভাগের মুখপাত্র কিম জং-গুন জানান, ঘটনাস্থলে পর্যাপ্ত সরঞ্জাম ও হেলিকপ্টার নেই এমন সমালোচনার মুখে কর্তৃপক্ষ আরও অগ্নিনির্বাপন হেলিকপ্টার আনার পরিকল্পনা করেছে।

তিনি জানান, বুধবার পর্যন্ত ৪৯১৯ জন দমকল কর্মীকে ঘটনাস্থলগুলোতে মোতায়েন করা হয়েছে। তাদের পাশাপাশি কয়েকশ পুলিশ কর্মকর্তা এবং সামরিক বাহিনীর ইউনিটগুলোও কাজ করছে। দাবানল নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টায় ৮৭টি হেলিকপ্টার ব্যবহার করা হচ্ছে।

বুধবার এনদং শহরের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, উইসেয়ং দাবানলের কারণে হাও গ্রাম এবং বায়ুংসান কনফুসিয়ান একাডেমিসহ ইউনেস্কো ঘোষিত বেশ কয়েকটি বিশ্ব ঐতিহ্য স্থাপনা হুমকির মুখে পড়েছে। এসব স্থাপনা রক্ষার জন্য অগ্নিনিরোধী রাসায়নিক স্প্রে করা হয়েছে।

বার্তা সংস্থা ইয়োনহ্যাপ জানিয়েছে, ইতোমধ্যেই ৬৮১ সালে নির্মিত গুন মন্দির দাবানলে পুড়ে গেছে।

সরকার ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোকে ‘বিশেষ দুর্যোগপূর্ণ এলাকা’ ঘোষণা করেছে। দাবানলগুলোতে এ পর্যন্ত ৩৭ হাজার ৬৫ একর এলাকা পুড়ে গেছে।