বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের পাঁচ সিনিয়র শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে এক বিভাগের এক শিক্ষার্থীকে র্যাগিংয়ের অভিযোগ তদন্তে প্রমাণিত হলেও তাদের বিরুদ্ধে এখনো কোনো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা কার্যকর হয়নি। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়া হলেও প্রশাসনিক জটিলতা ও সিন্ডিকেট অনুমোদনের অজুহাতে শাস্তি কার্যকরে বিলম্ব হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে, যা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে।
গত ৯ ডিসেম্বর (মঙ্গলবার) বিকেলে তদন্ত প্রতিবেদন উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মাদ তৌফিক আলমের কাছে জমা দেওয়া হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করে তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. রাহাত হোসাইন ফয়সাল।
তিনি বলেন, ‘আমরা নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছি। প্রতিবেদনে কিছু সুপারিশ দেওয়া হয়েছে। এটি উপাচার্য সিন্ডিকেটে উপস্থাপন করবেন। সিন্ডিকেটে অনুমোদন হলে শাস্তি কার্যকর হবে।’
তদন্ত কমিটির অন্যতম সদস্য সমাজকর্ম বিভাগের প্রভাষক মোস্তাকিম মিয়া বলেন, ‘আমরা অভিযোগকারী ও অভিযুক্ত শিক্ষার্থীদের লিখিত বক্তব্য নিয়েছি। সবার বক্তব্য পর্যালোচনা ও ক্রসচেকের ভিত্তিতে অভিযোগের সত্যতা নিশ্চিত হয়েছি। অপরাধের মাত্রা অনুযায়ী শাস্তি সুপারিশ করা হয়েছে।’
গত ২৬ নভেম্বর টোল প্লাজা এরিয়ায় রাতভর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হন বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের নবীন শিক্ষার্থী আল শাহারিয়ার মোহাম্মদ মুস্তাকিম মজুমদার। এ ঘটনার বিচার চেয়ে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী ৩০ নভেম্বর দুপুরে ববি উপাচার্য, প্রক্টর ও বিভাগের চেয়ারম্যান বরাবর তিনটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। পরদিন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর রাহাত হোসাইন করে চার সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। ও কমিটিকে পাঁচ কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। সময়মতো উপাচার্যের কাছে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয় তদন্ত কমিটি।
তবে, উপাচার্যের টেবিলে ফাইলবন্দী হয়ে পড়ে আছে তদন্ত প্রতিবেদনটি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ তৌফিক আলম বলেন, ‘তদন্ত কমিটি শাস্তির সুপারিশ করে প্রতিবেদন আমার কাছে জমা দিয়েছে। সিন্ডিকেটে পাশ হওয়ার পর শাস্তি কার্যকর হবে।’
তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার পরও শাস্তির কালক্ষেপণের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমাদের এখানে সিন্ডিকেটে অনুমোদন ব্যতীত শাস্তি কার্যকর করার সুযোগ না থাকায় কিছুটা দেরি হচ্ছে। আগামী সিন্ডিকেটে আইনের এই জটিলতা কীভাবে দূর করা যায়, সে বিষয়টি উত্থাপন করব যাতে দ্রুত শাস্তি কার্যকর করা যায়।’