
পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের নিরাপত্তা বাহিনীর মধ্যে সম্প্রতি বন্ধ হওয়া প্রধান সীমান্ত ক্রসিং তোরখামে গোলাগুলি হয়েছে। এতে একজন নিহত ও বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন।
আফগানিস্তানের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সোমবার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেছে, আফগান নিরাপত্তা বাহিনীর একজন সদস্য নিহত হয়েছেন এবং আরো দুজন আহত হয়েছেন। এ ছাড়া নাম প্রকাশ না করার শর্তে দুই পাকিস্তানি নিরাপত্তা কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেছেন, পাকিস্তানের নিরাপত্তা বাহিনীর কয়েকজন সদস্যও এ সংঘর্ষে আহত হয়েছেন।
গত রাতে রমজান মাসের প্রথম কর্মদিবসে তোরখাম সীমান্তে এ গোলাগুলি হয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ এই ট্রানজিট পয়েন্ট পাকিস্তান গত মাসে বন্ধ করে দিয়েছিল আফগানিস্তানের নতুন সীমান্ত চৌকি নির্মাণ নিয়ে দ্বন্দ্বের কারণে। রমজানে সাধারণত পাকিস্তান থেকে আফগানিস্তানে খাদ্যপণ্যের আমদানি সাধারণত শীর্ষে থাকে। তীব্র শীতে সীমান্তের উভয় পাশে প্রয়োজনীয় পণ্য ভর্তি প্রায় পাঁচ হাজার ট্রাক আটকা পড়েছিল।
জাতিসংঘের মতে, এই সংঘর্ষ আফগান অর্থনীতিতে সংকট আরো গভীর করতে পারে, যখন লাখ লাখ মানুষ ক্ষুধার্ত এবং দেশটির প্রায় অর্ধেক জনগণের মানবিক সহায়তার প্রয়োজন।
অতীতেও মারাত্মক গোলাগুলি ও ক্রসফায়ারের পর দুই দেশ তোরখাম ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় চামান সীমান্ত ক্রসিং বন্ধ করে দিয়েছিল। পাকিস্তানের দাবি, তারা আফগান ভূখণ্ড থেকে আক্রমণের সম্মুখীন হচ্ছে। তবে এই অভিযোগ তালেবান সরকার অস্বীকার করে।
এদিকে কাবুলের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আব্দুল মতিন কানি সোমবার পাকিস্তানকে গত রাতের সহিংসতার জন্য অভিযুক্ত করেছেন। এরপর আফগান নিরাপত্তা বাহিনী ‘প্রতিরক্ষামূলক অবস্থানে’ চলে যায় এবং সংলাপের প্রচেষ্টা ব্যর্থ হওয়ার পর প্রতিক্রিয়া জানায় বলে তিনি জানিএছেন।
অন্যদিকে নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন পাকিস্তানি কর্মকর্তা দ্য অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসকে বলেছেন, তালেবান বিনা উসকানিতে পাকিস্তানের সীমান্ত চৌকিতে স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র দিয়ে গুলি চালিয়েছে। এরপর পাকিস্তানিরা পাল্টা গুলি চালায়।
পাকিস্তানের খাইবার জেলার চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সভাপতি ইউসুফ আফ্রিদির মতে, এখন পর্যন্ত তোরখাম ক্রসিং বন্ধের ফলে কমপক্ষে ১৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের ক্ষতি হয়েছে। পাশাপাশি আফগানিস্তানের নাঙ্গারহার চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্টের প্রধান নির্বাহী শাকিরুল্লাহ সাফি বলেন, ক্রসিং বন্ধের কারণে আফগান ব্যবসায়ীরা প্রতিদিন পাঁচ লাখ মার্কিন ডলার লোকসান করছেন। পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্যের পরিমাণ ছিল ১.৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলারেরও বেশি।
সূত্র : আলজাজিরা