রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের এক অধ্যাপকের বিতর্কিত ফেসবুক পোস্টের প্রতিবাদে মধ্যরাতে বিক্ষোভ করেছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। পরবর্তীতে অধ্যাপক তার মন্তব্যের জন্য দু:খপ্রকাশ করেছেন।
সোমবার (২৭ অক্টোবর) দিবাগত রাত ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের জোহা চত্বর থেকে এ বিক্ষোভ শুরু হয়। বিক্ষোভকারীরা পরে পশ্চিমপাড়ায় মেয়েদের হলগুলোর সামনে দিয়ে মিছিল নিয়ে যান।
বিক্ষোভের কারণ ছিল গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক আ আল মামুনের একটি ফেসবুক পোস্ট। তিনি রাকসু হল সংসদের নারীদের শপথ গ্রহণের ছবি দিয়ে ফেসবুকে একটি বিতর্কিত স্ট্যাস্টাস লিখেছিলেন। তাতে তিনি টু-পিস ও মদের বোতল নিয়ে ক্লাসে আসার ইঙ্গিত দেন এবং তার মদ পান করার লাইসেন্স থাকার দাবি তোলেন।
তার এই পোস্টটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি করলে তিনি তা মুছে দেন। এরপরই শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভের ডাক দেন। জোহা চত্বরে জড়ো হওয়া শিক্ষার্থীরা মিছিল করে পশ্চিমপাড়ার হলগুলোর সামনে দিয়ে যায়। এ সময় হলের অন্যান্য শিক্ষার্থীরাও বিক্ষোভে যোগ দেন।
বিক্ষোভ শেষে রাকসু হলের মহিলাবিষয়ক সম্পাদক সৈয়দা হাফসা বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়গুলো দীর্ঘদিন ধরে হিজাব বিদ্বেষীদের আতুরঘরে পরিণত হয়েছে। আমরা তাকে চ্যালেঞ্জ করতে চাই, সে যে মন্তব্য করেছে হুবহু তা করে দেখাক। আমরা তার কুরুচিপূর্ণ মন্তব্যের প্রতিবাদে এখানে এসেছি। তাকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে হবে, নতুবা তাকে এই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করতে হবে।
ঘটনাটি প্রকাশ পেতেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অধ্যাপক মামুনের ব্যাপক সমালোচনা চলতে থাকে।
এরপর আজ মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) এক ফেসবুক পোস্টে অধ্যাপক আ আল মামুন তার মন্তব্যের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করেন। তিনি ব্যাখ্যা দিয়ে বলেন, বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি তাকে হতাশাগ্রস্ত করেছে এবং সেই হতাশা থেকেই ঝোঁকের বশে এমন একটি পোস্ট করেছেন, যা তার করা উচিত হয়নি।
তিনি দাবি করেন, তার পোস্টটি মিসইন্টারপ্রিটেড হতে পারে বুঝতে পেরে সঙ্গে সঙ্গে তা সরিয়ে নিয়েছিলেন। পোশাক বিষয়ে তার অবস্থান পরিষ্কার করে তিনি বলেন, পোশাকের কারণে তিনি কাউকে বড় বা ছোট দেখেন না এবং হিজাব ডিফেন্ড করার মতো অনেক পোস্ট তার রয়েছে।
তার পোস্টে কেউ আঘাত পেয়ে থাকলে তিনি দুঃখ প্রকাশ করেন এবং বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের কোনো রকম অসুবিধায় না পড়ারও আকুতি জানান।
