
শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আব্দুল লতিফের নাম ব্যবহার করে নকল গবেষণাপত্র প্রকাশ করায় বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। ২০১৭ সালে প্রকাশিত গবেষণাপত্রটির প্রধান ও একইসঙ্গে যোগাযোগকারী লেখক (করেসপণ্ডিং অথোর) জাতীয় প্রতিষেধক ও সামাজিক প্রতিষ্ঠানের (নিপসম) গবেষক ড. মোহাম্মদ শরওয়ার। তবে গবেষণা প্রবন্ধে সহ-লেখক (কো অথর) হিসেবে ড. আব্দুল লতিফকে না জানিয়েই নাম যুক্ত করেন তিনি। এমনটি জানিয়েছেন ড. লতিফ।
প্রবন্ধটি ২০১৪ সালের একটি গবেষণা প্রবন্ধের সাথে হুবহু মিলে যাওয়াই মেধাস্বত্ব চৌর্য্যবৃত্তির অভিযোগ করেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক কবিরুল বাশার। এরপরই বিষয়টি নিয়ে বিতর্কের জন্ম দেয়।
জানা যায়, নিপসমে কর্মরত এবং শেকৃবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোঃ আব্দুল লতিফের সাবেক ছাত্র ড. শরোয়ার ২০১৭ সালে ‘Diversities of mosquito species of different locations in Dhaka city’ নামে একটি গবেষণা প্রবন্ধ Progressive Agriculture জার্নালে প্রকাশ করেন।
দীর্ঘ সাত বছর পর জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. কবিরুল বাশার দাবি করেন, প্রবন্ধটি ২০১৪ সালে তার প্রকাশিত প্রবন্ধের সঙ্গে ৯৮ শতাংশ মিলে যায়। এতে মেধাস্বত্ব চৌর্যবৃত্তির অভিযোগে অধ্যাপক ড. বাশার আইনের আশ্রয় নেন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, প্রকাশিত গবেষণাপত্রে অধ্যাপক ড. মো. আব্দুল লতিফের নাম সংযুক্তির ক্ষেত্রে তার নিকট থেকে কোনো প্রকার অনুমতি নেয়া হয়নি। এমনকি গবেষণা জার্নাল থেকে ন্যূনতম যোগাযোগ ব্যতিরেখেই গবেষণা প্রবন্ধটি প্রকাশ করা হয়।
তাছাড়া প্রকাশিত গবেষণা প্রবন্ধে প্রধান ও যোগাযোগকারী লেখক (অথোর ও করেসপণ্ডিং অথোর) হিসেবে বর্তমানে নিপসমে কর্মরত ড. শরওয়ার থাকলেও বিভিন্ন গণমাধ্যমে শেকৃবি উপাচার্যকে প্রধান লেখক হিসেবে অভিযুক্ত করে সংবাদ প্রকাশিত হয়। এতে বিব্রতর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে বলে দাবি করেন উপাচার্য অধ্যাপক আব্দুল লতিফ।
এ বিষয়ে শেকৃবি উপাচার্য ড. আব্দুল লতিফ বলেন, ‘২০১৭ সালে আমার পিএইচডি শিক্ষার্থী শরওয়ার ডিগ্রি সম্পন্ন হওয়ার পরবর্তী সময়ে একটি গবেষণা প্রবন্ধ প্রকাশ করে। যেখানে আমাকে অবগত না করেই সহ-লেখক হিসেবে উল্লেখ করা হয়। এমনকি কোনো ধরনের নিশ্চিতকরণ ছাড়াই সংশ্লিষ্ট জার্নাল আমার নাম সহ-লেখক হিসেবে অন্তর্ভূক্ত করে প্রবন্ধটি প্রকাশ করে। ঘটনা আলোচনায় আসার পরে আমি জানতে পেরেছি। বিষয়টি নিয়ে ড. শরওয়ার আমার কাছে দুঃখ প্রকাশও করেছেন।
এ বিষয়ে ড. মোহাম্মদ শরওয়ার এর সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, ‘আমি বিষয়টি এখনো দেখিনি। আমি দেখে জানাবো।’ পরবর্তীতে আবারও একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে তিনি সাড়া দেননি।
উল্লেখ্য, ২০১৭ সালে গবেষণা প্রবন্ধটি প্রকাশের সময় বিশবিদ্যালয়ের পিএইচডি কারিকুলামে কোনো প্রকাশনা বাধ্যতামূলক ছিলো না। তবুও ড. গোলাম শরোয়ার পিএইচডি ডিগ্রি সম্পন্ন হওয়ার পরে নিজ উদ্যোগে ব্যক্তিগত কারণে গবেষণা প্রবন্ধটি প্রকাশ করেন।