Image description

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) চারুকলা বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী প্রান্ত রায়কে র‌্যাগ দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে একই বিভাগের সিনিয়র দুই শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে। 

অভিযুক্ত ওই দুই শিক্ষার্থী হলেন- চারুকলা বিভাগের চতুর্থ বর্ষে (৪৯ ব্যাচ) অধ্যয়নরত ঐশী সরকার অথি এবং তৃতীয় বর্ষের (৫০ ব্যাচ) প্রমা রাহা। অথি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজিলতুন্নেছা হল সংসদের সহ-সভাপতি (ভিপি) এবং প্রমা একই হলের সহকারী সাধারণ সম্পাদক (এজিএস) প্রমা রাহা। 

গত ২৭ আগস্ট দুপুরে প্রান্ত রায়ের চূড়ান্ত পরীক্ষা চলাকালে অভিযুক্তদের দ্বারা র‌্যাগিং, হুমকি ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হন উল্লেখ করে ভুক্তভোগী বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন। 

অভিযোগে বলা হয়, ৫১ ব্যাচের শিক্ষার্থী নোমান ও আরিয়ান পরীক্ষার সময় তাকে ও তার সহপাঠীদের জোর করে গ্যালারিতে নিয়ে যান। সেখানে ৪৯ ব্যাচের অথি তার চেহারা নিয়ে ব্যঙ্গ করে বলেন ‘ওর মুখটাই এমন, জন্ম থেকে এমনই’। অন্যদিকে ৫১ ব্যাচের সিজান লাথি মেরে ডিপার্টমেন্ট থেকে বের করে দেওয়ার হুমকি দেন। এছাড়া নোমান চিৎকার করে তাদের সবাইকে পরীক্ষার হল থেকে বের হয়ে যেতে বলেন। এতে পরীক্ষার পরিবেশ বিঘ্নিত হয় এবং প্রান্ত সুস্থভাবে পরীক্ষা দিতে পারেননি। 

ভুক্তভোগী প্রান্ত বলেন, ‘এ ধরনের ঘটনা আমাদের নিরাপত্তা, মর্যাদা ও মানসিকভাবে মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করার পাশাপাশি বিভাগে র‍্যাগিং বিরোধী কঠোর নীতি কার্যকর করে আমাদের সুরক্ষা নিশ্চিত করা দরকার।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত ঐশী সরকার বলেন, ‘অভিযোগপত্রে আমার কথাগুলো ঘুরিয়ে উপস্থাপন করা হয়েছে। ঘটনাটি র‌্যাগিং, বুলিং বা বডিশেমিং ছিল না। সেদিন ৪৯-৫১ ব্যাচের পঞ্চাশেরও বেশি শিক্ষার্থী সেখানে ছিল, কিন্তু অভিযোগে কেবল আমাদের কয়েকজনের নাম এসেছে।’

অভিযুক্ত প্রমা রাহা বলেন, ‘আমরা বিভাগ বরাবর সবাই মিলে দুঃখ প্রকাশ করেছি। প্রান্তের অভিযোগে আমার নামে যে কথা বলা হয়েছে, সেটা নিয়ে পরবর্তীতে তার সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত কমিটি দেখছে।’

চারুকলা বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক শামীম রেজা বলেন, ‘ঘটনাটি বিভাগের ভেতরে সমাধান করার চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী প্রক্টর বরাবর আবেদন করে। পরে আবার তারা নিজেরাই বিভাগীয়ভাবে বিষয়টি মীমাংসার আবেদন করেছে।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক এ কে এম রাশিদুল আলম বলেন, ‘র‌্যাগিংয়ের মতো ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যান্টি-র‌্যাগিং নীতিমালা অনুযায়ী তদন্ত করে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’