
রমজান মাসের তৃতীয় শুক্রবারে আবারও ফিলিস্তিনিদের জন্য আল-আকসা মসজিদে প্রবেশের উপর কড়াকড়ি আরোপ করেছে ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ । এ ধরণের নিষেধাজ্ঞা রমজানের বিশেষ মাসে ধারাবাহিকভাবে হচ্ছে, যা ফিলিস্তিনি মুসলমানদের জন্য একটি গুরুতর প্রতিকূল পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে।
দখলকৃত পূর্ব জেরুজালেমের উত্তরে অবস্থিত ক্যালান্দিয়া চেকপোস্টে ইসরায়েলি সেনারা ফিলিস্তিনিদের পরিচয়পত্র এবং নামাজের অনুমতিপত্র তল্লাশি করে। তবে, অনেক ফিলিস্তিনি যাদের কাছে প্রয়োজনীয় সব নথিপত্র ছিল, সেগুলি সঠিকভাবে যাচাই করার পরেও প্রবেশে বাধিত হন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এই ঘটনাটি আরও স্পষ্ট করে যে, ফিলিস্তিনিদের প্রবেশের ওপর ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষের কঠোর নিয়ন্ত্রণ এবং গোপন সিদ্ধান্তের ফলে ধর্মীয় স্বাধীনতার ব্যাপারে গুরুতর প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয়েছে।
ইবরাহিম আবাদ, যিনি দখলকৃত পশ্চিম তীরের ইয়ামন শহর থেকে এসেছেন, আনাদোলু সংবাদ সংস্থার সঙ্গে আলাপকালে জানান, “আমি চেকপোস্টে পৌঁছানোর পর, আমার পরিচয়পত্র পরীক্ষা করার পর আমাকে কোনো কারণ ছাড়াই প্রবেশে বাধা দেওয়া হয়।
এরপর, আমি সেখান থেকে চলে আসার পর, আমার ফোনে একটি টেক্সট মেসেজ আসে, যেখানে বলা হয়েছিল যে, আমাকে 'প্ররোচনামূলক' কার্যকলাপের জন্য আল-আকসা মসজিদে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।”
এই ঘটনার পর ফিলিস্তিনিরা বিক্ষোভ জানিয়েছে যে, ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষের এই ধরনের কর্মকাণ্ড শুধু তাদের ধর্মীয় স্বাধীনতা লঙ্ঘন নয়, বরং রাজনৈতিক ও সামাজিক ভাবে ফিলিস্তিনিদের ওপর এক ধরনের দমনপীড়ন চালানোর প্রচেষ্টা হিসেবে দেখা যাচ্ছে।
৬ মার্চ, ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনজামিন নেতানিয়াহু এক বিশেষ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন, যার মাধ্যমে রমজান মাসের শুক্রবারগুলোতে আল-আকসা মসজিদে প্রবেশ করতে চাওয়া ফিলিস্তিনিদের জন্য আরো কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। নতুন নিয়ম অনুযায়ী, শুধুমাত্র ৫৫ বছরের বেশি বয়সী পুরুষ, ৫০ বছরের বেশি বয়সী নারী এবং ১২ বছরের কম বয়সী শিশুদের আল-আকসা মসজিদে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হবে। এই সিদ্ধান্তটি এমন এক সময় নেওয়া হয়েছে, যখন ইসরায়েলি বসতিরা প্রতিদিন ব্যাপক সংখ্যায় আল-আকসা মসজিদ প্রাঙ্গণে অনুপ্রবেশ করছে, যা স্থানীয় ফিলিস্তিনিদের জন্য আরো এক মহাবিপদ সৃষ্টি করছে।
ফিলিস্তিনিদের এই ধর্মীয় স্থানকে আরও সহজে প্রবেশের সুযোগ থেকে বঞ্চিত করা ইসরায়েলের দীর্ঘদিনের কৌশলের অংশ বলে মনে করা হচ্ছে, যা আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনগুলো এবং মুসলিম বিশ্বে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছে।