
‘উপাচার্য শিক্ষার্থীদের রক্তের সঙ্গে বেইমানি করে নিয়োগের নামে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন’ বলে সম্প্রতি দেওয়া এক বক্তব্যে অভিযোগ করেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সভাপতি সুলতান আহমেদ রাহী। তার এ বক্তব্যকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. সালেহ্ হাসান নকীব সম্পূর্ণ ‘মিথ্যাচার’ এবং তাকে ‘মিথ্যাবাদী’ বলে আখ্যায়িত করেছেন।
অন্যদিকে, বিষয়টিকে ‘মিথ্যা’, ‘মনগড়া মন্তব্য’, ‘অনাকাঙ্ক্ষিত’ ও ‘অসম্মানজনক’ বলে মন্তব্য করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক মোহা. ফরিদ উদ্দীন খানও। আজ শনিবার (২ আগস্ট) সুলতান আহমেদ রাহীর ফটোকার্ড শেয়ার করার ছবি স্ক্রিনশট দিয়ে ফেসবুকে নিজের টাইমলাইনে শেয়ার করে তিনি লিখেছেন, ‘রাবির একজন সাবেক ছাত্রের কাছ থেকে এ ধরনের মিথ্যা ও মনগড়া মন্তব্য অনাকাঙ্ক্ষিত এবং অসম্মানজনক! সাবেক এই শিক্ষার্থীর নিকট বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের উচিত এই মন্তব্যের সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা চাওয়া।’
একই সাথে শাখা ছাত্রদলের সভাপতির বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ড. ইফতিখারুল আলম মাসউদ। তিনিও সুলতান আহমেদ রাহীর ফটোকার্ড শেয়ার করার ছবি স্ক্রিনশট দিয়ে ফেসবুকে নিজের টাইমলাইনে শেয়ার করে লিখেছেন, ‘একজন প্রাক্তন ছাত্রের কাছে তার প্রতিষ্ঠানের মর্যাদা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। সেই প্রতিষ্ঠান প্রধানের বিরুদ্ধে এ ধরনের মিথ্যাচার অত্যন্ত গর্হিত কাজ। ভিসি মহোদয়ের শত্রুরাও এ অভিযোগে বিশ্বাস করবে না! এ ধরনের অভিযোগের প্রমাণ দিতে হবে অভিযোগকারীকে। অন্যথা এ মানহানিকর বক্তব্যের দায় নিতে হবে।’
নিয়োগ বাণিজ্যে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগের কোনো প্রমাণ আছে কি না জানতে চাইলে সুলতান আহমেদ দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ‘আমি তো আর আদালত না। সাংবাদিকদের সংবাদের উপর ভিত্তি করে আমি বক্তব্য দেই। সাংবাদিকদের সুবাদে বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ আমাদের কাছে এসেছে। সেই পরিপ্রেক্ষিতে আমি এই বক্তব্যটা দিয়েছি। আজ দেখলাম স্যারেরা ফেসবুকে আমার বক্তব্যের ব্যাখ্যা চেয়েছেন। আমিও চাই প্রশাসন আমার কাছে ব্যাখ্যা চাক। এর ব্যাখ্যা দিতে আমি প্রস্তুত আছি।’
নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগ তুলে ছাত্রদলের এ নেতা আরো বলেন, ‘আমরা জাসদ ছাত্রলীগের নেতাকে নিয়োগ দেওয়ার নিউজ দেখেছি। আওয়ামী লীগের সভাপতির জামাইকে নিয়োগের বিষয়টা দেখেছি। কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সদস্যের স্ত্রীর নিয়োগের বিষয়টা দেখেছি। বিভিন্ন টেন্ডার বাণিজ্যের অনিয়ম হয়েছে, ইন্টার পাশে নবম গ্রেডের চাকরি দেওয়ার বিষয়ে দেখেছি। এমন ভুরি ভুরি অভিযোগ আমাদের কাছে আছে।’
ছাত্রদল নেতার এমন মন্তব্যের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. সালেহ্ হাসান নকীব বলেন, ‘এটা সম্পূর্ণ মিথ্যাচার। তিনি সম্পূর্ণ মিথ্যাবাদী ও অপবাদকারী। কোটি কোটি টাকা তো দূরের কথা, একটি পয়সাও আমার বা আমাদের তরফ থেকে দুর্নীতি হয়নি।’