ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ শেষ হওয়া জরুরি। সমাধানসূত্র খুঁজতে রাশিয়ার সাথে আলোচনায় বসতে রাজি বলে জানালেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি।
এ যুদ্ধ নিহত সৈন্যের সংখ্যা এখনো পর্যন্ত খুব বেশি বার জানায়নি ইউক্রেন। রাশিয়াও তাদের নিহতের সংখ্যা বেশিভাগ সময় গোপন রেখেছে।
মঙ্গলবার ব্যতিক্রমী কাজ করলেন জেলেনস্কি। তিনি জানিয়েছেন, এখনো পর্যন্ত যুদ্ধে ৪৫ হাজার ১০০ সৈন্য নিহত হয়েছেন। আহতের সংখ্যা তিন লাখ ৯০ হাজার।
জেলেনস্কি বলেছেন, তিন বছরে পা দিল এই যুদ্ধ। বহু মানুষের নিহত হয়েছে। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ অপরিসীম। এই পরিস্থিতিতে যুদ্ধ বন্ধ করতে এবং সমাধানসূত্র খুঁজে বের করতে তিনি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সাথে আলোচনায় বসতেও রাজি।
মঙ্গলবার ব্রিটিশ সাংবাদিক পিয়েরস মরগ্যানকে একটি সাক্ষাৎকার দিয়েছেন জেলেনস্কি। সেখানেই তিনি বলেছেন, ‘ইউক্রেনে শান্তি ফিরিয়ে আনার জন্য যদি পুতিনের সাথে আলোচনায় বসতে হয়, আমি বসতে রাজি আছি। আর মানুষের মৃত্যু মেনে নেয়া যাচ্ছে না।
জেলেনস্কির জানিয়েছেন, কূটনৈতিক পথে যুদ্ধের সমাপ্তি ঘটানো সম্ভব। তবে আলোচনায় রাশিয়ার পাশাপাশি আমেরিকা ও ইউরোপকে থাকতে হবে।
জেলেনস্কি জানিয়েছেন, রাশিয়া ইউক্রেনের বেশ কিছু অঞ্চল দখল করে নিয়েছে। এবং ইউক্রেন কোনোভাবেই তা মেনে নেবে না। এ বিষয়ে পাশ্চাত্যের দেশগুলোর অবস্থান নিয়েও হতাশা প্রকাশ করেছেন তিনি।
তার মতে, রাশিয়াকে ইউক্রেনের ভেতর থেকে পেছনে সরানোর ব্যাপারে পাশ্চাত্যের দেশগুলোর কাছে যতটা সাহায্য আশা করেছিল ইউক্রেন, তারা তা দিতে ব্যর্থ হয়েছে।
পুতিনের সাথে বৈঠকে বসলে তারা অবস্থান কী হবে? সাংবাদিকের এই প্রশ্নের জবাবে জেলেনস্কি বলেছেন, ‘আমি অবশ্যই পুতিনের প্রতি সদয় হবো না। আমি তাকে আমার শত্রু বলে মনে করি। আমার ধারণা, পুতিনও আমাকে শত্রু বলে মনে করেন।’
তবে পুতিন ইতোমধ্যেই জানিয়েছেন, জেলেনস্কির সাথে কোনোভাবেই বৈঠকে বসবেন না তিনি।
এদিকে নিজের নিহত সৈন্যের সংখ্যা জানানোর সময় ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জানিয়েছেন, তার কাছে যা খবর তাতে এখনো পর্যন্ত তিন লাখ ৫০ হাজার রাশিয়ার সৈন্য নিহত হয়েছে যুদ্ধে। আহতের সংখ্যা সাত লাখ।
ট্রাম্পের অবস্থান
ক্ষমতায় আসার পরেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছিলেন, তিনি ইউক্রেন যুদ্ধের পরিসমাপ্তি ঘটাবেন। শুধু তাই নয়, যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনকে আর সামরিক সাহায্য করবে না বলেও জানিয়েছিলেন তিনি। রাশিয়ার ওপরে আরো কড়া নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে বলে জানিয়েছিলেন তিনি।
তবে বাস্তবে এখনো পর্যন্ত ট্রাম্প কোনো পদক্ষেপ নেননি।
জেলেনস্কি জানিয়েছেন, যুদ্ধ বন্ধ করতে ট্রাম্প কী ভূমিকা নেন, তা গুরুত্বপূর্ণ। রিপোর্টারদের তিনি জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্রের সাথে তার প্রতিনিধিরা নিয়মিত আলোচনা করছেন। এবং দ্রুত মার্কিন প্রতিনিধিরা ইউক্রেনের প্রতিনিধিদের সাথে আনুষ্ঠানিকভাবে আলোচনায় বসবেন।
সূত্র : ডয়চে ভেলে