
রাত ১০টার পর হলে ফিরলে সিট বাতিল বলে গণমাধ্যমের প্রচারিত খবরটি সঠিক নয় বলে দাবি করেছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) সহকারী প্রক্টর নাজমুল হোসাইন। তিনি বলেন, এমন কোনো হুমকি দেওয়া হয়নি। বরং নির্দিষ্ট কিছু অন্ধকার ও ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা থেকে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার স্বার্থে হলে ফিরতে বলা হয়েছিল মাত্র। দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে দেওয়া এক বক্তব্যে এই দাবি করেন তিনি।
সহকারী প্রক্টর বলেন, প্রথমেই যে স্থানের কথা বলা হয়েছে সেটা সঠিক না। প্রক্টরিয়াল বডির নিয়মিত অভিযানের অংশ হিসেবে ওইদিনও আমরা রাত সাড়ে ৯টার দিকে বের হই। এরপর বোটানিক্যাল গার্ডেন ও বায়োলজিকাল ফ্যাকাল্টির ওদিকে কিছু শিক্ষার্থীকে পরামর্শের সুরে কথা বলেছি। তাদের সিট বাতিল করার এমন কোনো কথা বলা হয়নি।
তিনি আরও বলেন, সান্ধ্য আইন বলে যেটা প্রচার করা হচ্ছে এমন কিছুই নেই। লেডিস ঝুপড়ি এলাকায় গভীররাত পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা থাকে। আর মাইকিং করার যে কথাটা বলা হয়েছে সেটা সম্পুর্ন বানোয়াট এবং মিথ্যা। আমরা নির্দিষ্ট কিছু অন্ধকারাচ্ছন্ন এলাকা যেখানে মাঝেমধ্যেই গাঁজার আসর বসে। আমরা ওইসব এলাকা থেকেই মূলত কিছু শিক্ষার্থীকে দ্রুত হলে ফিরে যাওয়ার কথা বলেছি। এ ঘটনায় গণমাধ্যমে যেটা প্রচার করা হয়েছে সেটা সম্পূর্ণ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।
এর আগে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) কিছু আবাসিক ছাত্রী বৃহস্পতিবার রাতে অভিযোগ করেছেন, রাত ১০টার পর বাইরে অবস্থান করায় তাদের সিট বাতিলের হুমকি দেওয়া হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিষয়টি নিয়ে সমালোচনার ঝড় উঠে। ছাত্রীদের অভিযোগ, বৃহস্পতিবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের লেডিস ঝুপড়ি, মেয়েদের হলের সামনে প্রক্টরের গাড়ি এসে মাইকিং-টহল দিয়ে গেছে রাত ১০টা ১টা মিনিটের পর কেউ হলে ঢুকলে তার সিট ক্যান্সেল করে দিবে! একটা স্বাধীন দেশে কেন শুধু নারীদের জন্য এমন নিয়ম? এটা স্পষ্টভাবে নারী বিদ্বেষী। আমরা আগেও দেখেছি, এই প্রশাসন এমন আচরণে জড়িত। এবারও যদি তারা স্বৈরাচারী আচরণ চালিয়ে যায়, আমরা কঠোর প্রতিরোধ গড়ে তুলব।
প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজন শিক্ষার্থী জানান, ওইদিন রাতে সহকারী প্রক্টর নাজমুল হোসাইন স্যার নিজে গাড়ি থেকে নেমে বসে থাকা ছাত্রীদের উঠিয়ে দেন এবং রাত ১০টা ১ মিনিটেও যেন কেউ হলে না ফিরে এজন্য সবাইকে সতর্ক করেন। নাহলে সিট বাতিল করা হবে বলেও হুঁশিয়ার দেন তিনি।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. তানভীর মোহাম্মদ হায়দার আরিফ বলেন, এ ব্যাপারে আগে থেকেই নির্দেশনা ছিল কিছু নির্দিষ্ট অনিরাপদ এলাকার জন্য। যেখানে গাঁজা বা মাদক সংশ্লিষ্ট কার্যক্রমের অভিযোগ আছে। শহীদ মিনার, লাইব্রেরি বা জিরো পয়েন্টে শিক্ষার্থীরা থাকলে কোনো সমস্যা নেই।
তিনি আরও বলেন, আমরা শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা দিতে সর্বদা প্রস্তুত। রাত ১০টার পর হলে ফেরার ব্যাপারে মূলত এই নিরাপত্তাজনিত দিক বিবেচনা করেই সহকারী প্রক্টর পরামর্শ দিয়েছেন। এ বিষয়ে প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো চূড়ান্ত নির্দেশনা এখনো দেওয়া হয়নি।