Ali Ahmad Mabrur (আলী আহমদ মাবরুর)
২৮ অক্টোবরের ট্রাজিক ঘটনায় সবার স্মৃতির সাথে আমার স্মৃতিগুলোও জড়িত; তবে একটু ভিন্নভাবে। একদিকে পল্টন, কাকরাইল, দৈনিক বাংলা মোড় কিংভা আজাদ প্রোডাক্টস এর গলিতে এক ধরনের সহিংস বাস্তবতার স্মৃতি। আবার একইভাবে মিনটু রোডের সরকারী বাসভবনের শেষ দিনের স্মৃতি। দুটোই আমাকে ভিন্ন ভিন্নভাবে আবিষ্ট করে রাখে।
সরকারী বাসা আমরা মেয়াদ পূর্তির মাসখানেক আগেই ছেড়ে দিয়েছিলাম। আব্বা শেষ দিন পর্যন্ত কখনোই বাসা আঁকড়ে ধরে থাকতে চাননি। তাই এদিন পর্যন্ত আমরা অপেক্ষা করিওনি।
তারপরও বাসার কিছু জিনিসপত্র যেগুলো আমরা আগের সিলসিলায় পেয়েছিলাম সেগুলোসহ পুরো বাসভবনটি পূর্ত মন্ত্রনালয়ের কাছে আনুষ্ঠানিক হস্তান্তরের মতো ফরমালিটিজ বাকি ছিল। কিন্তু আমাদের শেষদিনের অভিজ্ঞতা ভালো ছিল না।
কোনোদিনই হয়তো এর নেপথ্যের রহস্য জানা যাবে না। তবে এটুকু বুঝতে পেরেছিলাম যে, শেষদিনে দেশের অনেক কিছুর ওপরই সরকারের আর নিয়ন্ত্রণ ছিল না। এমনকী হাউজ গার্ড যারা ছিলেন, যারা এতদিন আমাদের সামনে অতিমাত্রায় বিনয়ী ছিলেন, তাদেরও যেন একদিনের ভেতর পাল্টে যেতে দেখলাম। একদম উচ্চ পদের কর্মকর্তা থেকে শুরু করে তৃণমূলের মোতায়েনকৃত স্টাফদের মাঝে একই রকম মেসেজ কীভাবে চলে এসেছিল কিংবা একইভাবে তাদের সবার মাঝেই কেন গা ছাড়া ভাব কাজ করছিল- এর কারণ আমার জানা নেই।
২৮ অক্টোবরের ভয়াবহ ক্রাইসিসটা হলো- আমরা এই দিনটির ইতিহাসের সাথে এখনো বোঝাপড়া করে উঠতে পারিনি। এদিন শুধু সহিংসতা হয়নি বা আমাদের ভাইয়েরা শহীদই হয়নি।
এ দিনটিতে বাংলাদেশের নিয়ন্ত্রণ বাংলাদেশীদের হাত থেকে বেরিয়ে গেছে- যা এখনো পর্যন্ত আমাদের হাতে আর ফিরে আসেনি। এই ঘটনার পর বিরাজনীতিকরণ এমনভাবে হয়েছে আর এই দেশে রাজনীতিটাই আর করা যায়নি।
শহীদের আত্মত্যাগ আল্লাহ কবুল করুন। বাংলাদেশ বাংলাদেশীদের নিয়ন্ত্রণে আসুক- আজকের দিনে এ দোয়াই বারবার করি।