Image description

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ নির্বাচনে আচরণ বিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ উঠেছে শাখা ছাত্রশিবির ও ছাত্রদলের বিরুদ্ধে। আজ সোমবার (২৪ নভেম্বর) সকালে আচরণবিধি লঙ্ঘন করে শিক্ষার্থীদের বাড়ি ফেরার জন্য বাস বরাদ্দ দেয় উভয় দল। এভাবে একের পর এক নির্বাচন কমিশনের নিষেধাজ্ঞা ও জকসু আচরণবিধিকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে যাচ্ছে তারা। এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সাধারণ শিক্ষার্থী ও স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। 

জানা যায়, ভূমিকম্প আতঙ্ক শিক্ষার্থীদের নিরাপদে বাড়ি পৌঁছে দিতে ৭টি বিভাগে ১৬ টি বাস বরাদ্দ দেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। বাসগুলো রংপুর, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, খুলনা, ময়মনসিংহ, বরিশাল ও সিলেট বিভাগের বিভিন্ন রুটে রওয়ানা দেয়। কিন্তু শিক্ষার্থীদের তুলনায় এই বাস অপ্রতুল। প্রত্যেকটি বাসে আসনের তুলনায় অধিক শিক্ষার্থী যাত্রা করায় বহু শিক্ষার্থী ক্যাম্পাসে এসে বাসে উঠতে পারেনি। দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করেও বাসে সিট না পেয়ে ফিরে যায় অসংখ্য শিক্ষার্থী। এসময় প্রথমে শিবিরের পক্ষ থেকে বিভাগীয় শহরের জন্য ৮ টি বাস বরাদ্দ দেয়া হয়। পরে ছাত্রদলও ৬ টি বাস বরাদ্দ দেয়। 

জকসু আচরণ বিধিমালার নির্বাচনী প্রচারণা সংক্রান্ত বিধি ৫(গ)তে উল্লেখ আছে, ‘মনোনয়ন পত্র বিতরণ শুরুর আগের দিন থেকে নির্বাচনী ফলাফল ঘোষণা না হওয়া পর্যন্ত এই বিশ্ববিদ্যালয়ে সকল সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও কল্যাণমূলক কার্যক্রম বন্ধ থাকবে।’

এ ছাড়া আচরণবিধিমালার নির্বাচনী প্রার্থীর খরচ সংক্রান্ত বিধি ১৭ (ক)তে উল্লেখ আছে, ‘একজন প্রার্থী হল শিক্ষার্থী সংসদ নির্বাচনের জন্য সর্বোচ্চ ৫,০০০/- (পাঁচ হাজার) টাকা এবং কেন্দ্রীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য সর্বোচ্চ ১৫,০০০/-(পনেরো হাজার) টাকা ব্যয় করতে পারবেন।’ কিন্তু তাদের এ তাদের এ অর্থ ব্যয় জকসু প্রচারণার নিয়মের ব্যত্যয় ঘটিয়েছে এবং প্রভাব বিস্তার করেছে।

স্নাতকোত্তর শিক্ষার্থী রায়হান ইসলাম বলেন, আচারণ বিধির চেয়ে শিক্ষার্থীদের বাড়ি যাওয়া বেশি গুরুত্বপূর্ণ। প্রশাসন তো আশা দিলো ভার্সিটির বাস করে শিক্ষার্থীদের বাসায় পৌঁছে দিছে দিয়ে বাহবা নিল কিন্তু কতজন যেতে পেরেছে। সবাই রেডি হয়ে এসে এখনো বসা যেতে পারছে না বাসের অভাবে। ঠিক কাজ করেছে বাস মেনেজ করে দিয়েছে। কম্পিটিশন হোক ভালো কাজের বার বার। হোক আচারণ বিধি লঙ্ঘন বার বার!

এ বিষয়ে স্বতন্ত্র ভিপি প্রার্থী মো. রাকিব বলেন,নির্বাচন কমিশন আচরণবিধি প্রণয়ন করেছে। কিন্তু একের পর এক আচরণবিধি লঙ্ঘন হলেও কমিশন কোন ব্যবস্থা নিচ্ছে না। রাজনৈতিক দলেে সমর্থনপুষ্ট প্রার্থীরা পেশিশক্তি ও অর্থের মাধ্যমে নির্বাচনকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করছে। নির্বাচন কমিশন দেখেও না দেখার ভান করছে। এতে কমিশন সম্পূর্ণ পক্ষপাতিত্বের পরিচয় দিচ্ছে। 

এ বিষয়ে জবি শাখা ইসলামী ছাত্রশিবির সেক্রেটারি আব্দুল আলিম আরিফ বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যে বাসের ব্যবস্থা করেছে, তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। অসংখ্য শিক্ষার্থী বাড়ি যেতে পারছিল না।  তাই শিক্ষার্থীদের প্রয়োজনীয়তা ও দাবির প্রেক্ষিতে বাসের ব্যবস্থা করেছি। যাতে আচরণবিধি লঙ্ঘন না হয়, সেজন্য ক্যাম্পাসের বাইরে ভিক্টোরিয়া পার্কের সামনে থেকে শিক্ষার্থীদের বাসে উঠিয়েছি আমরা।

জবি শাখা ছাত্রদলের সদস্য সচিব শামসুল আরেফিন বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে, কিন্তু প্রশাসন শিক্ষার্থীদের জন্য পর্যাপ্ত বাস দিতে পারেনি। তাই মানবিক দিক বিবেচনায় আমরা বাস দিয়েছি। আর আমরা ‘ঐক্যবদ্ধ নির্ভীক জবিয়ান’ প্যানেলের পক্ষ থেকে বাস সরবরাহ করিনি। আমাদের ছাত্রদলের পক্ষ থেকে করেছি।

এ বিষয়ে জকসু নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক ড. মোস্তফা হাসান বলেন, এই অভিযোগগুলো তো আমাদের কাছে অফিসিয়ালি আসতে হবে। অভিযোগ আসলে তখন আমরা ব্যাবস্থা নেব।