Image description

গত ২৬ অক্টোবর সুইমিংপুলে সাঁতার শিখতে গিয়ে ডুবে মৃত্যুবরণ করেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মোছা. সায়মা হোসেন। সাঁতার প্রশিক্ষক কর্মকর্তা সাঁতার না জানার কারণে যথাসময়ে তাকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি বলে অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া আশঙ্কাজনক অবস্থায় উদ্ধার করে রাবির চিকিৎসা কেন্দ্র নিয়ে গেলেও প্রাথমিক চিকিৎসা না দেওয়ারও অভিযোগ তোলে শিক্ষার্থীরা। 

এসব অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে গঠিত তদন্ত কমিটি তিন দিনের মধ্যে রিপোর্ট প্রকাশ না করায় বিক্ষোভ করেছে ওই বিভাগের শিক্ষার্থীরা। বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) সকাল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে বিক্ষোভ করেন তারা।

এসময় তারা ‘তুমি কে আমি কে, সায়মা সায়মা', বিচার বিচার বিচার চাই, সায়মা হত্যার বিচার চাই', আমার বোন মরল কেন প্রশাসন জবাব দে', প্রশাসনের সিন্ডিকেট, ভেঙে দাও গুড়িয়ে দাও', কথা ছিল তিন দিন, বিচার পাব কোনদিন'সহ নানা স্লোগান দেন। 

শিক্ষার্থীরা বলছেন, সায়মার মৃত্যু কি স্বাভাবিক না কোনো গাফিলতির কারণে হয়েছে তা খতিয়ে দেখতে তারা প্রশাসন কর্তৃক গঠিত তদন্ত কমিটিকে তিন দিনের সময় দিয়েছিল। কিন্তু তিন দিন পার হয়ে যাওয়ার পরও প্রশাসন নিশ্চুপ হয়ে আছে। জুলাই আন্দোলনের ফলে যারা প্রশাসনের চেয়ারে বসেছে তারা কি আদৌও শিক্ষার্থীবান্ধব কোনো প্রশাসন? যতক্ষণ পর্যন্ত সুষ্ঠু কোনো রিপোর্ট প্রকাশ না করা হবে ততক্ষণ আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাব৷ 

আন্দোলনরত সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মো. সোহাগ হোসেন বলেন, ‘সায়মা আপুর মৃত্যুর রহস্য উদঘাটনে প্রশাসন আমাদের ৭২ ঘণ্টা সময় দিয়েছিল। তারা বলেছিল ৭২ ঘণ্টার ভিতরে মৃত্যুর প্রাথমিক তদন্ত প্রতিবেদন দেবে। কিন্তু ৭২ ঘণ্টা পার হয়ে গেলেও আমরা কোনো প্রতিবেদন পাইনি। আমরা এখানে সুষ্ঠু তদন্ত প্রতিবেদনের দাবিতে একত্র হয়েছি এবং এটি আদায় করেই আমরা এখান থেকে যাব ইনশাআল্লাহ'।

সমাজবিজ্ঞান বিভাগের আরেক শিক্ষার্থী বলেন, প্রশাসন সময় নির্ধারণ করে দেওয়ার পরও তারা এই জায়গায় কেন গাফিলতি করল? তারা যেহেতু তদন্ত প্রতিবেদন দেবে, সেহেতু যেন সঠিক প্রতিবেদন দেয়—এখানে যেন কোনো খামখেয়ালি না থাকে। এমনটা যেন না হয় যে, যারা এর সাথে জড়িত, তাদের প্রশাসন বাঁচানোর চেষ্টা করছে। আমরা চাই, যারা সায়মা হত্যার সময় উপস্থিত ছিল এবং দায়িত্বে অবহেলা করে সায়মাকে রেসকিউ করতে পারেনি, তাদের যেন চাকরিচ্যুত করা হয়। এছাড়াও সায়মার পরিবারকে যেন এককালীন অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হয় এবং তার ভাইকে যেন এই বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরির ব্যবস্থা করা হয়।

রাকসুর জিএস সালাহউদ্দিন আম্মার বলেন, রাকসু প্রতিনিধিদের অবস্থান এ বিষয়ে সম্পূর্ণ স্পষ্ট। সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী, শিক্ষক, তদন্ত কমিটি এবং প্রশাসনের সঙ্গে আমরা রাকসু প্রতিনিধিরা একসাথে সিনেটে বসব। তারা আমাদের কাছে কিছু সময় চেয়েছেন এবং জানিয়েছেন যে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতিতে সিনেটে তদন্ত রিপোর্ট সবার সামনে প্রকাশ করা হবে। আমরা তাদের সে পর্যন্ত সময় দিয়েছি। রাকসুর প্রতিনিধিরা এখনো পর্যন্ত ভবনে বসেননি এবং প্রথম অধিবেশনও শুরু হয়নি। তবে অধিবেশন শুরু হলেই রাকসুর প্রতিনিধিরা প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে দুই মিনিটও সময় নেবেন না।